চীনের কাছ থেকে খুব জটিল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি ভারত

Dhaka Post

ভারত-চীন সীমান্ত বিরোধ ইস্যুতে জয়শঙ্কর

Dhaka Post Desk

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৮ মে ২০২৩


চীনের কাছ থেকে খুব জটিল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি ভারত

ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (ফাইল ছবি)

চীনের কাছ থেকে ভারত খুব জটিল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। একইসঙ্গে সীমান্ত এলাকায় স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের জন্য একতরফাভাবে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়া ভারত নিশ্চিত করেছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

মূলত ভারত-চীন সীমান্ত বিরোধ ইস্যুতে এই মন্তব্য করলেন ভারতীয় এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রোববার (২৮ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম লাইভ মিন্ট।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ ইস্যুতে শনিবার কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘চীনের কাছ থেকে ভারত খুব জটিল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে এবং নরেন্দ্র মোদি সরকার একতরফাভাবে সীমান্ত এলাকায় স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের কোনও চেষ্টা না করা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে।’

ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, চীনের পক্ষ থেকে সৃষ্ট এই চ্যালেঞ্জ গত তিন বছরে সীমান্ত এলাকায় ‘খুব দৃশ্যমান’ ছিল বলে উল্লেখ করেছেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেছেন, উভয় দেশকে তাদের সম্পর্কের মধ্যে একটি ভারসাম্য খুঁজে বের করতে হবে। তবে এটি অন্য পক্ষের আরোপিত শর্তে ভিত্তিতে হতে পারে না।

আহমেদাবাদে অনন্ত ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ‘মোদি’স ইন্ডিয়া: এ রাইজিং পাওয়ার’ বিষয়ে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যদি দুই দেশের মধ্যে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বিঘ্নিত হয়, তাহলে তাদের সম্পর্ক অক্ষত থাকবে না।’

পূর্ব লাদাখে চীনের অনুপ্রবেশের কথা উল্লেখ করে জয়শঙ্কর বলেন, ‘বৃহৎ শক্তির কথা বললে, অবশ্যই চীনের কাছ থেকে আমাদের একটি বিশেষ চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জটি অত্যন্ত জটিল একটি চ্যালেঞ্জ। গত তিন বছরে এই চ্যালেঞ্জ সীমান্ত এলাকায় বিশেষভাবে দৃশ্যমান হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে স্পষ্টভাবে যেসব প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন সেগুলো সরকার গ্রহণ করেছে। এবং সীমান্ত এলাকায় একতরফাভাবে স্থিতাবস্থা পরিবর্তন করার কোনও চেষ্টা করা হবে না, এটি নিশ্চিত করার জন্যই সেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’

ভারতীয় এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, দুই দেশকে একরকম ভারসাম্য খুঁজে বের করতে হবে, এবং অতীতের সমস্ত সরকারও তাদের নিজস্ব উপায়ে এই ভারসাম্য খোঁজার চেষ্টা করেছে।

জয়শঙ্করের দাবি, ‘কিন্তু সেই ভারসাম্য অন্য পক্ষের শর্তের ভিত্তিতে হতে পারে না। তাহলে ভারসাম্য থাকে না। পারস্পরিক কিছু থাকতে হবে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সংবেদনশীলতা এবং আগ্রহ ও সম্পর্কের ভিত্তিতে এটি হতে হবে।’

ভারত যদি সম্মান, সংবেদনশীলতা এবং স্বীকৃতি দেখে, তাহলে চীনের সঙ্গে আরও ভালো সম্পর্কের কথা নয়াদিল্লি ভাবতে পারে উল্লেখ করে এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘আপনি যদি আমাকে সম্মান না করেন, আপনি যদি আমার উদ্বেগের প্রতি সংবেদনশীল না হন, যদি আপনি আমার আগ্রহকে উপেক্ষা করেন তবে আমরা কীভাবে দীর্ঘমেয়াদে একসাথে চলতে পারি?’

তার ভাষায়, ‘কিন্তু যদি তেমনটা না হয়, আমি মনে করি নিজেদের অধিকারের জন্য আমাদের দাঁড়ানো দরকার, এবং একইসঙ্গে আমাদের বিরোধী দলের মধ্যে দৃঢ় ঐক্য থাকতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত (সেটি না হওয়ায়) বর্তমানে এই পরিস্থিতি চলছে।’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অধীনে ভারত সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে জয়শঙ্কর প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক জোরদার করার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলো সবসময় ভারতের কাছাকাছি ছিল। এসব দেশ আজ আমাদের সাথে সড়ক, রেলপথ, নৌপথ এবং বিদ্যুৎ গ্রিড সংযোগের মাধ্যমে যুক্ত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদির অধীনে আমরা শুধু আগামীকালের কথা ভাবছি না, এমনকি আমরা পরবর্তী মেয়াদের কথাও ভাবছি না। আমরা সত্যিই এর বাইরেও আরও বেশি ভাবছি। এবং বিভিন্ন উপায়ে আমরা আজ বিশ্বব্যাপী আমাদের পদচিহ্নের ভিত্তি স্থাপন করছি।’

টিএম