- মোহাম্মদ আলী ঝিলন, গাজীপুর ১৪ মার্চ ২০২০
গাজীপুরে ট্রাফিক পুলিশের দু’সদস্যকে চড় মারার অভিযোগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এক নারী (সংরক্ষিত) কাউন্সিলরকে আটক করেছে পুলিশ।
মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় শনিবার দুপুরে অবৈধভাবে ইউটার্ন নেওয়াকে কেন্দ্র করে ওই ঘটনা ঘটে।
আটক রুহুন নেছা রুনা গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত নারী আসনের ৩১, ৩২ ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। এছাড়া তিনি গাজীপুর মহানগর যুব মহিলা লীগেরও আহ্বায়ক।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাজহারুল ইসলাম জানান, শনিবার দুপুরে কাউন্সিলর রুহুন নেছা রুনা নিজেই প্রাইভেটকার ড্রাইভিং করে চান্দনা চৌরাস্তা মোড় এলাকায় জাগ্রত-চৌরঙ্গীর ভাষ্কর্যের উত্তর পাশ দিয়ে ডানে ইউটার্ন করতে যান। কিন্তু এসময় ওই এলাকায় মহাসড়কে বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলার কারণে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা রশি বেঁধে রেশনিং পদ্ধতিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের গাড়ি চলতে দিচ্ছিল।
ট্রাফিক পুলিশের সিগন্যাল অমান্য করে কাউন্সিলর রুহুন নেছা রুনা ওই রশি ঠেলে দিয়ে তার কার ডানে ইউটার্ণ নেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময়ে সেখানে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল আশিকুর তাকে বাধা দিয়ে পরে যেতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়ি থেকে নেমে ওই নারী নিজেকে কাউন্সিলর পরিচয় দিয়ে পুলিশ কনস্টেবল আশিকুরের গালে চড় মারেন এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।
ঘটনটি দেখে অপর কনস্টেবল মো: হাসানুর সেখানে এগিয়ে গেলে তাকেও চড় মারেন তিনি। এসময় ট্রাফিক পুলিশের আরো সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কাউন্সিলর রুনাকে আটক করে সেখানে থাকা ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বসিয়ে রেখে বাসন থানা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে বাসন থানা পুলিশ দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
কাউন্সিলর রুহুন নেছা এ ব্যাপারে বলেন, তিনি প্রাইভেটকারযোগে একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা মোড় এলাকায় ডান দিকে ইউটার্ন করার সময় ট্রাফিক পুলিশ তাকে বাধা দেন। এসময় তিনি নিজের পরিচয় দিয়ে অনুরোধ জানালেও পুলিশ তাকে ওই পথে যেতে দেননি। পরে ঘুরে গিয়ে ওই পথের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি ওই স্থানে এলোমেলোভাবে অন্যান্য গাড়ি চলাচল করতে দেখতে পান। এ দৃশ্য দেখে কাউন্সিলর রুনা চৌরাস্তা মোড় এলাকায় (তাকে বাধা দেয়ার স্থানে) অন্য গাড়ি যেতে দেয়ার কারণ জানতে চাইলে পুলিশ তার সাথে দুর্ব্যবহার শুরু করেন। এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্য তার বুকের কাছে গিয়ে অশালীন আচরণ করেন। তখন তিনি নিজেকে রক্ষা করতে গিয়ে ওই পুলিশ কনস্টেবলকে চড় মারেন। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশের আরো সদস্য জড়ো হয়ে তাকে সেখান থেকে আটক করে বাসন থানায় নিয়ে যায়।
জিএমপি’র বাসন থানার ওসি একেএম কাউসার চৌধুরী রুনার সাথে পুলিশের অশালীন আচরণের কথা অস্বীকার করে সন্ধ্যায় বলেন, কাউন্সিলর রুনা নিজেই কর্তব্যরত পুলিশের গায়ে চড় মেরেছেন। এরপর তাকে আটক করে থানা হেফাজতে রাখা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা ও সরকারি কর্মচারীকে মারধর করার অপরাধে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।