নেতৃত্ব ও বাংলাদেশ

  • সুরঞ্জন ঘোষ
  •  ০৪ জানুয়ারি ২০২৩, ২০:২৭

এই লেখাটি নেতৃত্ব, আমলা, এরশাদ এবং দুর্নীতি- এই চারটি ভাগে লেখাটি লেখা হয়েছে। শুরু করতে চাই নেতা নেতৃত্ব বিষয়ে কিছু কথা দিয়ে। জাতীয় পার্টি কয়েকদিন আগে জিএম কাদের, রওশন এরশাদ তার ছেলেসহ প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করেছেন। আগামী নির্বাচন নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে তাদের মধ্যে। আমরা এরশাদবিরোধী আন্দোলন করেছিলাম। এরশাদের পতন হয়েছিল। কোনো দিন ভাবিনি, জাতীয় পার্টি বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে মিশে জোট করবে। তাই এই লেখায় অনেক আবেগ জড়িয়ে থাকতে পারে।

নেতৃত্ব কোনো বিশেষ ব্যক্তির পদবি নয়। নেতৃত্ব হচ্ছে- মানুষের সাথে সম্পর্ক তৈরির নৈতিক প্রক্রিয়া যা শুধু বিশ্বাস, দায়বদ্ধতা, প্রতিশ্রুতি, আবেগ, ভালোবাসা ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে তৈরি হয়। নেতৃত্ব হচ্ছে কোনো একটি স্বপ্ন বা আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য কোনো একটি দল বা গোষ্ঠীর একসাথে চলার সংগ্রাম।

ওয়ারেন বেনিস নেতৃত্বের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন, নেতৃত্ব হচ্ছে স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার ক্ষমতা। যিনি কল্পনা কিংবা স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত দেখাতে পারেন তিনিই নেতা। নেতৃত্ব হচ্ছে, একজন মানুষের পদাধিকার কর্তৃত্বের বাইরে এসেও ইতিবাচক যা মানুষকে প্রতিনিয়ত প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি নেতৃত্ব সম্পর্কে বলেছিলেন, নেতৃত্ব মানুষকে প্রভাবিত করে কিন্তু ক্ষমতা দেখায় না। কর্তৃত্ব প্রয়োগ করা একজন নেতার উদ্দেশ্য হতে পারে না; বরং ইতিবাচক কাজে মানুষকে প্রভাবিত করাই নেতার কাজ।

১৯৮৯ সালে ওয়ারেন বেনিস নেতা হওয়ার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে একটি বই লিখেছিলেন। বইটির নাম ‘অন বিকামিং অ্যা লিডার’। একজন সত্যিকারের নেতার নিজেকে প্রমাণ করার কোনো আগ্রহ থাকে না কিন্তু প্রকাশ করার স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহ আছে। একজন মানুষ যখন তার সব সম্ভাবনা সত্যিকারভাবে প্রকাশ করতে পারে তখন তার নেতৃত্বের সত্যিকারের ক্ষমতা প্রকাশ পায়।

একজন নেতা খুব আবেগ ও আগ্রহের সাথে তার জীবন থেকে মানুষকে প্রতিশ্রুতি দেন এবং নিজেকে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করার সক্ষমতা রাখেন। নিজেকে প্রকাশ করার এই মুক্ত ও আনন্দদায়ক বৈশিষ্ট্যই একজন নেতার সবচেয়ে বড় গুণ এবং নেতৃত্ব দেয়ার পূর্বশর্ত। নেতৃত্ব দেয়ার প্রথম শর্তই হচ্ছে সবার আগে নিজেকে পরিপূর্ণভাবে জানতে হবে। সত্যিকারের নেতারা তাদের সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা রাখেন, সে জন্য তারা তাদের নিজের শক্তি প্রয়োগে সঠিকভাবে অনুশীলন করতে পারেন। সত্যিকারের নেতারা তাদের দুর্বলতাগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারেন এবং দুর্বলতাকে শক্তিতে পরিণত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন।

সত্যিকারের নেতা জানেন তিনি কী চান, কেন চান, কীভাবে মানুষের সাথে যোগাযোগ করলে মানুষকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা সম্ভব এবং মানুষের কাছ থেকে সমর্থন আদায় করা সম্ভব।

