- সিলেট ব্যুরো
- ২৯ মার্চ ২০২২, ১৯:০১, আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২২, ১৯:০৩
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব যাদের তারা এখন রাজনীতি ও দুর্নীতিতে ব্যস্ত।
তিনি বলেন, ক’দিন আগেও পুলিশের আইজি রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন। আর ডিএমপি কমিশনার বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা শিষ্টাচার বহির্ভূত। এমন অভিযোগ এনে আইজিপি ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের অপসারণ দাবি করেছেন ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট রেজিস্ট্রি মাঠে জেলা বিএনপি’র কাউন্সিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার বলে দেশে মেগা উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু আদতে মেগা উন্নয়নের নামে মেগা দুর্নীতি হচ্ছে। ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু দুর্নীতি করে ৩০ হাজার কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দুর্নীতির টাকা কানাডায় পাচার করা হচ্ছে। এই সরকার দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। বিচার বিভাগও আজ স্বাধীন নয়। বিচারকদের স্বাধীনতা নেই। ডিসি এসপি আর আইন মন্ত্রণালয় যেভাবে চায় সেভাবে বিচার হয়। তাদের নির্দেশে জামিন হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, যেখানে আমাদের স্বাধীনতা থাকবে, নির্ভয়ে কথা বলতে পারবো। কিন্তু স্বাধীনতার পরই আওয়ামী লীগ জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের কারণে ১৯৭৪ সালে দেশে দুর্ভিক্ষ এসেছিলো। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলেন। দেশের অর্থনীতিকে শক্ত ভিত্তি এনে দিয়েছিলেন। এই সরকার এসে আবার সবকিছু নষ্ট করে দিচ্ছে।
জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের সভাপতিত্বে ও বিএনপি সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলনের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা: এজেডএম জাহিদ হোসেন, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা: এনামুল হক চৌধুরী, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, তাহসিনা রুশদীর লুনা, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা: শাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সদস্য ও সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, ডা: শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশা ও আবুল কাহের চৌধুরী শামীম।
এর আগে সকাল সোয়া ১১টায় জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে বিএনপির সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসীনা রুশদীর লুনা ও খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী।
পরে দুপুর আড়াইটায় শুরু হয় কাউন্সিল। এ সময় ১ হাজার ৮১৮ জন কাউন্সিলর বা ভোটার গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিয়ে শীর্ষ ৩ নেতা নির্বাচিত করেন।
দুই চৌধুরীর নেতৃত্বে সিলেট বিএনপি
মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট জেলা বিএনপি’র কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কাউন্সিলর বা ভোটারদের গোপন ভোটের মাধ্যমে কমিটির তিন শীর্ষ নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে সভাপতি পদে আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট ইমরান আহমদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মো: শামিম আহমদ বিজয়ী হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট আব্দুল গফফার।
তিনি জানান, সভাপতি পদে আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ৮৬৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবুল কাহের চৌধুরী শামীম পান ৬৭৫ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ৭৯৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আলী আহমদ পান ৫৭৩ ভোট। এ পদে অন্য ২ প্রার্থী আব্দুল মান্নান ৮১ ভোট ও আ ফ ম কামাল ৭২ ভোট পান। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে শামীম আহমদ ৬২৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান পান ৪৬৪ ভোট ও লোকমান আহমদ পান ৪৩৯ ভোট।