খাদ্য মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের বাজারে নিত্যপণ্যের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্যের আগাম বাণিজ্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ পর্যন্ত তা বহাল থাকবে।
সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি) ২০২১ সালে বছরব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্যের আগাম বাণিজ্য বন্ধের আদেশ দেয়। ২০০৩ সালে আগাম বাণিজ্যের অনুমোদন দেওয়ার পর ২০২১ সালে তা বন্ধের আদেশ দেওয়াকে নাটকীয় ঘটনা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
২০২১ সালে আগাম বাণিজ্য বন্ধের আদেশের মেয়াদ গত বছর বাড়ানো হয়। তখন ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল।
গতকাল শুক্রবার এক নোটিসে সেবি জানায়, ২০২৪ সালের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই আগাম বাণিজ্য স্থগিত থাকবে। যেসব পণ্যের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে, সেগুলো হলো সয়াবিন ও সয়াবিনজাত পণ্য, অপরিশোধিত পাম তেল, গম, ধান, হলুদ ভোজ্য মটরদানা, সবুজ ছোলা ও শর্ষে।
তবে ব্যবসায়ীরা এই সিদ্ধান্তে মোটেও খুশি নন। উদ্ভিজ্জ তেলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সানভিন গ্রুপের প্রধান নির্বাহী সন্দীপ বাজোরিয়া বলেছেন, ‘এই সিদ্ধান্ত খুবই দুর্ভাগ্যজনক’। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববাজারে যে অস্থিরতা চলছে, তাতে ভারতের উদ্ভিজ্জ তেলের আগাম বিক্রয় চুক্তি খুব জরুরি ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ভারত ভোজ্যতেলের চাহিদার দুই-তৃতীয়াংশ আমদানি করে মেটায়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ বাবদ ২০ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৮০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে তারা।
আগামী বছর সাধারণ নির্বাচন হবে ভারতে। তার আগে আগামী কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি রাজ্য নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদি সরকার বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। ফলে বাজারের একাংশের ধারণা ছিল, এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়তে পারে।
এর আগে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজ ও চাল রপ্তানিতে শুল্কারোপ করে। এরপর কৃষিপণ্যের আগাম বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়ে তারা আবারও জানান দিল, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কোনোভাবেই বাড়তে দেবে না তারা।
সন্দীপ বাজোরিয়া টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার নিত্যপণের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে আগাম বাণিজ্যকে যুক্ত করেছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ন্যাশনাল কমোডিটি অ্যান্ড ডেরিভেটিভ এক্সচেঞ্জ; এরপর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ।
প্রথম আলো