তিন দিন পর শনিবার সন্ধ্যায় জাকসুর চূড়ান্ত ফল ঘোষণা

বহুল প্রতীক্ষিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল অবশেষে আজ শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) অধ্যাপক মোনিরুজ্জামান।

ভোট গণনা চলছে

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ভোটগ্রহণ শেষে ৪২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও বারবার সময় পরিবর্তন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল।

আজ দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সিইসি বলেন, শুক্রবার রাতেই ফলাফল ঘোষণা করার চেষ্টা করেছিলাম। তবে এক সহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। পরে উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক শেষে পুনরায় গণনা শুরু হয়। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রার্থীদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে গণনা চলছে, এবং আজ সন্ধ্যা ৭টায় ফল ঘোষণা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, গণনার গতি বাড়াতে অতিরিক্ত জনবল যুক্ত করা হয়েছে। গণনার কাজে কমিশনের বাইরের কেউ যুক্ত নেই।
ভোটের ফলাফল ঘোষণায় দীর্ঘসূত্রতা এবং একাধিক প্যানেলের বর্জনের কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। তারা মনে করছেন, এ বিলম্ব নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

এদিকে, জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য-সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রশিদুল আলম বলেছেন, ৩৩ বছর পর জাকসুর ভোট হওয়ায় নির্বাচনের অভিজ্ঞতা না থাকায় প্রক্রিয়া দীর্ঘ হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রতিটি ভোট সতর্কভাবে যাচাই করা হচ্ছে। প্রতিটি ভোটই গুরুত্বপূর্ণ, তাই সময় লাগছে। তবে চূড়ান্ত ফলাফল সঠিক ও সুশৃঙ্খল হবে।

শনিবার সকাল পর্যন্ত ২১টি হলের মধ্যে ১৫টির ভোটগণনা শেষ হয়েছে বলে জানান নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক লুৎফুল এলাহী।
তিনি সকালে সাংবাদিকদের জানান, বাকি হলগুলোর গণনা দ্রুত শেষ হবে এবং দুপুর ১টা ৩০ মিনিট বা ২টার মধ্যে ফল ঘোষণা করা সম্ভব হতে পারে। তবে সেই সময়সীমা আবার পিছিয়ে দেওয়া হয়।

গতকাল (১২ সেপ্টেম্বর) রাত ৭টার মধ্যে হল সংসদের ভোটগণনা শেষ হলেও কেন্দ্রীয় সংসদের গণনা শুরু হয় তার পর। ফলে দেরি আরও বাড়ে।

বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ ও গণনা নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। প্রশাসনিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে ছাত্রদলসহ পাঁচটি প্যানেল ভোট বর্জন করে। শুক্রবার ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ অন্যান্য প্রার্থীরাও অভিযোগ তোলেন যে, ইচ্ছাকৃতভাবে ফল প্রকাশ বিলম্বিত করা হচ্ছে।

এই নির্বাচনে মোট ১১ হাজার ৭৪৩ জন শিক্ষার্থী ভোটার ছিলেন। ভোটার উপস্থিতি ছিল প্রায় ৬৭-৬৮ শতাংশ। আটটি পূর্ণ ও আংশিক প্যানেল নির্বাচন করেছে, যদিও কয়েকটি পরে প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ায়।

৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত এই জাকসু নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ছিল। তবে বিলম্ব ও অনিয়মের অভিযোগ নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here