- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০১ জুলাই ২০২০
হাসপাতালটির পরিচালক বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে এসব খবরকে ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যমূলক হিসাবে উল্লেখ করে তিনিও খরচের একটি তালিকা তুলে ধরেছেন। এক মাসের খাবারের বিল ২০কোটি টাকা-এ ধরণের শিরোনামে প্রকাশিত খবর নিয়ে আলোচনা জাতীয় সংসদেও উঠেছিল। বিরোধীদলের সংসদ সদস্যদের তোপের মুখে পড়িছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা তুলে ধরেছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন তাদের হিসাব যা তুলে ধরেছেন, তাতে বলা হয়েছে, “যে ২০কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, তা থাকা, খাওয়া এবং পরিবহন বাবদ দেয়া হয়েছে। হোটেল ভাড়া বাবদ ১২কোটি ৮০ লক্ষ টাকা, খাওয়া বাবদ পাঁচ কোটি ৫০লক্ষ টাকা এবং পরিবহন খরচ বাবদ এক কোটি ৭০ লক্ষ টাকা এই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বরাদ্দকৃত এই ২০ কোটি টাকা থেকে এখনও কোন বিল পরিশোধ করা হয়নি।”
তিনি আরও বলেছেন, “এই বিষয়ে যে সকল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে, তা একেবারে ভিত্তিহীন, মিথ্যা বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত।”
তবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনকারিরা পুরো ঘাটনাটি তদন্তের দাবি তুলেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে যেভাবে আলোচনা হচ্ছে, তাতে মহামারি মোকাবেলায় চিকিৎসকদের মনোবলেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলত পারে, সেজন্যও ঘটনার তদন্ত করা প্রয়োজন।
“মিডিয়ায় আমরা প্রথমে দেখেছি, ঢাকা মেডিকেলে ডাক্তারদের শুধু খাবারের খরচ এত। পরে দেখি শুধু খাওয়া নয়, থাকা, যাতায়াতসহ সব খরচ আছে। কেউ বলছে বেশি, আবার কেউ বলছে ঠিক আছে। আমরাও একটু কথা বলে বিষয়টা দেখার চেষ্টা করেছি। কোন কোন ডাক্তার বলেছেন, বিষয়য়টি নিয়ে আলোচনা দেখে তারা মর্মাহত হয়েছেন। আমার মনে হয়, বিষয়টি খতিয়ে দেখে কথা বলা উচিত।”
বিরোধীদলের সদস্যরা গত মঙ্গলবার যখন সংসদে বিষয়টি তুলেছিলেন, তার জবাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক খবরটি সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছিলেন।
তবে দু’দিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বলেছিলেন, এটি খতিয়ে দেখা হবে।
এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: আব্দুল মান্নান বলেছেন, বিলগুলো খতিয়ে দেখে তারপর তা পরিশোধের প্রশ্ন আসবে।
“এটা আমরা দেখছি এবং যতটুকু র্যাশনাল ওয়েতে দেখা যায়, এটা আমরা করছি। অর্থ মন্ত্রণারয় থেকে এরকম একটা নির্দেশনা আমাদের দেয়া হয়েছে, আমরা যেনো পেমেন্টের আগে আরেকবার যেনো দেখি। এখন বিল খতিয়ে দেখার এই প্রক্রিয়ায় আমরা আছি।”
তিনি আরও বলেছেন, “একইসাথে ভবিষ্যতে যাতে এই পথে বা এরকমভাবে না হয়,সেদিকেও আমরা যাচ্ছি। এবং অবিলম্বেই আমরা একটা সরকারি আদেশ জারি করবো।”
“সেটা হতে পারে এরকম যে এখন যেভাবে বিলগুলো সাবমিট করা হয়েছে, ঠিক এভাবে করা যাবে না। সরকারি কর্মচারীদের যে পদ্ধতিতে বিল দাবি করতে হয়, সেভাবেই তা করতে হবে। সরকারি কর্মচারীরা কোনো জায়গা সফর করলে তারা টিএ ডিএ পায়, সেই পদ্ধতিতে আমরা যাবো।”
কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় স্বাস্থ্যখাতে যে ব্যয় হবে, তাতে স্বচ্ছ্বতা আনার জন্য আরও কিছু কঠোর নিয়ম করা হচ্ছে। সূত্র : বিবিসি