জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিলেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ

দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়ার পর লোডশেডিং মোটামুটি বিদায় নিয়েছিল। শহরে বিদ্যুৎ–বিভ্রাট হতো না বললেই চলে। এখন সেই লোডশেডিং আবার ফিরেছে। রাজধানীসহ সারা দেশে কয়েক দিন দিনে কয়েকবার করে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে।

আজ বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী তাঁর অডিও বার্তায় বলেন, ‘আমাদের গ্যাস দিয়ে আমাদের ৬৪ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র চলে। আমাদের যে নিজস্ব প্রাকৃতিক গ্যাস আমরা দিন দিন বাড়াচ্ছি, আবার দিন দিন কমছেও। যে খনিগুলোর কাছ থেকে আমরা পাচ্ছি, সেটা খুব স্বল্প পরিমাণে। আমরা ১০ বছর আগে থেকে বলে আসছি যে ধীরে ধীরে গ্যাসের মজুত কিন্তু কমতে থাকবে।’

আজ নসরুল হামিদ তাঁর বক্তব্যে ইউক্রেন যুদ্ধসহ জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে বৈশ্বিক কারণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘খোলাবাজারে তেলের চাহিদা বেড়ে গেছে সারা বিশ্বে প্রচণ্ডভাবে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেল ও গ্যাসের দামে প্রচণ্ডভাবে ইফেক্ট পড়েছে। ইউরোপের অধিকাংশ দেশ রাশিয়া থেকে গ্যাস নেয়। সেখানে তারা বন্ধ করে দিচ্ছে বলেই এখন ইউরোপের সব দেশ এই গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। যে কারণে খোলাবাজারে যে গ্যাস ছিল ৪ ডলার, সেটা হয়ে গেছে ৩০ ডলার। সেটা কিনতে গিয়েই কিন্তু আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। অর্থ জোগান দিতে আমাদের প্রচণ্ডভাবে বেগ পেতে হচ্ছে।’

আরও পড়ুন

কোন এলাকায় কত সময় লোডশেডিং হবে, রুটিন করুন: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার যে অসুবিধায় পড়েছে প্রতিমন্ত্রীর কথায় তা স্পষ্ট। নসরুল হামিদ বলেন, ‘ সরকারের ভর্তুকি দিয়েও এই পরিমাণ অর্থের জোগান দেওয়া সম্ভব হবে না। এবং আমরা যদি মূল্যবৃদ্ধিই করতে থাকি, তাহলে সাধারণ জনগণের ওপর প্রচণ্ডভাবে চাপ সৃষ্টি হবে। আমি আগের থেকে বলে আসছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন কিছু করবেন না, যেটা সাধারণ জনগণের ওপর বোঝা হয়ে থাকে। যার কারণে আমরা গ্যাসের সামান্য পরিমাণ মূল্য সমন্বয় করেছি। এখনো আমরা তেলের ব্যাপারে করি নাই। আমি আশা করব যে সবাই এই বিষয় বুঝতে পারবেন এবং ধৈর্য্য ধরবেন।’

বর্তমান নাজুক জ্বালানি পরিস্থিতি সাময়িক বলেই মনে করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটা খুব সাময়িক, দীর্ঘকালের জন্য নয়। আমাদের প্রচুর পাওয়ার প্ল্যান্ট আছে। কিন্তু গ্যাসের সংকটের কারণে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছি।’

আরও পড়ুন

আপাতত লোডশেডিং থেকে মুক্তি নেই

কয়েক দিন ধরে দিনে কয়েকবার লোডশেডিং হচ্ছে খুলনা শহরের বিভিন্ন এলাকায়। গতকাল সকাল নয়টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত প্রায় এক ঘণ্টা করে চারবার বিদ্যুৎ ছিল না শহরের বাস্তুহারা এলাকায়। বিদ্যুৎ না থাকায় মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়ছে দুই শিশু। রাত নয়টায় শহরের বাস্তুহারা এলাকায়

গ্যাস ব্যবহারের ক্ষেত্রে শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। সার উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয় তার জন্যই এ ব্যবস্থা বলে জানান তিনি।

বক্তব্যের শেষে গ্যাস ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানান নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘গ্যাস ব্যবহারের ক্ষেত্রে যদি একটু মিতব্যয়ী হই, তাহলে আমরা নিশ্চয় এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারব। আমি মনে করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আপনারা ভরসা রাখেন, আওয়ামী লীগের ওপর ভরসা রাখেন, নিশ্চয় অল্প সময়ের মধ্যে আমরা এই বিপদমুক্ত হব।’

আরও পড়ুন

রাজধানীতেও ফিরেছে লোডশেডিং

রাজধানীতেও ফিরেছে লোডশেডিং