বর্তমান পরিস্থিতিতে পুরো পৃথিবীই আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছে বলে মনে করা হয়। কারণ বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে যে পরিবর্তন হচ্ছে তা খুব আগ্রাসী ও এই পরিবর্তন জীবন থেকে শুরু করে ব্যবসায়-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও হচ্ছে। পৃথিবীর এই পরিবর্তনের পেছনের শক্তি হচ্ছে আমেরিকা ও তার মিত্র শক্তি পাশ্চাত্য বিশ্ব শুধু পৃথিবীব্যাপী নিয়ম-কানুন, ন্যায়-নীতিই পরিবর্তন হচ্ছে না; বরং পরিবর্তনের পুরনো খেলাটাই পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা যে পৃথিবীতে বসবাস করছি, এই পৃথিবীতে বসবাস করতে হলে আপনি কীভাবে নেতৃত্ব দেবেন তা শিখলেই হবে না; বরং অদ্ভুত এই নতুন বিশ্বে নেতৃত্ব দেয়ার কলাকৌশল, চুক্তি প্রভৃতি সম্পর্কে জানতে হবে। আপনি যদি নেতৃত্ব ও নেতৃত্বের আগ্রাসী কলাকৌশল সম্পর্কে না জানেন তবে আপনি নেতা হয়েও আগ্রাসী নেতৃত্বে শোষিত হবেন।
নেতা হওয়ার জন্য একজন মানুষের অনেক গুণাবলি দরকার যেমন- দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হওয়া, পারিপার্শ্বিক অবস্থার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা থাকা, নেতৃত্ব চর্চার অভিজ্ঞতা থাকা ইত্যাদি।

আমাদের সমাজে অনেক মানুষই আছেন যারা নেতা হতে চায়, কিন্তু সবাই নেতা হতে পারবে না। এটিই সত্য। কিন্তু কেন? এরশাদ নেতা হতে পারলেন না- এরশাদকে তো কেউ নেতা বলে না। বলে পতিত স্বৈরাচার।

এ লেখাটি লেখার কথা হয়তো আমার মনে আসত না, যদি আমি এখন যে উদ্ধারহীন, শ্বাসরুদ্ধকর, বদ্ধ অন্ধকার পরিস্থিতিতে বাস করছি তা না করতাম। নিজের দেশে এমনভাবে বাস করছি যেন দণ্ডিত হয়ে আছি।

কখনোই অবশ্য ভালো ছিলাম না। যে মুক্ত স্বাধীন, সৎ ব্যক্তির পূর্ণ অধিকারসম্পন্ন, গণতান্ত্রিক দেশে বসবাসের স্বপ্ন দেখেছি, তা কখনো পূরণ হয়নি; দশকের পর দশক দুঃসহ অবস্থায় বাস করে এখন দুঃসহতম অবস্থায় পৌঁছে গেছি। বাস করছি ভয়ের জলবায়ুতে। এখানে শান্তিতে বাস করা যায় না; স্বস্তিতে কোনো সৃষ্টিশীল কাজ করা যায় না।

রাষ্ট্র আমাদের খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান শিক্ষা চিকিৎসার ব্যবস্থা তো করেইনি, এমন কি নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করেনি; বরং রাষ্ট্রই হয়ে উঠেছে আমাদের জন্যে ২৪ ঘণ্টার আতঙ্ক। দেহ-মন-মগজে আক্রান্ত সন্ত্রস্ত অবস্থায় বাস করা মৃত্যু থেকেও পীড়াদায়ক।

প্রতিহিংসা ও পীড়ন হয়ে উঠেছে রাষ্ট্রনীতি। প্রতিদিন দেখতে পাচ্ছি যাকে ইচ্ছে তাকে ধরে নেয়া হচ্ছে কারাগারে।

১৯৮৩ সালের ১০ ডিসেম্বর এরশাদ আহসানউল্লাহ চৌধুরীকে চাকরি থেকে খারিজ করে নিজেই প্রেসিডেন্ট হন। একটি অনাবশ্যক পরিচারক রাখার আর দরকার ছিল না। সেনাপতিরা, মহান ত্রাতারা, ক্ষমতায় এসে জনগণকে কিছু দিতে চায়; মহৎ কিছু দিতে চায়, যা জনগণ আগে কখনো পায়নি। ২৪ মার্চ ১৯৮২ থেকে ১৯৮৬ পর্যন্ত সাড়ে চার বছর- বাংলাদেশ আবার উপভোগ করে সামরিক শাসন। এরশাদ সামরিক স্বৈরাচারে যোগ করে অজস্র নতুন মাত্রা; সে সামরিক স্বৈরাচারকে বহুমাত্রিক করে তোলে। শঠতা, গোঁড়ামি, ভাঁড়ামো, চরিত্রহীনতা, দুর্নীতিতে এরশাদ তুলনাহীন। ধর্ম থেকে কবিতা পর্যন্ত সব কিছু তিনি নষ্ট করেছেন।

আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম? আমরা কি চেয়েছিলাম একনায়ক এরশাদকে?

