চীনের প্রেসিডেন্ট শিং জিং পিং ২ দিনের সফরে মিয়ানমার আসছেন
12 January 2020
সম্প্রতি চীনের প্রেসিডেন্ট শিং জিং পিং ২ দিনের সফরে মিয়ানমার আসছেন।যা মুলত ২ দশকের মধ্যে কোন চীনা প্রেসিডেন্টের প্রথম মিয়ানমার সফর হতে যাচ্ছে।এই কুটনৈতিক ভিজিটে মুলত রাখাইনে স্পেশাল ইকোনমিক জোন নির্মাণ,চীনের সাথে হাইড্রোপাওয়ার প্রজেক্ট,তেল পাইপ লাইন,সীমান্ত নিরাপত্তা উন্নয়ন সহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে MoU সম্পন্ন হবে।উল্লেখ্য রোহিঙ্গা সমস্যার উৎপত্তিই রাখাইনে।এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চাইলেই শুরু করা সম্ভব নয়।কারন,রাখাইনে এখন ও সরকার এবং বিরোধী গোষ্ঠীর মাঝে সংঘাত চলমান।চীনের উপস্থিতি এবং ইকোনমিক অঞ্চল রাখাইনের নিরাপত্তা উন্নত করলেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এখনই সম্ভব নয়।অধিকাংশ রোহিঙ্গা শরণার্থী এখনো মিয়ানমার যেতে আগ্রহী নয়।সে হিসেবে আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংঘঠন সমূহ এখনো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অথবা জোরপূর্বক রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরিত করনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।অত্যন্ত স্পর্শকাতর এ বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের জনমনেও রোহিঙ্গা শরনার্থীদের নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত রয়েছে।চীন এবং রাশিয়ার শক্তিশালী ব্যাক-আপ থাকলেও যুক্তরাজ্য,ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন,যুক্তরাষ্ট্র এখনো বাংলাদেশের পক্ষে রয়েছে।প্রয়োজনে বাংলাদেশের হয়ে সীমান্তে শক্তি প্রদর্শন,মহড়া,শক্তিশালী অস্ত্র দিতেও রাজি অনেকে।বাংলাদেশ কিছু না বললেও ইতিমধ্যে ন্যাটোভুক্ত দেশসমুহ থেকে সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করছে।তুর্কীর সাথে সম্পর্কন্নোয়ন,ইউরোপীয় দেশসমুহে লবিং,গাম্বিয়াকে দিয়ে মামলাকরন সহ নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চেষ্টা চালাচ্ছে।এটুকু মনে রাখতে হবে,মিয়ানমারের কৌশলগত অবস্থান,রিসোর্স এসব সম্ভাবনা বিবেচনায় চীন-রাশিয়ার কাছে মিয়ানমারের গুরুত্ব অপরিসীম।যদিও আমাদের দেশে চীনের ব্যাপক বিনিয়োগ রয়েছে।তবে ওয়ান বেল্ট ওয়াল রোড কিংবা সাউথ চায়না সমুদ্রে চীনের আধিপত্য বজায় রাখতে চীন স্বাভাবিকভাবে মিয়ানমারের সাথে সুসম্পর্ক চাইবে।মিয়ানমার নিজেও চীনের বেশ বড় অস্ত্রের বাজার।যদিও সময়ের সাথে সাথে বাংলাদেশ ও বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অস্ত্র আমদানীকারক হিসেবে আর্বিভুত হয়েছে।তাও,বাংলাদেশ এখনো চীনের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক বজায় রাখছে।রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের কাছে একটি ট্রাম্পকার্ড হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে।বিশ্বপরিমন্ডলে যুদ্ধ নৈমত্তিক বিষয়।এখনো বাংলাদেশ রোহিংগা সমস্যাকে কৌশলগত ভাবে মোকাবেলা করছে।প্রক্সি ওয়ার যে কখনো সুফল বয়ে আনেনা তার প্রমাণ লিবিয়া,ইরাক,আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান।তাই,ধীরেচিন্তে এমনভাবে সমস্যার সমাধান আবশ্যক যাতে শরণার্থীরা মিয়ানমার যাবার পর আর ফেরত না আসে।যদিও বিষয়টি জটিল,সময়সাপেক্ষ তবে অসম্ভব নয়।
#রোহিঙ্গা সমস্যার পর সময়ের প্রয়োজনেই বাংলাদেশের সমরাস্ত্র ক্রয়ের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।সম্প্রতি তুরস্ক নিজেই বাংলাদেশকে ড্রোন সিস্টেম সরবরাহের আগ্রহ জানিয়েছে।তুরস্ক চায় তার পুরাতন অটোম্যান সামাজ্রের ঐতিহ্য বজায় রাখতে।যদিও ইরান-সৌদির ডামাডোলে মধ্যপ্রাচ্যে তুরস্কের অবস্থান এখনো শক্ত নয়।এমন অবস্থায় দক্ষিণ এশিয়ায় তুরস্ক নিজেও মিত্রের সন্ধান করছে।তুরস্ক নিজেও শরণার্থী সমস্যায় জর্জরিত।বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিজেও তুরস্ক হতে মাল্টিপল রকেট লঞ্চিং প্লাটফর্ম সংগ্রহ করছে।এমতাবস্থায় তুরস্কের ড্রোন প্লাটফর্ম,এটাক হেলিকপ্টার,মিসাইল সিস্টেম ইত্যাদি সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হলে অবাক হওয়ার কিছু রইবেনা।
#চীন মিয়ানমারের বিনিয়োগ করলেও দক্ষিন কোরিয়ার বিশাল একটি বিনিয়োগ নানা সমস্যার দরুণ মিয়ানমার হতে বাংলাদেশে শিফট হয়ে আসছে।চীন কিভাবে রাখাইনে শান্তি বজায় রাখে এবং বিনিয়োগ সফল করে তাই এখন দেখার বিষয়।