দিশেহারা ইসরাইল : ফিলিস্তিনে লাশের সারি

বাংলাদেশ ক্রনিক্যাল ডেস্ক : গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের আকস্মিক হামলা ও ইসরাইলের পাল্টা বিমান হামলার পর যুদ্ধ শুরু হয়েছে অঞ্চলটিতে। কয়েকশো ইসরাইলি নিহত হয়েছে হামাসের হামলায়। অনেক ইসরাইলিকে বন্দী করেছে হামাস যোদ্ধারা। এর জবাবে ইসারাইলের বিমান হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যাও দুইশো ছাড়িয়েছে।
বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়েছে, শনিবার ভোরে কয়েকটি দিক থেকে ইসরাইলি ভূখ-ে হামলা চালায় হামাসসহ ফিলিস্তিনের একাধিক প্রতিরোধ সংগঠন। আকাশ, সমুদ্র ও স্থল পথে একযোগে হামলায় হতবম্ব হয়ে পড়ে ইসরাইল। ইসরাইলের কয়েকটি শহরে ঢুকে পড়ে যোদ্ধারা, সেই সাথে আকাশে উড়ে আসে ঝাকে ঝাকে রকেট। গণমাধ্যমগুলো বলছে, ইসরাইল তার রাষ্ট্র ঘোষণার ৭৫ বছরে কখনো এমন হামলার মুখোমুখী হয়নি। গাজা উপত্যকাকে থেকে এই আকস্মিক হামলার বিষয়ে বিন্দুমাত্র আন্দাজ করতে পারেনি ইসরাইলের গোয়েন্দারা।
হামলায় অন্তত ৩০০ ইসরাইলি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদ মাধ্যম জেরুসালেম পোস্ট। আহত হয়েছে দেড় হাজারের বেশি। হতাহতদের মধ্যে ইসরাইলি সেনা সদস্য যেমন রয়েছে, তেমনি আছে সাধারণ ইসরাইলি নাগরিক। অনেককে বন্দী করে গাজা ভূখ-ে নিয়ে গেছেন যোদ্ধারা। আবার অনেক ইসরাইলি শহরে তারা এখনো অবস্থান করছেন, সেখানেও তাদের হাতে বন্দী আছে ইসরাইলিরা।
এপি জানিয়েছে, গাজা শহর থেকে অন্তত ২২টি পয়েন্ট দিয়ে হামাসের যোদ্ধারা ইসরাইলে প্রবেশ করে। গাজা সীমান্ত থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ইসরাইলের ভেতরে ঢুকে পড়ে তারা। ইসরাইলি সেনাবাহিনী পরিস্থিতি বুঝে উঠে প্রতিরোধ করার আগেই অনেক জায়গায় তাদের ঘাঁটি গুড়িয়ে দেয় হামাস। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, ইসরাইলের ট্যাংক আগুনে পুড়ছে। তার পাশে সিজদা দিচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। শনিবার রাতভর বিভিন্ন এলাকায় হামাসের সাথে ইসরাইলি সেনাদের বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে। একটি শহরে একটি পুলিশ স্টেশন ঘেরাও করে রেখেছে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, তার দেশ যুদ্ধের মধ্যে রয়েছে। অন্য দিকে হামাস বলেছে, দিনের পর দিন ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি হামলার অবসান ঘটাতে এই অভিযান চালানো হয়েছে। এর একমাত্র লক্ষ্য ফিলিস্তিনিদের মুক্তি নিশ্চিত করা।

২.
