
ফ্রান্সের এক ইঁদুরকে পিনাকীদা ফুলকুমারী নাম দিয়ে রাজকুমারী বানিয়ে ফেলেছেন। পক্ষান্তরে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বাংলাদেশের গুটিকয় সাংবাদিককে ‘গিরগিটি’ হিসেবে অভিহিত করে প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দিয়েছেন।
পিনাকী ভট্টাচার্য এবং মাহমুদুর রহমান সাহেবের কথায় বা লেখায় অনেক ন্যারেটিভ তৈরি হয়ে যায়। ফলে তাদের প্রতি সাধারণ পাঠকদের একটা চরম ও পরম আগ্রহ তৈরি হয়। একজন পুরো জয় বাংলার চেহারাটাই জয় বাংলা করে দিয়েছেন।
অন্যজনের কাছে দেশের আইন-আদালত অনেকটা অসহায় হয়ে আত্মসমর্পণ করেছে এবং জানিয়েছে, ট্রুথ ইজ নো ডিফেন্স। শাহবাগে ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি তিনি সবার আগে টের পেয়েছিলেন। এই কষ্ট শাহবাগিরা এখনো ভুলতে পারছে না। ওনার একুশে পদকের নাম ঘোষণা শুনে এদের গতরে যন্ত্রণা শুরু হয়ে গেছে।
বুয়েটের ইঞ্জিনিয়ার, আইবিএর এমবিএ এবং প্রায় সত্তরের কাছাকাছি বয়সে মালয়েশিয়ার স্বনামধন্য ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়েছেন। কাজেই আল্লাহতায়ালা যে মগজ দিয়েছিলেন সেটাকে ‘যথাযথ বুদ্ধি’ হিসেবে কাজে লাগালে আলো-স্টার ঘরানার অন্যতম বিশিষ্ট ব্যক্তি হতে পারতেন মাহমুদুর রহমান, আমাদের সবার প্রিয় মাহমুদ ভাই।
একইভাবে হিন্দু ব্রাহ্মণের ডাক্তার সন্তান এবং কমিউনিস্ট পার্টির একজন নেতা হিসেবে পিনাকী ভট্টাচার্য একই গোত্রের শ্যামল দত্ত (যার অ্যাকাউন্টে ১ হাজার কোটি টাকার লেনদেনের খবর পাওয়া গেছে) কিংবা সুভাষ সিংহ রায়দের চেয়েও অনেক বেশি প্রভাব ও টাকা বানিয়ে অনেক আগে থেকেই চরম সুখে-শান্তিতে থাকতে পারতেন। কারণ এদের চেয়ে পিনাকীর মাথার মগজ কোনো অংশেই কম ছিল না। মূলত এ কারণেই এ দুজনের প্রতি এ দেশের মানুষ একটা বিশেষ সমীহ ও ভালোবাসা পোষণ করেন।
নিজেদের চিত্তের তুষ্টির জন্য এরা মাহমুদুর রহমানকে ডাকেন বাই-চান্স সম্পাদক। সত্য যত ভয়ংকর ও তিতা হোক না কেন, সেটা তিনি বলে ফেলেন। সাপোর্টিং ডকুমেন্ট ছাড়া তিনি কথা বলেন না বা কিছু লেখেন না। কাজেই সেই মাহমুদ ভাই যদি কাউকে গিরগিটি বলেন, সেখানে চিন্তার বিষয় আছে বৈ কি!
যে মন্তব্য কলামে মাহমুদুর রহমান কয়েকজন সাংবাদিককে গিরগিটি বলেছেন, সেটা যেমন পড়েছি, এর জবাবে গোলাম মর্তুজা যা বলেছেন সেটারও শোনার সুযোগ হয়েছে। দুটো পড়ে বা শোনে এখন মনে হলো, গিরগিটিকে গিরগিটি ডাকলেও বোধহয় এখন রেগে যাবে। সংস্কার কমিশনের কাছে গিরগিটি সমাজ এখন তাদের নাম পরিবর্তনের সুপারিশ করতে পারে।
মাঝে মাঝে চিন্তার উদ্রেক হয়, মাহমুদ ভাইয়ের একুশে পদকপ্রাপ্তি নিয়ে এই গিরগিটি সমাজ যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে, সে জায়গায় কোনো মওলানা পদধারী ব্যক্তি সামাজিক কল্যাণ ক্যাটাগরিতে এসব পদক পান, তখন এদের প্রতিক্রিয়া আসলেই কেমন হবে? কারণ পদক তালিকায় কোনো ভিক্ষু, ফাদার বা পণ্ডিত ব্রাহ্মণ্যের নাম এলে সমস্যা নেই, সমস্যা আছে একজন মওলানার বা এই লাইন বরাবর কারো নাম এলে !
