মুক্তাদির রশীদ
মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনোয়ার হোসেন সেখানকার জান্তা সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ ঠান শুয়ে’র সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বৈঠক করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) মিয়ানমারের রাজধানী নেই পে দাও- এ বৈঠক হয়েছে বলে জান্তা সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
এ বিষয়ে মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনোয়ার হোসেনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মিয়ানমারের তথ্য মন্ত্রণালয় আজ শুক্রবার (১৪ জুন) বলেছে, বৈঠকে তারা দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক মজবুত ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয় আলোচনা করেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা রক্ষায় চলমান পারস্পরিক সহযোগিতা এবং দু’দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়েও আলোচনা হয়।
উল্লেখ্য, এই আলোচনাটা এমন সময় হলো যখন রাখাইনে জান্তা সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে তুমুল সংঘর্ষে বাংলাদেশের ভুখন্ড টেকনাফ সীমান্ত থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত নৌ চলাচল প্রায় এক সপ্তাহের জন্য বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার অত্যন্ত বিপদজনক পথ পাড়ি দিয়ে সমুদ্রপথে সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে টেকনাফে চারটি ট্রলার আসার মধ্য দিয়ে নৌ চলাচল সাময়িকভাবে শুরু হয়।
স্থানীয় প্রশাসন বিপদজনক সমুদ্র পথে এ ধরনের চলাচল বন্ধ করে দেন এবং আজ জাহাজে করে সেন্টমার্টিন ও মূল ভূখণ্ড কক্সবাজারের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হয়।
এর আগে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের কারণে গত ৬ জুনের পর থেকে বাংলাদেশের নৌযান চলাচল বিঘ্ন ঘটে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশের সীমান্তে নৌযান আক্রান্ত হওয়ার পর কূটনৈতিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে এবং পরিস্থিতি উন্নয়ন হবে বলে তারা আশা করছেন।
টেকনাফের বাসিন্দা জাকারিয়া আলফাজ জানান, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে গত দু’দিনে বারবার মর্টার আর গোলাগুলির শব্দে আতঙ্ক বিরাজ করছিল। গত দু’দিন সেখানে জঙ্গি বিমানের হামলার শব্দও পাওয়া গেছে। দূরে দেখা গেছে মিয়ানমারের যুদ্ধ জাহাজ। সেই পরিস্থিতি শুক্রবারে কিছুটা উন্নতি হলেও রাত নাগাদ কি হবে তা বলা মুশকিল।
এদিকে, আরাকান আর্মির রাজনৈতিক শাখা ইউনাইটেড লীগ অব আরাকান-এর নেতা জন রুথ ( ছদ্মনাম) বলেন, ‘মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাদের আরাকান আর্মির যুদ্ধ অব্যাহত। যুদ্ধ চলাকালীন আমরা বাংলাদেশের জেলেদের অনুরোধ করবো নাফ নদী পরিহার করতে। বাংলাদেশের ক্ষতি করার কোনো উদ্দেশ্য আমাদের নেই। ’
তিনি দাবি করেন, আরাকান আর্মি প্রাণপণ যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। জঙ্গি বিমানের হামলার পরও তারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পুরো রাখাইন তাদের নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে তিনি মনে করেন। আর তখন বাংলাদেশের সীমান্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
অন্যদিকে, সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে, আরাকান আর্মি চীনের সঙ্গে রাখাইনে চীনের বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করছে।
banglaoutlook