স্থানীয় সময় শনিবার ভোর। ঘড়ির কাটায় তখন সাড়ে ছয়টা বাজে। ইসরাইলের বিভিন্ন শহরের নাগরিকরা তখনো ঘুম থেকে জাগেনি। এমন সময় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে তাদের উদ্দেশ্যে উড়ে আসতে থাকে ঝাকে ঝাকে রকেট। এক সাথে এত রকেট হামলা আগে কখনো দেখেনি ইসরাইল। তাদের আয়রন ডোম এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দিশেহারা হয়ে পড়ে এত রকেট হামলায়। বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক এরিয়াতেই বেশিরভাগ রকেট হামলা হয়। ইসরাইলের আকাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় মুহুর্তে।
ইসরাইল জুড়ে হামলার সতর্কতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে। দিশেহারা নাগরিকরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার জন্য পালাতে শুরু করে। হামাস বলেছে, তারা এদিন ২০ মিনিটের মধ্যে অন্তত ৫ হাজার রকেট ছুড়েছে। হামলার পর ইসরাইলের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। অনেক ভবনে আগুন ধরে যায়।
হামাসের সামরিক শাখা আল কাসসাম ব্রিগেডের প্রধান মোহাম্মাদ দেইফ এক বিবৃতিতে এই অভিযানকে অপারেশন আল আকসা ফ্লাড হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, আমরা শুরুতে ৫ হাজার মিসাইল হামলা চালিয়েছি শত্রুদের সামরিক অবস্থান, সামরিক স্থাপনা ও বিমানবন্দর লক্ষ্য করে।
তখনো ইসরাইলিরা ভাবতে পারেনি তাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে সামনে। সকাল ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে সীমান্তের প্রচীর ভেঙে বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ঢুকে পড়েন হামাসের যোদ্ধারা। একযোগে বিভিন্ন পয়েন্ট ঢুকেই তারা ইরসাইলি সেনা অবস্থানগুলোতে হামলা শুরু করেন। গাজা সীমান্তে নিয়োজিত ইসরাইলের সেনারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামাস সদস্যরা প্রবেশ করে বিভিন্ন শহর ও বসতিতে।
৩.
বেশিরভাগ যোদ্ধাই স্থলপথে সীমান্ত প্রাচীর ভেঙে ইসরাইলে ঢোকে। তবে আকাশ পথেও প্যারাগ্লাইডার ব্যবহার করতে দেখা গেছে হামাস যোদ্ধাদের। একজন প্যারাগ্লাইডারের একটি ছবিও ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইলে। এছাড়া সমুদ্রপথেও ইসরাইলের উপকূলীয় শহর জিকিমে ঢোকার চেষ্টা করে তারা।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে গাজা সীমান্তে নির্মিত লোহার প্রাচীরের ভাঙা অংশ দিয়ে অন্তত ৬টি মটরসাইকেলে ইসরাইলে প্রবেশ করছেন হামাস যোদ্ধারা। আরেক ভিডিওতে দেখা গেছে, যোদ্ধাদের প্রবেশের জন্য বুলডোজার দিয়ে সীমান্ত প্রাচীর ভেঙে ফেলা হচ্ছে। বেশিরভাগ জায়গায় ইসরাইল কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলা হয়েছে। যার ফলে হামাসকে আটকাতে কোন কৌশলই গ্রহণ করতে পারেনি ইহুদিবাদী দেশটির সেনারা।
হামাসের যোদ্ধারা ইসরাইলে ঢুকেই বিভিন্ন সামরিক পোস্টে আক্রমণ শুরু করে। সীমান্ত ঘাঁটিগুলোও গুড়িয়ে দেয় তারা। আলজাজিরা বলছেন, প্রথম কয়েক মিনিটের মধ্যেই বেইত হানুন সীমান্ত ক্রসিং, জিকিম ঘাটি ও রেইম শহরের সেনা হেডকোয়র্টার দখলে নেয় হামাস যোদ্ধারা। এসব জায়গা থেকে ইসরাইলের বিভিন্ন সামরিক যান দখলে নেয় তারা এবং সেগুলো পরে গাজায় নিয়ে আসা হয়। এছাড় অনেক ইসরাইলি সেনা ও সাধারণ নাগরিককেও বন্দী করে গাজায় নিয়ে আসে যোদ্ধারা।
ইসরাইলের সীমান্তবর্তী শহর সেদরত, বেইরি, ওফাকিম শহরে ঢুকে পড়ে হামাস যোদ্ধারা। সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভেতরেও দেখা গেছে তাদের। হামলা টের পেয়ে দ্রুত ইসরাইলের নাগরিকরা বম্ব শেল্টারে আশ্রয় নেয়। কেউ দিশেহারা হয়ে পালাতে শুরু করে।


৪.
