নিবন্ধনের রায় প্রত্যাখ্যান জামায়াতের

আপিল বিভাগে দলের নিবন্ধন বাতিলের রায় বহাল প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, এটি একটি ন্যায়ভ্রষ্ট রায়। আমরা এ রায় প্রত্যাখ্যান করছি। আইনজীবীরা আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। আমরা মনে করি, জনগণের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার ঘৃণ্য উদ্দেশ্যে এ ন্যায়ভ্রষ্ট রায় প্রদান করা হয়েছে।
রোববার রাতে সুপ্রিম কোর্টে জামায়াতের নিবন্ধন মামলায় প্রদত্ত রায়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।

মুজিবুর রহমান বলেন, জামায়াতের মত একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের বক্তব্য না শুনে জামায়াতের আইনজীবীর এ্যাজর্নমেন্ট বা মূলতবি পিটিশনটি খারিজ করে দিয়ে ‘পিটিশন ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ হিসেবে আপিল মামলাটি খারিজ করে দেয়ায় জামায়াত ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এটি একটি ন্যায়ভ্রষ্ট রায়। আমরা এ রায় প্রত্যাখ্যান করছি। আইনজীবীরা আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। আমরা মনে করি, জনগণের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার ঘৃণ্য উদ্দেশ্যে এ ন্যায়ভ্রষ্ট রায় প্রদান করা হয়েছে। এ রায়ের মাধ্যমে মূলত সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। আমরা জামায়াতের সর্বস্তরের জনশক্তি, সুধীমহল ও সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে চলমান গণআন্দোলনকে আরো বেগবান করে সরকারের পতন নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, দেশে চলছে হরতাল ও অবরোধের কর্মসূচি।

এই পরিস্থিতিতে আদালত জামায়াতের নিবন্ধন মামলার শুনানির জন্য ১৯ নভেম্বর সময় নির্ধারণ করেন। রেওয়াজ অনুযায়ী হরতাল বা রাজনৈতিক কর্মসূচির দিন সিনিয়র আইনজীবীরা আদালতের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন না। জামায়াতের নিবন্ধন মামলার সিনিয়র আইনজীবী নিবন্ধন মামলার শুনানি মূলতবি রাখার জন্য সময় আবেদন করেন। আদালত তা নামঞ্জুর করেন। সেই সঙ্গে ‘পিটিশন ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ হিসেবে আপিল মামলাটি খারিজ করে দেন। 

ভারপ্রাপ্ত আমীর বলেন, জামায়াতে ইসলামী ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধন লাভ করেছিল। নিবন্ধনের বিরুদ্ধে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে হাইকোর্ট রিটের নিষ্পত্তি করে রায় প্রদান করেন, যেখানে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করা হয়। জামায়াত ঐ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে দুই মাসের মধ্যে আপিলের সার-সংক্ষেপ জমা দেয়ার সময় সীমা বেঁধে দেয়া হয়। ডিফল্টার হলে জামায়াতের আপিল খারিজ হয়ে যাবে বলেও উল্লেখ করা হয়। জামায়াত নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই আদালতে সার-সংক্ষেপ জমা দেয়।

তিনি আরো বলেন, এবছরের ১০ জুন জামায়াতের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে জামায়াতের রাজনৈতিক তৎপরতার উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ও জামায়াত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে দুটো পিটিশন দায়ের করা হয়। ঐ পিটিশন শুনানির জন্য আদালত দিন-তারিখ ধার্য করেন। পরবর্তীতে ৬ নভেম্বর আপিল শুনানির বিষয়ে আদালত আদেশ প্রদান করেন।
মানব জমিন