দেশের পোশাক শ্রমিকেরা নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সম্প্রতি নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরির চেয়ে বেশি মজুরি পান বলে দাবি করেছেন তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান। ‘পোশাকশ্রমিকদের জন্য নতুন ন্যূনতম মজুরি: স্পষ্টিকরণ এবং আর্থিক প্রভাব’ শীর্ষক এক বিবৃতিতে বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান এ দাবি করেন।
বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, মজুরি বোর্ড ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে। তবে প্রকৃত মজুরি অনেক বেশি। মজুরি কাঠামোর বাইরে কারখানাগুলো শ্রমিকদের কল্যাণে মজুরি-বহির্ভূত বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতি মাসে ৩০০-১০০০ টাকার হাজিরা ভাতা, উৎপাদন ভাতা, বিনা মূল্যে বা ভর্তুকি মূল্যে দুপুরের খাবার এবং বিনা মূল্যে নাশতা।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিবেদন ও মন্তব্যে আমরা দেখতে পাই, চূড়ান্ত হওয়া ন্যূনতম মজুরিকে অপ্রতুল বলে চিহ্নিত করা হয়। যদিও পোশাকের প্রাপ্য মূল্যের ভিত্তিতে মজুরি পর্যাপ্ততা মূল্যায়ন করার প্রচেষ্টা দেখা যায় না।’
ফারুক হাসান বলেন, ‘তৈরি পোশাকশিল্প শ্রমনিবিড়। আমরা বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থার একটি অংশ, তাই মজুরি আলোচনা স্থানীয় এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রেক্ষাপট থেকে আলাদা করা হলে টেকসই শিল্প নিশ্চিত করা যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায়ই শিল্পবিরোধী পক্ষপাতিত্বমূলক প্রতিবেদন ও বিভ্রান্তিকর উপস্থাপনায় ক্ষতিগ্রস্ত হই। এমনকি বৈশ্বিক বাণিজ্য নীতিগুলো শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকছে, এগুলোর প্রভাব সব সময় শ্রমিকদের পক্ষে না–ও যেতে পারে।’
বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, পোশাকশ্রমিকদের নতুন মজুরিকাঠামোর চূড়ান্ত ঘোষণায় গ্রেড সংখ্যা ৫টি থেকে কমিয়ে ৪টি করা হয়েছে। ন্যূনতম বা ৪ নম্বর গ্রেডের (বর্তমানের ৭ নম্বর গ্রেড) শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ১২,৫০০ টাকা।
অবশ্য খসড়া মজুরির গেজেট অনুযায়ী, শিক্ষানবিশকাল শ্রমিকেরা মাসে সর্বসাকল্যে ৯ হাজার ৮৭৫ টাকা পাবেন। এর মধ্যে মূল মজুরি ৪ হাজার ৯৫০ টাকা, বাড়িভাড়া ২ হাজার ৪৭৫ টাকা ও অন্যান্য ভাতা ২ হাজার ৪৫০ টাকা। শিক্ষানবিশকাল ৩ মাস। তবে তা আরও ৩ মাস বাড়াতে পারে মালিকপক্ষ।
বিবৃতিতে দুই বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) তিন ধরনের পোশাকের দাম কমে যাওয়ার দাবি করেছেন বিজিএমইএর সভাপতি। তিনি বলেন, ইইউর বাজারে গত সেপ্টেম্বরে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কটন টি–শার্টের দাম পৌনে ১১ শতাংশ কমেছে। একই সময়ে কটন ট্রাউজার ও সোয়েটারের দাম কমেছে যথাক্রমে ৭ ও ১৪.৭১ শতাংশ।
ফারুক হাসান আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত সেপ্টেম্বরে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কটন টি–শার্টের দাম ২৫.৩৮ শতাংশ কমেছে। একই সময়ে কটন ট্রাউজার ও সোয়েটারের দাম কমেছে যথাক্রমে ৫.৪৭ শতাংশ ও ৩.৯৮ শতাংশ।
মানব জমিন