দুষ্কৃতকারীদের লাফালাফিতে নির্বাচন বানচাল হবে না: প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সবাইকে যার যার এলাকায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অগ্নিসন্ত্রাস যারা করে, তাদের ধরে ওই আগুনে ফেলতে হবে। যে হাতে আগুন দেয় ওই হাত পুড়িয়ে দিতে হবে। যেমন কুকুর তেমন মুগুর। তা না হলে তাদের শিক্ষা হবে না। প্রত্যেক এলাকায় কতো বিএনপি-জামায়াত আছে, খুঁজে বের করতে হবে। এদের ধরিয়ে দিতে হবে। যাতে মানুষের জানমাল নষ্ট করতে না পারে। শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুষ্কৃতকারী কয়েকজনের লাফালাফিতে নির্বাচন বানচাল হবে না। তাদের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না।

তারা নির্বাচনে আসবে কিনা, জানি না। এলেও আসবে, ওই নমিনেশন বাণিজ্য করতে। তিনি বলেন, নির্বাচন তারা কাকে নিয়ে করবে? নির্বাচন করলে ওদের নেতা কে? কাকে প্রধানমন্ত্রী করবে? কাকে নিয়ে মন্ত্রিসভা করবে? তাদের চেয়ারপারসন তো দুর্নীতির দায়ে জেলে। অসুস্থতা বিবেচনায় আমি তাকে বাসায় থাকতে দিলাম। একটা কুলাঙ্গার ছেলে তৈরি করে গেছেন জিয়াউর রহমান। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা ও মানি লন্ডারিং মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। ২১শে আগস্ট গ্রেনেডে হামলায় জড়িত, তাতে তো সন্দেহ নাই। শেখ হাসিনা বলেন, তত্ত্বাবধায়কের আমলে মুচলেকা দিয়ে চলে যায়। এখন না কি ওখানে বসে জুয়া খেলে আর টাকা ইনকাম করে। আর ওখান থেকে জ্বালাও-পোড়াও করার নির্দেশ দেয়। বিএনপিতে আর কোনো নেতা নাই? ওই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে তারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেছে। তিনি বলেন, বিএনপি খুন করা ছাড়া কিছুই বুঝে না। আজকে বিএনপি’র অগ্নিসন্ত্রাস, তাদের যে বীভৎস চেহারা। এটা তারা ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালেও ঘটিয়েছে। ২০০১ সালেও আমরা তাদের চেহারা দেখেছি। এরা দেশের ক্ষমতায় যখন ছিল তখন আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী হত্যা করেছে, নির্যাতন করেছে, জেলে পুড়িয়েছে।

এ সময় মনোনয়ন নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিভাজন না করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এ কথা ভাবলে চলবে না, ওরা (বিএনপি) তো আসবে না। একটা সিট না পেলে কী হবে! এ চিন্তা যেন কারও মাথায় না থাকে। আমরা মনোনয়নে যে সিদ্ধান্ত দেবো, সেটা মানতে হবে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আবারো ভোটের মাধ্যমে সরকারে আসতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল আমাদের জাতীয় চার নেতাকে। আজকে তার স্মরণসভা। কারাগার সব থেকে নিরাপদ জায়গা, সেখানে গিয়ে নির্মম হত্যাকাণ্ড চালায়। এ হত্যার পেছনে চক্রান্তকারী খুনি মোশতাক। মোশতাকের মূল শক্তি ছিল জিয়াউর রহমান। তিনি ছিলেন এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে সম্পূর্ণ সম্পৃক্ত। মোশতাক-জিয়া চক্রান্ত করে যেমন জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করেছেন, তারা চার নেতাকেও হত্যা করেছেন। এই হত্যাকাণ্ডে মোশতাকের সব থেকে নির্ভরযোগ্য লোক ছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, ১৫ই আগস্ট ও ৩রা নভেম্বরের হত্যাকাণ্ড থেকেই হত্যা-ক্যু ষড়যন্ত্র শুরু হয়। সেখান থেকেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধ্বংস শুরু। জিয়াউর রহমান মুখে বলেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা। তিনি যদি মুক্তিযোদ্ধা হবেন, তাহলে তার আমলে ‘জয় বাংলা’ সেøাগান নিষিদ্ধ হয় কীভাবে? এ সময় নিত্যপণ্য মজুত করে জনগণের পকেট কাটার চেষ্টা যারা করছেন তাদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন সরকারপ্রধান। বলেন, সবজি আমাদের দেশে উৎপাদন হয়। এটা বাজারে না এনে রেখে দেবে। দাম বাড়িয়ে দেবে। কারা মজুত করে জনগণের পকেট কাটার চেষ্টা করছে খুঁজে বের করতে হবে।

মানব জমিন