ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আর নেই

  • নয়া দিগন্ত অনলাইন
  •  ১১ এপ্রিল ২০২৩, ২৩:৩৬, আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৩, ২৩:৫৪
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী – ফাইল ছবি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন।

মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাত ১১টা ১৫ মিনিটে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন।

গণস্বাস্থ্য ট্রাস্টের প্রধান অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার অধ্যাপক মাহমুদ মোস্তাফির বরাতে নয়া দিগন্তকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হানিফ।

একইসাথে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, কিছুক্ষণ পর গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল অথবা মেডিক্যাল বোর্ড খবরটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবে।

এদিকে, ৮১ বছর বয়সী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দীর্ঘদিন কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। কিছু দিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত রোগেও ভুগছিলেন। গত বুধবার তাকে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের রাউজানে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার শিক্ষক ছিলেন বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেন। পিতামাতার ১০ জন সন্তানের মধ্যে তিনি সবার বড়।

তিনি বকশীবাজারের নবকুমার স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট উত্তীর্ণের পর তিনি ১৯৬৪ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং ১৯৬৭ সালে বিলেতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস থেকে এফআরসিএস প্রাইমারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিলেতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়াকালীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি চূড়ান্ত পর্ব শেষ না-করে লন্ডন থেকে ভারতে ফিরে এসে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার নিমিত্তে আগরতলার মেলাঘরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন এবং এরপরে ডা. এম এ মবিনের সাথে মিলে সেখানেই ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট ‘বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল’ প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেন।

তিনি সেই স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেক নারীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যজ্ঞান দান করেন, যা দিয়ে তারা রোগীদের সেবা করতেন এবং তার এই অভূতপূর্ব সেবাপদ্ধতি পরে বিশ্ববিখ্যাত জার্নাল পেপার ‘ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত হয়।

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। এছাড়াও তিনি ফিলিপাইন থেকে রামন ম্যাগসাইসাই (১৯৮৫) এবং সুইডেন থেকে বিকল্প নোবেল হিসেবে পরিচিত রাইট লাভলিহুড (১৯৯২), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ইন্টারন্যাশনাল হেলথ হিরো’ (২০০২) এবং মানবতার সেবার জন্য কানাডা থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি পেয়েছেন। ২০২১ সালে আহমদ শরীফ স্মারক পুরস্কার পান।