মাহমুদ ভাই, পিনাকীরা এসব অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলেন বলেই কথিত এলিট-সুশীল ওরফে গিরগিটি সমাজ ওনাদের ওপর এত ক্ষ্যাপা। কারণ এই গিরগিটিরা এখন জাতীয়তাবাদী প্ল্যাটফরমটিকে নিজেদের উদ্দেশ্য সাধনে ব্যবহার করতে চাচ্ছেন। এর বড় বাধাও এখন মাহমুদুর রহমান, পিনাকী প্রমুখ!
ফুলকুমারী : পিনাকি ভট্টাচার্যের আত্মকথন ও রাজনৈতিক দর্শন
আমি সাহিত্যের কোনো বোদ্ধা পাঠক নই। সাহিত্যবিষয়ক কোনো পর্যালোচনা করার সক্ষমতা আমার নেই। কাজেই লেখক পিনাকী ভট্টাচার্যর গ্রন্থ নিয়ে পর্যালোচনা করার দুঃসাহস দেখাচ্ছি না। আমার আগ্রহের বিষয়টি অন্য জায়গায়।
দেশের কথিত এলিট সুশীলসমাজ যারা পিনাকীকে একটা ইঁদুরের চেয়েও নগণ্য গণ্য করেন তাকে এবং তার একটি বইকে নিয়ে পশ্চিমা সমাজে এ রকম আগ্রহ সৃষ্টি হলো কেন? সেই আগ্রহ থেকেই মূলত বইটি পড়েছি এবং এই কলামে যৎসামান্য আলোচনা পেশ করছি।
পিনাকি ভট্টাচার্যের ‘ফুলকুমারী’ শুধু একটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ নয়, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংগ্রামের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে ধারণ করা একটি দার্শনিক বিশ্লেষণ। সেই দর্শনের মূল থিম বা তার ভিত্তি সেই বিশ্বাস থেকেই আহরণ করেছেন।
লেখক এখানে মহাভারত বা সনাতন হিন্দু ধর্মের সার্বজনীন বিশ্বাসকেই তুলে ধরেছেন যে বিশ্বাসের জায়গার সঙ্গে অন্যান্য ধর্মেরও কোনো সংঘাত নেই। কারণ প্রতিটি ধর্মই মৃত্যুর পরের জীবনের কথা বলে, সেখানে জবাবদিহির কথা বলে। তাই যে দাদার তর্জনী আঙুল ধরে দুর্গাপূজা দেখতে যেত শিশু পিনাকী, সেই একই আঙুল ধরেই চলে গেছে স্বর্গ আর মর্ত্যের মধ্যখানের সেই সেতুটিতে।
হিন্দু মাইথোলজি অনুসারে এই সেতুটি সব মৃত আত্মাদের আবাসন। এখানে বসে সবার চেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ বাবা নবাগতদের সাদর সম্ভাষণ জানান। লেখক নিজেকে এই জায়গায় কল্পনা করেন এবং নিজের পিতামহের সেই শক্ত করে ধরে আছেন, যাতে বিচ্ছিন্ন না হয়ে পড়েন।
আগে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল সমগ্র মহাবিশ্বব্যাপী একটি শুনশান নীরবতা বিরাজ করছে । কিন্তু এখন বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্ব থেকে ভেসে আসা কিছু শব্দ নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছেন। প্রশ্ন জাগছে, কোথা থেকে আসছে এই শব্দ? আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী মহাকাশের একটা সামান্য জায়গা ফাঁকা নেই, যেখানে কোনো না কোনো ফেরেশতা বসে আল্লাহর গুণকীর্তন না করছে।
এভাবে গাছপালা, পশুপাখি এমনকি প্রত্যেকটা কীটপতঙ্গও আল্লাহর প্রশংসা আদায় করছে। সেসব প্রশংসার শব্দগুলো একটু ভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সিতে থাকলেও সেসব ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন সৃষ্টির স্রষ্টার মহিমা কীর্তন অব্যাহত রয়েছে। এই শব্দগুলোর প্রমাণ স্পষ্ট না হলেও সেসব শব্দই যে ওইসব প্রশংসাবাণীই হবে না, তারও তো কোনো প্রমাণ আমাদের হাতে নেই। ‘বেনিফিট অব দ্য ডাউট’ মনে হচ্ছে সেদিকেই যাচ্ছে। বিজ্ঞান আর বিশ্বাস বিশেষ করে বিজ্ঞান আর ইসলামের মধ্যকার দূরত্ব কমে আসছে।
