পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ১৫ বছর, দুই মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি কবে

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ১৫ বছর, দুই মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি কবেফাইল ছবি

রাজধানীর পিলখানায় নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি কোনো মামলার। এ নিয়ে করা দুটি মামলার মধ্যে হত্যা মামলার বিচার আপিল বিভাগে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ। ২০১১ সালে শুরু হওয়া বিস্ফোরক আইনের মামলার বিচার ঢাকার আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।

হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের পর ছয় বছরে সর্বোচ্চ আদালতে শুনানি হয়নি। তবে এ বছরের মধ্যে আপিল শুনানি শুরু হতে পারে বলে আশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ। আসামিপক্ষের প্রত্যাশা, আপিল বিভাগে বিচারক বাড়িয়ে আলাদা বেঞ্চ গঠন করে দ্রুত শুনানির ব্যবস্থা হবে।

২০০৯ সালের ২৪-২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআরে বিদ্রোহ ও নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ সময় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করা হয়। হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকার বিচারিক আদালত ১৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে আপিলের রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। আটজনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও চারজনকে খালাস দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ পাওয়া ১৬০ জনের মধ্যে ১৪৬ জনের সাজা বহাল রাখা হয়। হাইকোর্টে বিচার চলার সময় কারাগারে থাকা অবস্থায় দু’জনের মৃত্যু হয়। খালাস পান ১২ জন।

বিস্ফোরক আইনের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল সমকালকে বলেন, করোনার কারণে মামলার বিচারকাজ অনেক পিছিয়ে গেছে। এ পর্যন্ত ২৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এখন প্রতি মাসে দুই দিন  বিচারিক আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ হচ্ছে। এ বছর বিচার শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় করা মামলার বয়স এখন ১৫ বছর। হত্যা মামলাটির দুই ধাপ শেষ হলেও বিস্ফোরক মামলার বিচারের গতি অত্যন্ত শ্লথ। প্রায় ১৩শ সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ২৭৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে। আগামী ২৮-২৯ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী তারিখ। তিনি জানান, হত্যা মামলায় হাইকোর্ট ও বিচারিক আদালতের রায়সহ যাবতীয় নথিপত্র আপিল বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে। আপিলের সারসংক্ষেপও জমা দেওয়া হয়েছে, কোনো কিছুই বাকি নেই। যেভাবেই হোক ন্যায়বিচারের স্বার্থে বিচারকের সংখ্যা বাড়িয়ে এবং আলাদা বেঞ্চ গঠন করে এ মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সমকালকে বলেন, পিলখানা হত্যা মামলায় সর্বোচ্চ আদালতে চূড়ান্ত শুনানি করতে আপিল বিভাগে আলাদা বেঞ্চ গঠন করতে হবে। তা ছাড়া আপিল বিভাগে এই মুহূর্তে পর্যাপ্ত বিচারক নেই। আরও চারজন বিচারক প্রয়োজন। কয়েক হাজার পৃষ্ঠার আপিল উভয়পক্ষ শুনানি করতে টানা ৩০-৪০ দিন সময় লাগবে। শিগগির আপিল বিভাগে নতুন বিচারক নিয়োগ হবে। এরপর পৃথক বেঞ্চ গঠন হলে শুনানি শুরু হবে।

samakal