হয়তো তিনি ছিলেন মনোবিকলগ্রস্তও। চেঙ্গিস খানও ছিলেন নপুংসক, এটি তাকে হিংস্র করে তুলেছিল। এরশাদের সম্ভবত একটিই গুণ- আমাদের শাসকদের মধ্যে তিনিই বাঙলা ভাষাটি বলতে পারতেন সবচেয়ে ভালো। বিনয়েও ছিলেন নিপুণ।

এক ডগমগে নারী আমাকে বলেছিলেন, ‘কাছে থেকে দেখতে এরশাদ অত্যন্ত সুদর্শন।’ আমি এরশাদকে দেখিনি, দেখেছি তার হিংস্রতা। জিয়াউর রহমানের লাশ ঢাকায় পৌঁছার পর শবাধারের ওপর পড়ে এরশাদ যেভাবে কাঁদছিল, ওই দৃশ্য জহর রায়ের অভিনয়কেও হার মানিয়েছিল।

ব্রিগেডিয়ার শামসুদ্দীন আহমেদ ‘যখন বঙ্গভবনে ছিলাম’ নামে একটি বই লিখেছেন। এটি পড়ে যে মজা পেয়েছি, গোপাল ভাঁড়ের গল্পেও অতো মজা পাইনি। তিনি তখন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব। তখন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আহসানউল্লাহ চৌধুরী। শামসুদ্দীন চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন আহসানউল্লাহর।
১৯৮৩ সালে এরশাদের পুত্র জন্মদান হয়ে উঠেছিল জাতীয় সংবাদ। যদিও এ নিয়ে সংশয় সব সময়ই থেকে গেছে।

১৯৮২-এর ২৪ মার্চ থেকে ১৯৯০-এর ৬ ডিসেম্বর, বাংলাদেশের ও আমাদের জীবনের সাড়ে আটটি বছর নষ্ট দূষিত করে গেছেন এরশাদ। তিনি ছিলেন খলনায়ক; তার জীবনে কোনো ট্রাজিক মহিমা নেই।

এরশাদ অবশ্য জানতেন, এই বঙ্গে তিনি একাই নষ্ট নন। তার মতো এবং তার থেকে নষ্টতর, বাংলাদেশীর কোনো অভাব ঘটবে না সোনার বাংলায়। এটি তিনি দেখে এসেছেন বড় আইউবের কালে- পাকিস্তানে, ছোটো আইউবের কালে- বাংলাদেশে। কতো নষ্ট পুরুষ ও নারী, দালাল ও কবি যে তার সাথে যোগ দিয়েছিল, তার হিসাব কে রাখে? একই ধারাবাহিকতা সম্ভবত এখনো চলছে।

মুক্তচিন্তা, বাকস্বাধীনতা, বিজ্ঞানমনস্কতা, মানবাধিকারই হয়ে উঠেছে রাষ্ট্রের কাছে সবচেয়ে আপত্তিকর। সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শৈল্পিক, সাংস্কৃতিক স্থবিরতা ও নৃশংসতার এই পরিবেশে দম বন্ধ হয়ে আসে। এভাবে আমার দম আগে কখনো বন্ধ হয়ে আসেনি। আমার আজকের এই লেখা কি পারিপার্শ্বিক গভীর হতাশা থেকে নিজেকে উদ্ধারের একটি নিষ্ফল বিপজ্জনক উদ্যোগ?

এখানে সুড়ঙ্গের ওপারে কোনো আশার আলো দেখি না। বেশ কিছু দিন ধরে কিছু করতে পারছি না, লিখতে পারছি না, পড়তে পারছি না, কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে না, কারো মুখ দেখে সুখী হই না। পত্রিকার পাতা খুললে ভোরবেলাটি তীব্র বিবমিষায় ক্লেদাক্ত ওঠে। কেন এত স্থবিরতা বোধ করছি? এমন মর্মপীড়ন, এত নিরাশা?