কাজেই নগণ্য ইঁদুরের সঙ্গে প্যারিসের এক অ্যাপার্টমেন্টে আবদ্ধ পিনাকীর আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক কথোপকথন তার পাঠকদের কাছে খুব অবাস্তব লাগেনি। বরং বলা যায়, পাঠকদের খুব সহজেই নিজের ভাবনার ভেলাটিতে চড়াতে সক্ষম হয়েছেন। এটাকে পিনাকীর প্রতিপক্ষ হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার গল্প দিয়ে ব্যাখ্যা করতে চেয়েছেন! তার বইটি নিয়ে বস্তুবাদী পশ্চিমা জগতে যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল, তা বোধহয় তার শত্রুরাও ইগনোর করতে পারেননি।
লেখক ইঁদুরটির নাম দেন ‘ফুলকুমারী’ এবং তার সঙ্গে একটি কাল্পনিক চুক্তি করেন, যা ‘আরব্য রজনি’র গল্পের কথা মনে করিয়ে দেয়। প্রতিদিন একটি করে গল্প বলার মাধ্যমে শরণার্থী তার অতীতের স্তরগুলো উন্মোচন করেন, যা পাঠককে বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির গভীরে নিয়ে যায়।
লেখকের কাছে মনে হলো, ফুলকুমারী সেই সুলতান শাহরিয়ারের মতো কোনো শক্তির আধার। ফুলকুমারীর সঙ্গে বিশ্ব প্রকৃতির স্রষ্টার কোথাও যেন একটা সংযোগ হয়ে গেছে। প্রকৃতির এই স্রষ্টা কখনো কখনো তার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রাণীর আবদারও না রেখে পারে না। কাজেই এই ফুলকুমারীর সঙ্গে গল্প করেই কোভিড ভাইরাসের ছোঁয়া বাঁচিয়ে হাজার রাত কাটিয়ে দেবেন, এমন একটা আস্থাও জায়গা করে নেয় লেখকের বিশ্বাসে, কল্পনায়।
মহাবিশ্বের এই বিশালতায় হারিয়ে গেলে নিজেকে এই সৃষ্টি জগতের একটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রাণী থেকে ভিন্ন মনে হয় না। এমতাবস্থায় আশরাফুল মাখলুকাত একজন মানুষের সঙ্গে একটি ইঁদুরছানারও যোগাযোগ হতে পারে। কারণ চলত শক্তিবিহীন একটি ভাইরাস তখন পুরো পৃথিবীকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। মনে হচ্ছিল, ঊর্ধ্বজগতের বাসিন্দারা পৃথিবীবাসীকে কোনো একটা মেসেজ পৌঁছাতে চাচ্ছিল!
এই ভাইরাসে কাপুত হয়েছিলেন মুহাম্মদ নাসিমসহ দুর্দণ্ড প্রতাপশালী আরো গুটিকয় পাপাত্মা, যাদের ওপর কিয়ামত পর্যন্ত মজলুমের বদদোয়া চলতে থাকবে। এরা মাটির চৌদ্দ ফুট নিচ থেকে প্রতিপক্ষকে ধরে আনার হুমকি দিয়েছিলেন।
এদের ঔদ্ধত্য এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে, জেসাস বা ইসা (আ.)-এর জন্মবর্ষের অনুকরণ করে ২০২০ সালকে মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল এবং তদনুযায়ী একটা নতুন ক্যালেন্ডার তৈরি করা হয়েছিল। মুজিবের মূর্তি দিয়ে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশটি ভরে ফেলা হয়েছিল।
বলতে গেলে, সাত বিলিয়ন হোমো স্যাপিয়েন্সকে একজনের কাছ থেকে অন্যজনকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। এটার অফিশিয়াল নাম হলো লকডাউন। এমনই এক মুহূর্তে সাত বিলিয়ন হোমো স্যাপিয়েন্স থেকে বিচ্ছিন্ন পিনাকী তার নস্টালজিয়ায় সঙ্গী হিসেবে বেছে নেন ফুলকুমারীকে। এই অপার্থিব যোগাযোগে এক ধরনের রোমান্টিসিজম জড়িয়ে গেছে, যার স্বাদ পাঠকরা সহজেই অনুভব করতে পারেন।
