দিনাজপুরে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

Logo

জেলা প্রতিনিধি | দিনাজপুর |  ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

দিনাজপুর সদর উপজেলার দাইনুর সীমান্তে চোরাই পথে শুটকি আনতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি এক তরুণ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরো দুই বাংলাদেশি শুটকি ব্যবসায়ী নিখোঁজ রয়েছেন।

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার সময় ৫ জন শুটকি ব্যবাসায়ী দাইনুর বিওপি ৩১৫ নম্বর মেইন পিলারের সীমান্তের কাছে গেলে গুলি চালায় বিএসএফ সদস্যরা। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান একজন।

নিহত মিনার (১৮) সদর উপজেলার ৯নং আস্করপুর ইউনিয়নের খানপুর ভিতর পাড়া এলাকার জাহাঙ্গীরের ছেলে। নিখোঁজ রয়েছেন একই ইউনিয়নের খানপুর এলাকার লতিফুলের ছেলে এমদাদুল (২৮) ও একই এলাকার সালমানের ছেলে সাগর (২০)।

দাইনুর বিপিওর নায়েক সুবেদার আক্তার হোসেন জানান, এ বিষয়ে বিএসএফের কাছে আমরা চিঠি পাঠিয়েছি। বিএসএফ চিঠির জবাব দিয়েছে। পতাকা বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে। নিহত মিনারের মরদেহ ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর তেলিয়াপাড়া এলাকায় রয়েছে।

বিএসএফের ব্যাখ্যা

সীমান্তে ঘটে যাওয়া বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছে বিএসএফ। তারা সীমান্তে যাওয়া ওই বাংলাদেশিদের ‘চোরাকারবারি’ বলে উল্লেখ করেছে।

তাদের দাবি, ৭ সেপ্টেম্বর বিএসএফ-এর একটি টহল দল বিওপি হরিহরপুর ১৭৪ ব্যাটালিয়ন রেজিমেন্টের এওআর-এ দায়িত্ব পালন করছিল। রাত ৯টা ৫ মিনিট নাগাদ সীমান্ত কাঁটাতারের কাছে ৯-১০ জনের মতো বাংলাদেশিকে কিছু চালান নেওয়ার জন্য আসতে দেখেন। টহল দলটি তাদের থামাতে গেলে ওই ব্যক্তিরা বিএসএফকে গালি এবং এক বিএসএফ জওয়ানকে ঘিরে ফেলার চেষ্টাও করে। ফলে তার সহকর্মী চোরাচালানকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে একটি স্টান গ্রেনেড ছোঁড়েন, কিন্তু চোরাকারবারিরা সেটাকে পাত্তা না দিয়ে আরও জোরালোভাবে ঘিরে ফেলে।

বিএসএফের দাবি, চোরাকারবারিদের ক্ষিপ্রতা দেখে একজন জওয়ান শূন্যে পিএজির এক রাউন্ড গুলি ছোঁড়েন, কিন্তু চোরাকারবারিরা প্রথম জওয়ানকে আরও দৃঢ়ভাবে ঘিরে ধরে। পরিস্থিতি শান্ত করতে তিনি পাচারকারীদের দিকে পিএজির আরও এক রাউন্ড গুলি চালান। একাধিকবার সতর্ক করা সত্ত্বেও চোরাকারবারিরা তা উপেক্ষা করে সেই সশস্ত্র জওয়ানকে আটকে রাখার চেষ্টা করে। রাইফেল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে সেই জওয়ান আত্মরক্ষার্থে গুলি চালান এবং গুলিটি সেই জওয়ানের রাইফেল ধরে থাকা চোরাকারবারিকে সরাসরি আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই এক পাচারকারীর মৃত্যু হয়।

‘গুলির শব্দ শুনে এবং সহযোগীকে গুলিবিদ্ধ হতে দেখে অন্য সব ‘চোরাকারবারি’ অন্ধকার পরিবেশ ও উঁচুনিচু ভূমির সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশের দিকে পালিয়ে যায়। আশপাশের এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে একটি তার কাটার যন্ত্র, একটি লোহার রড, কচ্ছপের চামড়াভর্তি ৩টি প্যাকেট, ৫০ বোতল ফেনসিডিল ও ২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পুরো এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’

এমদাদুল হক মিলন/এফএ/এএসএম