দুই পরিচালককে দুষলেন ক্রিকেটাররা

দুই পরিচালককে দুষলেন ক্রিকেটাররা

বিশ্বকাপ ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদনে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য উঠে এসেছে। যেগুলো প্রকাশ করা হলে নতুন করে তদন্তের দাবি উঠতে পারে। সে কারণে প্রতিবেদনের অনুলিপি বোর্ড পরিচালকদের দেওয়া হয়নি বলে জানায় মূল্যায়ন কমিটি। ভবিষ্যতেও পরিচালকদের প্রতিবেদন দেওয়ার সম্ভাবনা কম বলে জানা গেছে। কারণ ক্রিকেটারদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বকাপ দলে অস্থিরতা তৈরিতে দু’জন পরিচালকের দায় খুঁজে পেয়েছে কমিটি। 

বিসিবির একটি সূত্র জানায়, বিশ্বকাপ দলের সঙ্গে থাকা দু’জন পরিচালকের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছেন ক্রিকেটাররা। যেটা অস্বস্তিতে ফেলেছিল মূল্যায়ন কমিটিকেও। অভিযুক্ত পরিচালকদ্বয়কে লজ্জার হাত থেকে বাঁচাতে মূল্যায়ন প্রতিবেদনের অনুলিপি পরিচালনা পর্ষদের সভায় উপস্থাপন করা হয়নি বলে জানান তারা। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও বিষয়টি চেপে গেছেন সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে।

এনায়েত হোসেন সিরাজের মূল্যায়ন কমিটি বিশ্বকাপ-সংশ্লিষ্ট সবার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে। টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস, প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু (সাবেক), নির্বাচক হাবিবুল বাশারের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় প্রথমে। পরবর্তী সময়ে কোচিং স্টাফ ও ক্রিকেটারদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। সবার শেষে নেওয়া হয় অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সাক্ষাৎকার। বিশ্বকাপ দলের সদস্য না হলেও মূল্যায়ন কমিটির মুখোমুখি হতে হয় তামিম ইকবালকে। তাঁকে কেন বিশ্বকাপ দলে নেওয়া হয়নি, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। মূল্যায়ন কমিটির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তামিম নিজের মতো করে পুরো ঘটনা বর্ণনা করেছেন। বিসিবি সভাপতি ও তামিমের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির পেছনে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দায় খুঁজে পেয়েছে কমিটি। বিশ্বকাপে তামিম না থাকায় দলের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে বলে একাধিক অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের বক্তব্যে উঠে এসেছে।

বিসিবির একজন পরিচালক জানান, তামিম ইকবাল ও মাশরাফি বিন মুর্তজার পরামর্শে হাথুরুসিংহেকে দ্বিতীয় দফায় জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। হাথুরু-তামিম জুটি শুরুতে ‘ক্লিক’ করেছিল। কিন্তু অধিনায়ক কোচের কাছ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা না পাওয়ায় দূরত্ব বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি বেশি খারাপ হওয়ায় তামিম হুট করে অবসরের ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অবসর ভাঙলেও নেতৃত্ব ছেড়ে দেন তামিম। কিন্তু কোচ কোনোভাবে চাননি তামিম বিশ্বকাপ খেলুক।

মূল্যায়ন কমিটি এগুলোও লিপিবদ্ধ করেছে। প্রতিবেদনে যে বিষয়টির ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তা হলো ক্রিকেটার বা কোচিং স্টাফের কেউই ব্যর্থতার দায় নেননি। উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ের মতো একে অন্যের ওপর দোষ চাপাতে চেষ্টা করেছেন টিম ম্যানেজমেন্টের সদস্যরা।

মূল্যায়ন কমিটির একজন জানান, বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে প্রতি ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করাতে দল হিসেবে ভালো খেলতে পারেনি– মত দিয়েছেন ক্রিকেটারদের একাংশ। আর অধিনায়ক সাকিবের ইচ্ছায় এই পরিবর্তন করা হয়েছে বলে বক্তব্য দিয়েছেন হাথুরুসিংহে। সাকিবও অনুরূপ প্রধান কোচকে কাঠগড়ায় তুলেছেন বলে জানায় তদন্ত কমিটি।

মজার ব্যাপার হলো, কোচ হাথুরুসিংহে কর্তৃক বাঁহাতি স্পিনার নাসুমের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়ে ক্রিকেটার, পরিচালক বা কোচিং স্টাফের কেউই তথ্য দেননি কমিটিকে।

samakal