শনিবার রাতভর বিভিন্ন এলাকায় হামাস সদস্যরা অবস্থান করেছেন বলে জানা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ইসরাইলি সেনাদের যুদ্ধপ্রস্তুতি দেখা গেছে ইসরাইলের সংবাদমাধ্যমগুলোতে। তবে সেসব জায়াগায় হামাস সদস্যরা অনেক ইসরাইলি সেনা ও নাগরিককে পণবন্দী করেছে। আবার অনেককে বন্দী করে গাজা উপত্যকায় নিয়ে আসা হয়েছে। ইসরাইলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, ওফাকিম শহরে অনেককে বন্দী করেছে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা।ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন ইসলামিক জিহাদ জানিয়েছে, তারা বেশ কিছু ইসরাইল সৈন্যকে বন্দী করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজস্ব পেইজে হামাস বন্দীদের ভিডিও প্রকাশ করেছে।
এছাড়া হামাসের যোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াইয়ে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর একজন ব্রিগেড কমান্ডার নিহত হয়েছেন। ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে। নিহত ব্রিগেড কমান্ডার হলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল জনাথন স্টেইনবার্গ। তিনি ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর নাহাল ব্রিগেডের দায়িত্বে ছিলেন। এই ব্রিগেড ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রধান পদাতিক শাখা। শনিবার হামাস যোদ্ধাদের গুলিতে স্টেইনবার্গ নিহত হন।
এছাড়া ইসরাইলের আরো অনেক সৈন্য হতাহত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ইসরাইলি সংবাদ মাধ্যম জেরুসালেম পোস্ট অন্তত ৩০০ ইসরাইলি নিহত ও দেড় হাজারের বেশি আহত হওয়ার খবর দিয়েছে। নিহতদের মধ্যে সেনা ও সাধারণ নাগরিক উভয়ই রয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, সীমান্ত এলাকায় বিভিন্ন পয়েন্ট হামাসের যোদ্ধাদের সাথে ইসরইলি সেনাদের লড়াই চলছে।
হামাসের পলিটিক্যাল উইংয়ের উপপ্রধান সালেহ আল-অরোরি আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, ইসরইলের কয়েকজন ‘সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাকে’ আটক করে নিজেদের জিম্মায় নিয়েছেন তারা। তিনি বলেন, আমাদের হাতে যে কজন ইসরায়েলি আছেন তাদের মাধ্যমে আমাদের সব বন্দিকে মুক্ত করা যাবে। আমরা দখলদার সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের আটক করেছি। অনেক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন; সঙ্গে ইসরায়েলিও নিহত হয়েছেন এবং অনেকে বন্দি আছেন। আর যুদ্ধ এখনো সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে।’
৫.
