ঢাকা
জনস্বার্থবিরোধী কিছু হলে মেরুদণ্ড শক্ত রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার
(সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল পদত্যাগ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
আজ বুধবার সিইসির সঙ্গে নির্বাচন ভবনে সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমার কাছে মনে হলো এখনো উনারা (সিইসি ও চার নির্বাচন কমিশনার) শুনতে চান। আউয়াল সাহেবের একটা গুণ হলো উনি তো জজ ছিলেন, অপর পক্ষের বক্তব্য শুনতে চান।’
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমি এখনো আশাবাদী যে আমি আশাহত হব না, উনি
নিশ্চয়ই সফল হবেন। শক্ত থাকবেন। আমি মনে করি, জনস্বার্থবিরোধী কিছু হলে
মেরুদণ্ড শক্ত রেখে উনি পদত্যাগ করবেন।’
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, কমিশন খুব কঠিন অবস্থার মধ্যে চলছে। সরকারের উচিত হবে কিছুটা ‘গিভ অ্যান্ড টেক’ করে সুষ্ঠু নির্বাচন করা। এটা করতে হলে আগ বাড়িয়ে
কথা বলা বন্ধ করতে হবে। আজকেও হানিফ (আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব উল আলম হানিফ) বলেছেন, ‘দেড় শটাতে নয়, তিন শ আসনেই ইভিএম চাই’। উনাদের জন্য ভালো হবে চুপ করে থাকা। এখন ইভিএমের কারণে যদি নির্বাচনটাই বন্ধ হয়ে যায়, ইলেকশনটা যদি বয়কট হয়, তাহলে এটা জাতির জন্য খুব দুর্ভাগ্যজনক হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘সবাইকে নির্বাচনে নেওয়া ইসির
মূল দায়িত্ব। ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত ভুল হয়েছে। এমন কিছু
করবেন না, যাতে নির্বাচনই না হয়। এ জন্য আমার প্রস্তাব হলো ১৫০টির
পরিবর্তে ৩০০ আসনের ৫টি করে কেন্দ্রে ব্যবহার করার।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপিসহ অন্য দল যদি ইভিএমের কারণে (নির্বাচন) বয়কট করে, দায়টা ইসির ঘাড়ে চাপবে। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। সরকার যেমন দায়ী হবে, ইসিও তেমনই দায়ী হবে। আমার কাছে মনে হয়েছে, উনারা যে শতভাগ একমত হয়েছেন তা না। উনারা সরকারের চাপে আছেন, উনারা ভাবছেন।’
জাফরুল্লাহ বলেন, ‘ইভিএম আরেকটা ভোটের চক্রান্ত। কেন দায়িত্বটা আপনি
নেবেন? সে জন্য বলেছি—উল্টা কাজ করতে পারেন কি না। দেড় শটাতেই না করে
তিন শটাতেই ৫টা করে কেন্দ্রে হবে। তাহলে আমরা দেখতে পারব, জানতে পারব।
আমাদের জন্য দরকার সুষ্ঠু নির্বাচন, শেখ হাসিনার জন্যও দরকার। গণতন্ত্র
না হলে দেশে যে কিছু ভুল সিদ্ধান্ত চলছে, এই ওষুধের দোকান রাত ১২টা
পর্যন্ত খোলা, এটা পাগলামি ছাড়া কী হতে পারে! এতে কয়টা বাতি জ্বলবে বা
ইয়ে…হবে।’
ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে জাফরউল্লাহ চৌধুরী রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের দাবি নিয়ে আজ আগারগাঁও নির্বাচন অফিসে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মুজিবুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম প্রমুখ।
প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ইসি বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী ইভিএম সমস্যাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। নির্বাচনে দলের নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়ানো ও শর্তাবলি শিথিলের একটি লিখিত আবেদন করেন।