আরব্য উপন্যাসের সেই গল্পের মতোই একে একে আসে কক্সবাজারের আকরামের কাহিনি। করোনায় হঠাৎ চলে যাওয়া বাবলা ভাই আর ভাবির কথা! ও অনেকের হৃদয় স্পর্শ করেছে। বিমানের পাইলট সেই বাবলা ভাই চাকরির প্রথম টাকা দিয়ে ডানোর টিন কিনে পুরোটা একাই সাবাড় করেছিলেন! ‘লাখ টাকা পেলে সব টাকা দিয়া গুড় কিইন্যা খাইতাম’ বাবলা ভাইয়ের মতো এ রকম প্রতিজ্ঞা আমরা অনেকেই করি।
বাবলা ভাইয়ের মতো দু-একজন জীবন-রসিক তা আক্ষরিক অর্থেই পালন করেন বা জীবনকে রসে-গন্ধে সেভাবেই উপভোগ করেন। তার প্রেয়সী কাম স্ত্রীর বাসার ওপরে বিমান নিয়ে কীভাবে চক্কর খেতেন, সেই রোমান্টিক কাহিনিও বিধৃত হয়েছে। বিমানের মতো ছুঁ মেরেই কোভিড-১৯ এই রোমান্টিক দম্পতিকে একসঙ্গেই তুলে নিয়েছে। ছোট্ট পরিসরে তুলে ধরা এসব কাহিনির চরিত্র পিংকু ভাই, জেঠু, ডাক্তার তারা সবাইকে আমাদের খুবই চেনা বলে মনে হয়। কেনটিন মালিক চারুমামা যিনি সবার বাকি খাওয়ার সর্বংসহা হয়ে টিকে থাকতেন। আমাদের চারপাশে এ রকম নানা কিসিমের অনেক চারুমামাকে দেখতে পাই।
পিনাকী তখন মাত্র চার-পাঁচ বছরের শিশু। মুক্তিযুদ্ধের বিভীষিকা, শরণার্থীশিবিরের দুঃসহ দিনগুলো তার শিশুমনে গভীর ছাপ ফেলেছিল। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পরিবারসহ এক অজানা গন্তব্যের পথে যাত্রা করেছিল তারা। সেই পথে ছিল ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ক্লান্তি আর মানবতার অবমাননার কঠিন বাস্তবতা।
পথে এক দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে পিনাকীর মা দোকানদারের কাছে একটু দুধ চাইলেন, পিনাকী আর ছোট বোনটির জন্য। দোকানদার কটমট করে তাকিয়ে মাছি তাড়ানোর মতো হাত তাড়িয়ে দিল।
পিনাকী তার মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখল, মুখটা একেবারে ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। সেই মুহূর্তে তার শিশুমনে এক অদ্ভুত প্রতিজ্ঞা জন্ম নিলÑসে আর কখনো মায়ের কাছে কিছু চাইবে না। লেখকের বর্ণনায়, নিজের আত্মীয়ের বাসায় আমাদের জীবন শরণার্থীশিবিরের চেয়ে কোনোক্রমেই উত্তম ছিল না। পিনাকীর বাবার আপন ছোটভাই শিশু পিনাকীকে নির্মমভাবে প্রহার করতেন!
শরণার্থীশিবিরের আরেক বর্ণনা অনেককেই স্পর্শ করেছে। পিনাকীর এক ফুফু, যুদ্ধ শুরু হলে তার স্বামী ও সন্তানসহ দেশ ছেড়ে শরণার্থী হন। তারা জানতেন, সীমান্তের ওপারে তার (ফুফুর) বড় ভাই আছেন, যিনি নিশ্চয়ই তাদের সাহায্য করবেন।
পিনাকীর এক কাজিন, যে তারই বয়সি, তার মাকে জিজ্ঞেস করল, ‘মা, মামা যদি আমাদের এখন চিনতে না পারে?’ কারণ সেই ধরনের অনেক কাহিনি শরণর্থীশিবিরে এসে এই বাচ্চা ছেলে শুনেছিল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
কাজেই পিনাকী আমাদের ইতিহাসের না-বলা অনেক কথা বলে গেলেন।
তার এই অভিজ্ঞতা শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং এটি বাংলাদেশের বহু নিপীড়িত মানুষের জীবন-সংগ্রামেরই প্রতিচিত্র। এগুলো শুধু তার জীবনের ঘটনাবলির ধারাবাহিক বর্ণনা নয়, বরং একটি জাতির বিপর্যস্ত ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি।
‘ফুলকুমারী’ শুধু একটি গল্প নয়; এটি বেঁচে থাকা, সংগ্রাম এবং মানবতার প্রতিচ্ছবি। যারা অর্থপূর্ণ, স্তরযুক্ত গল্প এবং মানবতা ও আশার ছোঁয়ায় ভরা কাহিনি পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটি অবশ্যপাঠ্য।