সদ্য সমাপ্ত বিপিএলের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তির কথা বললে তাঁর নামটাই হয়তো সবার আগে আসবে। ড্রাফটে দল না পেলেও পরে ফরচুন বরিশাল দলে সুযোগ পেয়ে ৬ ম্যাচে ব্যাট করেছেন ১৫২ স্ট্রাইক রেটে। খেলেছেন ৪৫, ৩৭, ৫১ ও ৪৪ রানের টি–টোয়েন্টিসুলভ ইনিংস। এরই পুরস্কার পেলেন ২৩ বছর বয়সী মুনিম শাহরিয়ার। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের বাংলাদেশ দলে ডাক পেয়েছেন ২৩ বছর বয়সী এ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।
১৪ জনের দলে ডাকা হয়েছে এ সংস্করণে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলীকেও। অনেক দিন ধরেই তিন সংস্করণের স্কোয়াডে নিয়মিত হয়ে থাকার পর গত নিউজিল্যান্ড সফরে টেস্ট খেলেছেন ইয়াসির। বিপিএলে ১১ ম্যাচে ১৩৯.৪৯ স্ট্রাইক রেটে ইয়াসির করেছেন ২১৯ রান।
টি-টোয়েন্টি দল: মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), লিটন দাস, মুনিম শাহরিয়ার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান, ইয়াসির আলী, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ, শহীদুল ইসলাম, মোহাম্মদ নাঈম।
দলে নতুন মুখ এ দুজনই। দলে ফেরার কথা বললেও সংখ্যাটা দুই—লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে বাদ পড়েছিলেন লিটন দাস। মুশফিকুর রহিমকে নির্বাচকেরা ‘বিশ্রাম’ দেওয়ার কথা বললেও আসলে যে বাদই দেওয়া হয়েছে, সেটি মুশফিক নিজেই পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ ফিরে পাচ্ছে চোটের কারণে পাকিস্তান সিরিজে না খেলা সাকিব আল হাসানকেও। তবে চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না ওঠার কারণে ফেরা হয়নি পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের।
সব মিলিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বশেষ টি–টোয়েন্টি সিরিজের দল থেকে বাদ পড়েছেন ৮ জন—আকবর আলী, আমিনুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, নাজমুল হোসেন, নুরুল হাসান, পারভেজ হোসেন, সাইফ হাসান ও শামীম হোসেন। পাকিস্তান সিরিজের শুরুতে বিসিবি ১৬ জনের দল দিলেও পরে শেষ ম্যাচের আগে যোগ করা হয় কামরুল ও পারভেজকে। যদিও সে ম্যাচে খেলেননি দুজনের কেউই। সে সিরিজে খেলেননি আকবর আলীও।
নুরুল হাসান ও শামীম হোসেন অবশ্য বাদ পড়লেন অনেক দিন টানা দলে থাকার পর। গত বছরের জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে প্রায় চার বছর পর টি-টোয়েন্টিতে ফিরেছিলেন নুরুল। এরপর দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে স্মরণীয় দুটি সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ; বিশ্বকাপের পর পাকিস্তান সিরিজের প্রতিটি ম্যাচই খেলেছেন এই উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান। বিপিএলে বিবর্ণ ব্যাটিংয়েরই হয়তো মূল্য দিতে হলো তাঁকে। ফরচুন বরিশালের হয়ে ১০ ম্যাচে নুরুলের রান মাত্র ৬৬। গড় ৮.২৫, সর্বোচ্চ স্কোর ১৭।
নুরুলের মতো অবস্থা শামীমেরও। গত বছরের জিম্বাবুয়ে সিরিজেই অভিষেক হয়েছিল এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের। অভিষেক ম্যাচে ১৩ বলে ২৯, পরের ম্যাচে ১৫ বলে অপরাজিত ৩১ করে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন বাংলাদেশের জয়ে। এরপর স্কোয়াডে নিয়মিতই ছিলেন, কিন্তু পরের ৭ ইনিংসে করতে পেরেছেন মাত্র ৬৬ রান (সর্বোচ্চ ২২)। এরপর বিপিএলে ১০ ম্যাচে ১১৭.১৪ স্ট্রাইক রেটে ১৬৪ রানকে (সর্বোচ্চ ৩৭ বলে ৫২) দলে থাকার জন্য যথেষ্ট বলে মনে হয়নি নির্বাচকদের।
নাজমুল ও সাইফের ক্ষেত্রে পাকিস্তান সিরিজ হয়ে থাকছে ডাক পাওয়া ও বাদ পড়ার। গত বছর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নাজমুল একটি টি-টোয়েন্টি খেললেও সেটি ছিল মূলত অন্যদের চোটের সমস্যার কারণে। পাকিস্তান সিরিজে তিন ম্যাচেই খেলে করেছিলেন ৭, ৪০ ও ৫ রান। সেই সিরিজে টেস্ট ওপেনার হিসেবে বিবেচিত সাইফ হাসানকে খেলানো নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়েছিল। ২ ম্যাচে ১ রান করার পর তৃতীয় ম্যাচের আগে স্কোয়াড থেকেই বিদায় করে দেওয়া হয় তাঁকে।
বাদ পড়াদের ক্ষেত্রে বিপিএলের পারফরম্যান্স বিবেচনায় নেওয়া হয়ে থাকলে মোহাম্মদ নাঈম হয়ে থাকছেন ব্যতিক্রম। ৭ ইনিংসে ৮.৩৩ গড়ে মাত্র ৫০ রান করার পরও তাঁর ওপর আস্থা রেখেছেন নির্বাচকেরা।
মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি ম্যাচ দুটি হবে ৩ ও ৫ মার্চ। এর আগে চট্টগ্রামে দুই দল খেলবে তিনটি ওয়ানডে।