অর্থ পাচার প্রতিরোধের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কর্মকর্তারা বলছেন, এমন চুক্তির জন্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে; বিশেষ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। কারণ, এখানে কর ফাঁকির বিষয়টি যুক্ত। অন্য দেশগুলো সেভাবেই তথ্য পাচ্ছে।
গত সোমবার অনাবাসী ভারতীয় ও দেশীয় সংস্থার প্রায় ৩৪ লাখ সুইস ব্যাংক হিসাবের তথ্য ভারত সরকারের হাতে তুলে দেয় সুইজারল্যান্ড। ওই হিসাবগুলো যেসব ভারতীয় নাগরিক ও সংস্থার নামে খোলা হয়েছে, তাঁরা ১০১টি দেশে ছড়িয়ে রয়েছেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। এ নিয়ে টানা চতুর্থ বছরে সুইস ব্যাংকে ভারতীয়দের ‘কালোটাকা’র খবর পেল ভারত।
এদিকে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নাগরিকদের জমা করা টাকার পরিমাণ এক বছরের ব্যবধানে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। গত জুনে প্রকাশিত সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২১ সালে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে এই অর্থের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, আমদানি-রপ্তানির পাশাপাশি হুন্ডির মাধ্যমেও অর্থ পাচার হচ্ছে। দেশের বাইরে তারকা হোটেল, বিলাস প্রাসাদসহ বিভিন্ন সম্পদ গড়া এখন অনেকের শখের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। যদিও বৈধ পথে অর্থ নিয়ে এমন বিনিয়োগের সুযোগ নেই।
এখন আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের আন্তর্জাতিক ফোরাম এগমন্ট গ্রুপের সদস্য হিসেবে বিএফআইইউ দেশটির এফআইইউ থেকে তথ্য নিতে পারে। এগমন্ট গ্রুপ হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (এফআইইউ) সমন্বয়ে গঠিত একটি আন্তর্জাতিক ফোরাম। বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডসহ বিশ্বের ১৬৬ দেশের এফআইইউ এগমন্ট গ্রুপের সদস্য।
জানতে চাইলে বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘সুইজারল্যান্ড থেকে তথ্য পেতে কোনো বাধা নেই। তবে ভারতের মতো দেশটির সঙ্গে আমাদের চুক্তি নেই।’