এমএম মাসুদ ও সিদ্দিকুর রহমান সুমন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে
(১১ মিনিট আগে) ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রবিবার, ৯:০৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৯:১৩ পূর্বাহ্ন
দেশ পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের (এনআরবি) প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বলেন, ‘প্রবাসীরা সব সময়ই দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে দেশের কল্যাণে কাজ করতে হবে।’ শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধায় নিউ ইয়র্কে ‘এনআরবি কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশিজ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে ঘুরে ফিরে আসে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ। এক বছর আগে কী পরিস্থিতিতে তিনি সরকার গঠন করেছিলেন তা জানিয়ে প্রবাসীদের বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন পুনর্গঠনের কাজ চলছে। প্রবাসীরা যে যেখানেই আছেন দেশের জন্য কাজ করতে হবে।’ প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ রেমিট্যান্সের ২১ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনে অবদান রাখার জন্য বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের প্রশংসা করেন ড. ইউনূস। তিনি বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ তৈরিতে তার সরকারের উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন।
বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের উপস্থাপনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এ সময় তিনি জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে গত ১৫ মাসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি তুলে ধরেন। তিনি রেমিট্যান্সে ২১ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশি প্রবাসীদের প্রশংসা করেন এবং বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকারি উদ্যোগের রূপরেখা তুলে ধরেন। চৌধুরী আশিক প্রবাসীদের অব্যাহত সমর্থন কামনা করেন এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটদান পদ্ধতির বিষয়ে তাদের অবহিত করেন।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডার আয়োজনে নিউ ইয়র্কে আয়োজিত এনআরবি কানেক্ট ডে’র অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় মুহুর্মুহু করতালি আর স্লোগানে বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদকে স্বাগত জানান প্রবাসীরা। ড. ইউনূসও হাত নেড়ে তাদের জবাব দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সর্বদা আপনাদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করার উপায় খুঁজে বের করার পরিকল্পনা করছি। আপনাদের দেখে আমরা নতুন সংকল্প নিয়ে দেশে ফেরার আত্মবিশ্বাস পাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘দর্শক সারি থেকে কথা বলা খুব সহজ। কিন্তু আমরা চাই আপনারা মাঠে আমাদের সঙ্গে যোগ দিন এবং একসঙ্গে কাজ করুন।’ প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যায় যখন দেখলাম যে রাজনৈতিক নেতারা এই সফরে আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে রাজি হয়েছেন।’
প্রবাসীরা বাংলাদেশের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাইয়ের বিদ্রোহের ফলে সৃষ্ট পরিবর্তনগুলোকে এগিয়ে নিতে তারা তাদের নিজ নিজ সক্ষমতায় অবদান রেখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ‘শুভেচ্ছা’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন উদ্বোধন করেন, যা প্রবাসীদের প্রয়োজনীয় পরিষেবা, নির্দেশনা এবং বিনিয়োগের সুযোগ প্রদানের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
জাতিসংঘের অধিবেশনের মতোই এই অনুষ্ঠানেও প্রধান উপদেষ্টার পাশে ছিলেন সফরসঙ্গী বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের ও এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ আরও অনেকে। তারা বাংলাদেশ প্রশ্নে সবাইকে এক থাকার ওপর জোর দেন।
এর আগে অনুষ্ঠানে দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকা বিএনপি নেতা হুমায়ূন কবীর, যুক্তরাষ্ট্র জামায়াতের মুখপাত্র ডক্টর নাকিবুর রহমান ও এনসিপি নেতা ডাক্তার তাসনিম জারা প্যানেল আলোচনায় আবেগঘন বক্তব্য রাখেন। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলও বক্তব্য রাখেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর এনআরবি-এর চেয়ারপারসন এম এস সেকিল চৌধুরী।
‘ব্রিজিং বর্ডারস: কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ডায়াস্পোরা এনগেজমেন্ট’ শীর্ষক একটি ইন্টারেক্টিভ প্যানেল আলোচনার পরে বিশেষ দূত লুৎফী সিদ্দিকী সঞ্চালনা করেন। প্রশ্নোত্তর পর্বে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘বিমানবন্দরে রাজনীতিকদের ওপর হামলার ঘটনায় ওয়াশিংটন দূতাবাস কিংবা নিউ ইয়র্কের কনস্যুলেটের কারও ব্যর্থতা থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
Source: https://mzamin.com/news.php?news=182141#gsc.tab=0