‘নৈতিক কারণে’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আঞ্চলিক পরিচালক পদে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সঙ্গে কাজ করতে চায় না অন্তর্বর্তী সরকার। এ বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ডব্লিউএইচওর কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এসব তথ্য জানিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘এখানে ইস্যুটা এথিক্যাল। আর্থিক অপরাধসহ কিছু অপরাধে তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এখানে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। এ কারণে তো তার সঙ্গে কাজ করার প্রশ্নই আসে না। এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, সেটাও আমাদের জানাতে বলেছি।’
চিঠির বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বর্তমানে এখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যিনি আঞ্চলিক পরিচালক আছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, তিনি আমাদের জন্য ডিসফাংশনাল। তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও আর্থিক অপরাধের অভিযোগে মামলা হয়েছে, এ কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে জানানো হয়েছে যে তাঁর মাধ্যমে যেন যোগাযোগ করতে না হয় এবং বাংলাদেশ সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অনুরোধ করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনাকে কোন প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনা হবে—জানতে চাইলে অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা সাক্ষাৎকারে বলেছেন উনার (শেখ হাসিনা) বিরুদ্ধে মামলা চলছে, তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার পর তাঁকে ফিরিয়ে আনা হবে। মানে ভারডিক্ট হওয়ার পর তাঁকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে। যেহেতু আমাদের সঙ্গে ভারতের একটি চুক্তি রয়েছে, হয়তো চুক্তির মাধ্যমেই তাঁকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। সেটা ভারডিক্ট হওয়ার পর বলতে পারব।’
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বুধবার সন্ধ্যায় সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির গেজেট কবে নাগাদ জারি হবে, এমন প্রশ্নে শফিকুল আলম বলেন, ‘আশা করছি এক-দুই দিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়ে যাবে।’
জেলা প্রশাসক নিয়োগে ঘুষ লেনদেন বিষয়ক একটি দৈনিকের প্রকাশিত ‘প্রতিবেদন সত্য নয়’ জানিয়ে উপপ্রেস সচিব আজাদ মজুমদার বলেন, কিছুদিন আগে একটি দৈনিকে জেলা প্রশাসক নিয়োগে ঘুষের লেনদেন হয়েছে বলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। সেই প্রতিবেদনকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সরকার একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে এসেছে। তাতে দেখা গেছে, প্রতিবেদনটি সত্য নয়।
‘সরকারের পক্ষ থেকে দৈনিকটিকে (কালবেলা) অনুরোধ করা হচ্ছে প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’
জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তাদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে পারে বলেও জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক আজ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা আশা করছেন, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন তাঁদের প্রতিবেদন ডিসেম্বের প্রথম সপ্তাহে চূড়ান্ত করতে পারবে। পরে তা প্রধান উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে দেবে।
ajker patrika