কারণ, আমরা প্রতি মুহূর্তে ভয়ের মধ্যে আছি; ভয়ই এখন আমাদের প্রভু। দিগন্ত কারাগারের দেয়ালের মতো চেপে আসছে, মুক্ত বায়ু বইছে না, চারদিকে কারাগারের শিক ও দেয়াল দেখতে পাচ্ছি, দিকে দিকে শুধু ডাণ্ডাবেড়ি। হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি নিয়েই মায়ের জানাজা পড়িয়েছেন বিএনপি নেতা আলী আজম। এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম আমরা? এভাবে ভীতির মধ্যে বাস করার জন্য? অনেকের সাথে কথা বলে দেখেছি, তারাও আমার মতোই হতাশার গর্তে বাস করছেন।

এমনই পরিস্থিতিতে দেশের ভাবমর্যাদার কথা এখন খুব শুনতে পাই। ভাবমর্যাদা বা ইমেজ শব্দটি সম্ভবত শাসকরা নতুন শিখেছে। শিশুরা নতুন ছড়া শিখলে যেমন আনন্দে যখন তখন আবৃত্তি করে, তারাও তেমনি আবৃত্তি করে চলেছেন। আমাদের রাজনীতিবিদ, আমলা, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি সব শ্রেণীরই ইমেজ তো কমবেশি দুর্বৃত্তপনা, অসততা, স্বার্থপরতা, অযোগ্যতার। দেশ ও দেশের এই ইমেজের রূপও তো সেরকমই হবে!

বিশ্বের কাছে আমার দেশের ভাবমর্যাদা কী? দুঃশাসনের, দারিদ্র্যের, দুর্ভিক্ষের, হত্যার, দুর্নীতিতে প্রথম হওয়ার, ভিখিরির। আমি কি আমার দেশ সম্পর্কে অকপটে কথা বলতে পারব না?

বাংলাদেশে জন্ম নেয়া কি অভিশাপ আমার ও আরো অনেকের জন্যে? কিন্তু আমি কি আমার জন্ম বাতিল করতে পারি? আমি কি দূরে যেতে পারি, যে স্বদেশভূমি আমাকে স্বপ্ন দেখিয়েছিল, যাকে আমি স্বপ্নে ভরে তুলেছিলাম, তার থেকে? যত তুচ্ছই হোক বিশ্বে, সে তো ছিল আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, আমার পৃথিবী!

কিন্তু আজ সে আমাকে অসুস্থ করছে। সে নিজেই অসুস্থ। আমি তো একে নিয়ে সুখী ও সৃষ্টিশীল থাকতে চেয়েছি। কোনো উজ্জ্বল প্রাপ্তির হাতছানিতে আলোড়িত হইনি। নিজের দেশকেই উজ্জ্বল, মুক্ত, সচ্ছল, ভবিষ্যৎমুখী দেখতে চেয়েছি। সৎ দেখতে চেয়েছি, গণতান্ত্রিক দেখতে চেয়েছি, শিল্পকলা ও বিজ্ঞানমনস্ক আলোকিত দেখতে চেয়েছি। কিন্তু আমার দেশ অন্ধকার থেকে অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে, মধ্যযুগের গভীর অমবস্যা আমার দেশকে ঘিরে ধরছে। কোথাও আলো দেখছি না, শুধুই অন্ধকার, অধিকারহীনতা, পীড়ন, দারিদ্র্য ও বর্বরতার নিরঙ্কুশ উল্লাস।

রাষ্ট্রচালকরা আমার দেশকে আমার কাছেই বিশ্বাসঘাতক করে তুলেছে। কত প্রত্যাশা ছিল দেশের কাছে আমাদের। অথচ এখন নিজের দেশ, বাংলাদেশ নিয়ে কোনো কথা শুনতে ও বলতে আমার আর ভালো লাগে না, সহ্য করতে পারি না।

আজকাল কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে এলে বলি, বাংলাদেশ কথা বলার মতো বিষয় নয়, অন্য কোনো কথা বলো।

আমি কি খুব দুঃখে আছি, কষ্টে আছি, ঘৃণার মধ্যে বেঁচে আছি? ঘৃণার মধ্যে থেকে থেকেই মরে যাব? আমি কি ভালোবাসতে জানি না? আমার কি হৃদয় বলে কিছু নেই? আমি কি ভোরবেলায় পাখির ডাকে জেগে উঠে, রোদ দেখে, কুয়াশা দেখে, ঘাস দেখে, প্রিয় মুখ দেখে, হঠাৎ কারো কণ্ঠস্বর শুনে সুখী হয়ে উঠি না? আমি কি ভালোবাসি না দুঃখী এই দেশকে? এ দেশ কি আমার রক্তের সাথে জড়ানো নয়? আমি কি এই দেশকে আমার জন্য অপরিহার্য করে তুলিনি।

আমি দেশকে ভালোবাসি। আমার দেশ বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ালেই আমরা শান্তি পাবো। আমরা কোনো স্বৈরাচারের সাথে আপস করব না। এটিই হোক ২০২৩ সালের অঙ্গীকার।

লেখক : নব্বইয়ের স্বৈরচারবিরোধী সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের কেন্দ্রীয় ছাত্র নেতা ও সভাপতি সাংবিধানিক অধিকার ফোরাম