হামাসের আকস্মিক হামলায় ইসরাইল জুড়ে অস্থিরতা নেমে এসেছে। দেশটির সাধারণ নাগিরকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আর রাজনীতিকরা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বৈঠকের পর বৈঠক করছেন। যোগাযোগ করছেন পশ্চিমা নেতাদের সাথে।
ঘটনাকে যুদ্ধ পরিস্থিতি হিসেবে বর্ণনা করেছে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তিনি গাজা থেকে অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়িত করার অঙ্গীকার করেছেন। ইরসাইলের বিরোধী নেতা বলেছে, দেশ জরুরী অবস্থার মধ্যে রয়েছে। বিরোধী জোটের দুই শীর্ষ নেতা বেনি গান্তেজ ও ইয়ার লাপিদের সাথে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। যুদ্ধকালীন জরুরী সর্বদলীয় সরকার গঠনেরও প্রস্তাব দিয়েছেন বিরোধীরা।
অন্যদিকে হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মাদ দেইফ সর্বাত্মক যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন ইসরাইলের বিরুদ্ধে। তিনি বলেছেন, দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে হামাসের এই অভিযান শুরু হয়েছে। দখরদার মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ১৯৪৮ সালের পর- গত ৭৫ বছরে কখনো এমন পরিস্থিতিতে পড়েনি দখলদার ইসরাইল। বিবিসির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জেরেমি বাওয়েন বলেছেন, ১৫ বছর আগে হামাস গাজা উপত্যকায় সরকার গঠন করে। কিন্তু এই ১৫ বছরে তারা কখনো এ ধরনের কোনো কিছু করেনি।
শনিবার সকালে যেভাবে হামাসের শত শত যোদ্ধা ইসরাইলে প্রবেশ করে তা ইসরাইলিরা কখনো কল্পনাও করেনি। চেকপোস্টে থাকা ইসরইলি সেনাদের যেভাবে হামাসের সদস্যরা ধরে নিয়ে এসেছেন সেটি অনেকের কাছে বিষ্ময় মনে হয়েছে।
হামাসের এমন হামলার পর ইসরাইলের গোয়েন্দা সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গাজার এ সশস্ত্র সংগঠন এতটা সংঘটিত হওয়া এবং হামলার পরিকল্পনার ব্যাপারে আগে থেকে কোনো তথ্যই জানতে পারেনি ইসরাইল। অথচ গোয়েন্দা তথ্যের দিক দিয়ে ইসরাইলকে বিশ্বের সেরা হিসেবে ধরা হয়।


৬.
ইসরাইলি ভূখ-ে হামাসের সামরিক অভিযানের ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ^ নেতারা।ইসরায়েলের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে তিনি বলেছেন, ইসরইলের প্রশাসনকে সব ধরনের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে প্রস্তুত ওয়াশিংটন। বাইডেন তাকে জানিয়েছেন, নিজেদের নাগরিকদের সুরক্ষায় আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে ইসরাইলের। এবং যুক্তরাষ্ট্র তাদের পাশে থাকবে।
ইসরাইল নিয়ন্ত্রিত ভূখ-ে হামাসের রকেট হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রমোদি। তিনি বলেছেন, এ কঠিন সময়ে আমরা ইসরাইলের পাশে আছি। শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে মোদি এ কথা বলেন। মোদি লিখেছেন, ‘ইসরাইলে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার খবর শুনে গভীরভাবে মর্মাহত হয়েছি। নিরীহ ভুক্তভোগী ও তাঁদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করছি। এ কঠিন সময়ে আমরা ইসরাইলের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি, তাদের পাশে আছি।’ ইসরাইলে হামাসের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো, জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকসহ অনেকেই।
অন্য দিকে এই ঘটনার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার। উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। ইরানের সর্বোচ্চ নেতার উপদেষ্টা রহিম সাফাভি ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের অভিনন্দন জানাই। ফিলিস্তিন ও জেরুসালেম মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা তাদের পাশে আছি। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলেছে, হামাসের এই হামলা প্রমাণ করে ইসরাইলি দখলদারদের মোকাবেলায় ফিলিস্তিনিদের আত্মবিশ^াস বেড়েছে।
লেবাননের মিলিশিয়া গ্রুপ হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তারা হামাস নেতাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে। জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে পশ্চিম তীরের শহরগুলোতে অব্যাহত ইসরাইলি হামলার কারনে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গাজায় ইসরাইলি সামরিক অভিযান দ্রুত বন্ধ করার দাবি জানিয়ে আরব লিগের প্রধান আহমদ আবুল ঘেইত বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের অব্যাহত সহিংস ও উগ্রবাদী তৎপরতা অঞ্চলটির জন্য একট টাইম বোমা হয়ে উঠেছে, যা পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতার সুযোগ নষ্ট করছে।
সৌদি আরব, তুরস্ক, রাশিয়া উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায়করণীয় ঠিক করতে রবিবার জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। সংস্থাটির মহাসচিব গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিখ বলেছেন, ‘ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক হামলার নিন্দা জানিয়েছেন গুতেরেস। সংঘাত এড়াতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।’

ছবি : আনাদুলু এজেন্সি