- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৩ জুলাই ২০২১
ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিনকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারে (কেরানীগঞ্জ) নেয়া হয়েছে।
শনিবার বিকেল ৪টার দিকে তাকে হাসপাতাল থেকে কারাগারে নেয়া হয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিএসএমএমইউ ছাড়পত্র দেয়ার পর সেখান থেকে রফিকুল আমীনকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। ‘অসুস্থতার কথা বলে’ প্রায় তিন মাস এই হাসপাতালের প্রিজন সেলে ছিলেন তিনি।
এর আগে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় একাধিকবার জুম মিটিং করেছেন আলোচিত ব্যবসায়ী ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন। ইন্টারনেট সংযোগসহ তাকে মোবাইল ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগে ১৭ জন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে চারজন কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বাকি ১৩ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। এ ছাড়া বিষয়টি তদন্ত করতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, সম্প্রতি বিএসএমএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন একাধিকবার জুম প্লাটফর্মে মিটিং করেন। কারাবন্দী হয়েও জুম মিটিংয়ে অংশ নেয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে নড়েচড়ে বসে কারা কর্তৃপক্ষ।
কারা অধিদফতরের একজন কর্মকর্তা জানান, কারাবন্দীদের মাঝে-মধ্যেই মোবাইল ফোন ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু হাসপাতালে বসে রীতিমতো ইন্টারনেট ব্যবহার করে জুম মিটিংয়ে অংশ নেয়ার বিষয়টিতে কারা কর্তৃপক্ষ বিব্রত হয়েছে। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মোমিন দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় কারা অধিদফতর থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে ঢাকা বিভাগীয় কারা উপমহাপরিদর্শক তৌহিদুল ইসলামকে। এ ছাড়া সদস্য সচিব হিসেবে নারায়ণগঞ্জের জেলার শাহ রফিকুল ইসলাম ও সদস্য হিসেবে মুন্সীগঞ্জের জেল সুপার নুরনবী ভূঁইয়া রয়েছেন। কমিটিকে সাত কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
কারা সূত্র জানায়, প্রাথমিক তদন্তে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে যেসব কারারক্ষী পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করতেন, তাদের মধ্যে ১৭ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কারা প্রশাসন। বাকি ১৩ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রাহকদের চার হাজার ১১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ডেসটিনির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর ২০১২ সালে গ্রেফতার হন এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার রফিকুল আমীন। গ্রেফতারের পর থেকেই তিনি কারাগারে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে করা দুইটি মামলা এখনো বিচারাধীন। ২০১৩ সালে আদালতের এক নির্দেশে ডেসটিনির নামে থাকা বিপুল সম্পদ জব্দ করে পুলিশকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয়।