গুম করা নেতাকর্মীদের ফেরত দেয়ার দাবী জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অবিলম্বে তাদেরকে পরিবারের কাছে ফেরত দিন। নতুবা জনগণের উত্তাল তরঙ্গে টিকে থাকতে পারবেন না।
তিনি জানান, উচ্চ আদালতে জামিন পাওয়ার পরেও সাদা পোশাকে পুলিশ বিএনপির পাঁচ নেতাকর্মীকে তুলে নিয়ে গেছে। তারা হলেন- লিয়ন হক, মামুন পারভেজ তন্ময়, তৌহিদুল ইসলাম হাসিব, ফেরদৌস মজুমদার মাসুম ও সেলিম মিয়া।
পাঁচ নেতাকর্মীকে অবিলম্বে পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অন্যথায় জনগণের যে উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি হবে, তাতে আপনারা টিকে থাকতে পারবেন না।’
শুক্রবার (২০ নভেম্বর) বিকালে উত্তরার বাসা থেকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘গত কিছুদিন আগে হাইকোর্টের গেট থেকে গোয়েন্দারা বেশ কয়েকজনকে তুলে নিয়ে যায়। এদের কয়েকজনকে আটক করে রাখা হয়। তার মধ্যে তিন জনকে চার-পাঁচ দিন আটক রাখার পর থানায় হস্থান্তর ও একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পাঁচ জন এখনও নিখোঁজ।’
ফখরুল বলেন, ‘একটি সভ্য দেশে হারিয়ে যাওয়া, গুম হয়ে যাওয়া চলতে পারে না। গুমের সংস্কৃতি দিয়ে সরকার টিকে থাকছে। একদলীয় সরকার ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে তারা এই গুমকর্ম করছে। ভীতি সৃষ্টির জন্যই গুম করা হয়। এ কারণে বাইরেও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের কাছে আহ্বান জানাবো, কোনও ব্যক্তি নিখোঁজ হলে তার দায়িত্ব সরকারের। হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বের হবার পর সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ধরে নিয়ে যাবে, এটা কোনও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হতে পারে না।’
নেতাকর্মীদের সন্ধানের দাবিতে সাংগঠনিক কোনও কর্মসূচি দেবে কিনা বিএনপি, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘করোনার কারণে স্বাভাবিকভাবে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে সেই ধরনের কর্মসূচি নিতে পারছি না। সুযোগ পেলে সেই আন্দোলনে অবশ্যই যাবো।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে করা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘তার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে উত্তর দেওয়াটা রাজনৈতিকভাবে সঠিক মনে হয় না। উনি কী বলতে চান, আমি বুঝতে পারি না। উনারা কী করছেন, বুঝতে পারছি না। গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন, মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে কী করবেন, তা বুঝতে পারছি না।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকার রক্ষার দায়িত্ব কেবল বিএনপির নয়, সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে নামতে হবে।’
ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খানসহ অনেকে অংশগ্রহণ করেন।