আইপিএলের নিলাম নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহ ছিল তীব্র। বাংলাদেশের ক্রিকেট মহলে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ ছিল নিলামে নাম দেওয়া এখানকার পাঁচ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, লিটন দাস, তাসকিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলামকে নিয়ে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ ছিল হয়তো দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিবকে নিয়ে। প্রথম দিনের পর দ্বিতীয় দিনেও সাকিবকে নিলামে তোলা হলেও তাঁকে কেনেনি কোনো দল।
মোস্তাফিজকে তাঁর ভিত্তিমূল্য ২ কোটি রুপিতে কিনে নিয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালস। বাংলাদেশের বাকি তিন ক্রিকেটারকে নিলামেই তোলা হয়নি।
আইপিএলের মেগা নিলামে বরাবরের মতোই প্রথমে তোলা হয়েছে এর আগের টুর্নামেন্টগুলোয় খেলা ক্রিকেটারদের। এরপর নিলামে তোলা হয় আইপিএলে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা খেলোয়াড়দের। এর মধ্যেও নানা ধরনের ভাগ ছিল। এ ক্ষেত্রে ভারতের জাতীয় দলে খেলা ক্রিকেটারকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
সব বিভাগ যখন শেষ হয়ে গেছে এবং তখনো ফ্র্যাঞ্চাইজি দলগুলোর স্কোয়াড পূর্ণ হয়নি, তখন বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকে জানতে চাওয়া হয় তাদের আগ্রহের খেলোয়াড়দের নাম। সব ফ্র্যাঞ্চাইজি দলে ভেড়াতে চাওয়া খেলোয়াড়দের নাম দেওয়ার পর তাদের নিয়ে আবার শুরু হয় নিলাম। দেখতে দেখতে নিলাম শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশের তিন ক্রিকেটারের নাম শোনা যায়নি। তার মানে লিটন, তাসকিন বা শরীফুলকে কেনায় কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিই আগ্রহ দেখায়নি।
দল গড়া নিয়ে প্রতিটি দলেরই আলাদা আলাদা পরিকল্পনা থাকে। দলকে কীভাবে খেলাবে, সেই কৌশলের ওপর ভিত্তি করেই স্কোয়াড বানায় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো, নিলামে তাদের খেলোয়াড় কেনায়ও সেই ছাপ থাকে স্পষ্ট। উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান লিটন বা পেসার তাসকিন ও শরীফুল হয়তো এবারের আইপিএলের ১০টি দলের কোনোটিরই পরিকল্পনা বা কৌশলের সঙ্গে মানানসই ছিলেন না।
এ ছাড়া নিলামে খেলোয়াড় কিনতে যাওয়ার আগে দলগুলো তালিকায় থাকা খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সও বিশ্লেষণ করে। বিপিএলের আগে কোন খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্স কী, এটা দেখেই খেলোয়াড় কেনে তারা। সেদিক দিকে লিটনের প্রতি দলগুলোর তেমন আগ্রহ না থাকারই কথা। ২০২১ সালের শুরু থেকে গত পরশু ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লিটন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচ খেলেছেন ১৬টি। ৯৫.৪১ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ২০৮ রান। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে ১০ ম্যাচে ১২৮.২৯ স্ট্রাইক রেটে তাঁর রান ছিল ২৬৮।
কিন্তু তাসকিন ও শরীফুল সাম্প্রতিক ভালোই বোলিং করেছেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১৪ ম্যাচে তাসকিন ১৪ ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়েছেন ৩৪ গড়ে। স্ট্রাইক রেট ২৬.৬ ও ইকোনমি ৭.৬৫। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে তাঁর পারফরম্যান্স এর চেয়েও ভালো। ১৭.৩৩ গড়ে ১১ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। স্ট্রাইক রেট ১৩.২৭ ও ইকোনমি ৭.৮৪।
শরীফুল আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১৭ ম্যাচে নিয়েছেন ২২ উইকেট, গড় ১৮.৪৫। ১৫ স্ট্রাইক রেট আর ৭.৩৮ ইকোনমিও ভালোই বলতে হবে। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে শরীফুল ২৫ ম্যাচে ৩৩ উইকেট নিয়েছেন ১৫.৬৪ স্ট্রাইক রেটে। গড় ২০.১৫ ও ইকোনমি ৭.৭৩। কিন্তু তাসকিন ও শরীফুলের এই পারফরম্যান্সও যথেষ্ট মনে হয়নি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর কাছে!