- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৮ আগস্ট ২০২৩, ০০:৩৫, আপডেট: ০৮ আগস্ট ২০২৩, ০০:৩৬
দেশের বাইরে ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলমের অর্থ স্থানান্তরের বিষয়ে অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে অনুরোধ এলে সে অনুযায়ী কাজ হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
সোমবার (৭ আগস্ট) বিকেলে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিভাগের সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউয়ের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস উপস্থিত ছিলেন।
এস আলমের মালিকের অর্থ পাচারের অনুসন্ধানের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘আমরা এ ধরনের কোনো নির্দেশনা এখন পর্যন্ত পাইনি। যদি ওই রকম থাকে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যদি আমাদেরকে অনুরোধ করে, তাহলে আমরা আমাদের যেটা করার, সেটা আমরা করব, আইনের মধ্যে থেকে।
বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডার মতো দেশগুলোতে মানিলন্ডারিং হয়ে থাকে। সেই টাকাগুলো ফেরত আনতে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফেরত আনা তো পরের বিষয়। এগুলো কোন রুটে যাচ্ছে, সেগুলো বন্ধ করা দরকার। সবই যে অস্বচ্ছ টাকা, তা তো না।
‘আমরা অনেক সময় দেখেছি, কনাডায় পাচারের কথা বলেন। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে অনেক বাংলাদেশী আছে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, তারা কিন্তু অনেক কষ্ট করে পয়সা অর্জন করে কানাডায় গেছেন। সুতরাং সেটাও কিন্তু এখানে আছে। অনেকে ব্যবসা করেন এক্সপোর্টের, সেটির আয়ের একটি অংশ ওখানে থাকে, সেটাও কতটা অবৈধ সেটি আমি জানি না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অনেকে বাবা-মা, দাদার জমি বা অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি করে নিয়ে গেছেন সেটার সোর্স অবৈধভাবে অর্জিত বলা ঠিক হবে না। কিন্তু সেটি কীভাবে নেয়া হয়েছে, আইনসঙ্গতভাবে নেয়া হয়েছে কিনা; সেই ইস্যুগুলো যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ইনফরমেশনের দিক থেকে ওদের সাথে তো যোগাযোগ আছে। আমাদের যে সংস্থাগুলো আছে বাংলাদেশ ব্যাংক ওদের কাউন্টার পার্ট। ওদের সাথে যে খুব একটা সমস্যা আছে তা না। সব দেশের সাথে ইক্যুয়াল পাই না।’
উল্লেখ্যর, ৪ আগস্ট একটি ইংরেজি জাতীয় পত্রিকায় ‘এস আলম’স আলাদিন’স ল্যাম্প’ (এস আলমের আলাদিনের চেরাগ) শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে কমপক্ষে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের (প্রায় ১০ হাজার ৮০০ কোটি টাকা) ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। যদিও বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত কোনো অনুমতি তিনি নেননি।
পত্রিকাটি লিখেছে, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের বাইরে বিনিয়োগের জন্য এ পর্যন্ত ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিলেও চট্টগ্রামভিত্তিক বৃহৎ এই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নাম সেই তালিকায় নেই। নথি থেকে দেখা যায়, এক দশকে সিঙ্গাপুরে এস আলম অন্তত দু’টি হোটেল, দুটি বাড়ি, একটি কমার্শিয়াল স্পেস (বাণিজ্যিক পরিসর) এবং অন্যান্য সম্পদ কিনেছেন, সেখানেও বিভিন্ন উপায়ে কাগজপত্র থেকে তার নাম সরিয়ে ফেলা হয়েছে।