এপ্রিলের শুরুতে নাজমুল হোসেন শান্তকে মজা করেই খালেদ মাহমুদ সুজন বলেছিলেন, ‘তোর জাতীয় দল থেকে আমার আবাহনী এখন শক্তিশালী!’ ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, এত এত তারকা নিয়ে দল গড়াটা এখন হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়িয়েছে আবাহনীর জন্য। আসন্ন জিম্বাবুয়ে সিরিজের দলে আবাহনীর ১০ ক্রিকেটার ডাক পেয়েছেন। তাই আজ শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ১১ জন মাঠে নামানোই কঠিন হয়ে পড়েছে আবাহনীর জন্য।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ৩ টি২০ ম্যাচের জন্য আবাহনীর ডাক পাওয়া খেলোয়াড়রা হলেন– নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন কুমার দাস, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি অনিক, আফিফ হোসেন ধ্রুব, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও তানভীর ইসলাম। তারা সবাই আবাহনীর সেরা একাদশের ক্রিকেটার। একে তো এই ১০ জন জাতীয় দলে চলে গেছেন, তার ওপর আবার দু’জন চোটে পড়েছেন। এর মধ্যে পেসার খালেদ আহমেদ চোটে পড়েছেন গত ২৫ এপ্রিল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ম্যাচে। ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় চোট পেয়েছেন আরও কিছু দিন আগে। যে কারণে পুরো মৌসুমে দুরন্ত দাপটে এগিয়ে চলা দলটি আচমকা বিপদে পড়ে গেছে। ব্যাটার বলতে এখন তাদের হাতে রয়েছেন নাঈম ইসলাম, এনামুল হক বিজয় এবং মোসাদ্দেক হোসেন। আর বোলিংয়ে পরিচিত মুখ কেবল তরুণ স্পিনার রকিবুল হাসান।
গত ১৩ ম্যাচের ১৩টিতেই জয় তুলে নেওয়া আবাহনী আজ জিতলেই শিরোপা পেয়ে যাবে। এখন শিরোপার চিন্তা বাদ দিয়ে কীভাবে শেখ জামালের বিপক্ষে ১১ জন নামাবেন, সেটা নিয়ে গলদঘর্ম আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন, ‘আমি আসলে জানি না কী করব। এমনিতেই ১০ জন নেই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলতে চট্টগ্রাম চলে গেছে তারা। তার ওপর জয় (মাহমুদুল হাসান) ও খালেদ ইনজুরিতে। কাল (আজ) কীভাবে ১১ জন নামাব, সেটাই ভেবে পাচ্ছি না।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ শুরু হবে ৩ মে। প্রথম ম্যাচের তিন দিন আগে জাতীয় দলের ক্যাম্প থেকে খেলোয়াড় চাওয়াও সম্ভব নয়। তার ওপর জিম্বাবুয়ে সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচ হচ্ছে চট্টগ্রামে। ক্যাম্পও চলছে সেখানে। তাই জাতীয় দলে ডাক পাওয়া ক্রিকেটাররা আজ প্রিমিয়ার লিগে থাকছেন না বলেই ধরে নেওয়া যায়। খালেদ মাহমুদের কথায়ও তেমন ইঙ্গিত মিলল, ‘জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা মঙ্গলবার প্রিমিয়ার লিগে খেলতে পারবেন কিনা, সেটা পুরোপুরি বোর্ডের এখতিয়ার। আমি এ ব্যাপারে কিছুই বলতে পারব না। আমি এই জায়গা, ওই জায়গা থেকে খেলোয়াড় এনে দল সাজানোর চেষ্টা করছি।’
শুধু আজ শেখ জামালের বিপক্ষেই নয়, মোহামেডান ও শাইনপুকুরের বিপক্ষেও এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে তাদের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ শেষ হবে ১২ মে। আর সুপার লিগে আবাহনীর শেষ ম্যাচ ৬ মে। অনেকটা অপারগ হয়েই বয়সভিত্তিক দলের কয়েকজন ক্রিকেটার খেলানোর কথা ভাবছে আবাহনীর টিম ম্যানেজমেন্ট।
কারণ, প্রথম বিভাগ থেকে কোনো ক্রিকেটারও নিতে পারবে না তারা। একই মৌসুমে কোনো ক্রিকেটারের পক্ষে প্রিমিয়ার লিগ ও প্রথম বিভাগ খেলা সম্ভব নয়। তাই বয়সভিত্তিক ক্রিকেটাররাই এখন আবাহনীর ভরসা। এই চক্করে প্রায় ঘরে চলে আসা শিরোপা না আবার হাতছাড়া হয়ে যায়!
samakal