today-is-a-good-day
Monday, May 6, 2024

চট্টগ্রাম-রাখাইন হতে যাচ্ছে আগামী দিনে এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভু-রাজনৈতিক অঞ্চল!

Myanmar - Arakan Kingdom

চট্টগ্রাম-রাখাইন হতে যাচ্ছে আগামী দিনে এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভু-রাজনৈতিক অঞ্চল!

এই মুহুর্তে চট্টগ্রাম বন্দরকে বাংলাদেশের লাইফ লাইন হিসেবে ধরা হয়। তার পাশাপাশি চট্টগ্রাম বাংলাদেশের বানিজ্যিক রাজধানী। এসব ছাড়াও আগামীতে বাংলাদেশের অর্থনীতির সূতিকাগার হবে চট্টগ্রাম।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল বংগবন্ধু ইকোনমিক জোন, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র,চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন সহ আরো অনেক মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে।

আগামীতে এই চট্টগ্রামই হবে দক্ষিণ এশিয়ার ২য় সিংগাপুর আর বাংলাদেশের ইকোনমির নিউক্লিয়াস! এর সাথে সমুদ্রের “ব্লু ইকোনমি” তো আছেই।

মিয়ানমারও কিন্তু পিছিয়ে নেই! চীন-জাপানের মত পরাশক্তি দেশগুলো মিয়ানমারে দরাজ হাতে বিনিয়োগ করে যাচ্ছে।

চীনের বানিজ্যের একটা বড় অংশ হয় মালাক্কা প্রণালীর মধ্যে দিয়ে,আর চীনের জ্বালানির একটা বিরাট অংশ এই মালাক্কা প্রণালী পার হয়েই মুল ভুখন্ডে পৌঁছে । আর মালাক্কা প্রণালীর দেশগুলোর সাথে চীনের সম্পর্কও বেশ তিক্ততার। তার উপর এই অঞ্চলে আমেরিকান নেভির উপস্থিতি চীনের জন্য বেশ বিব্রতকর! তাই চীন মালাক্কা প্রণালীর বিকল্প একটা রাস্তা খুজছিল। তারই অংশ হিসেবে পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দর ও চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোরের জন্ম!

পাকিস্তান ছাড়াও মিয়ানমার চীনের খুব ঘনিষ্ঠ মিত্র। চীন যে মিয়ানমারের কতটা ঘনিষ্ঠ, তা আমরা রোহিঙ্গা ইস্যুতে টের পেয়ে যাই। চীন পাকিস্তানের মত মিয়ানমারের সাথেও চীন-মায়ানমার ইকোনমিক করিডোরের বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে।

চীন মালাক্কায় আমেরিকা আর তার বলয়ের দেশগুলোর দ্বারা কখনো আক্রান্ত হলে পাকিস্তান আর মায়ানমার দিয়ে নিজের সরবরাহ ব্যাবস্থা বজায় রাখতে পারবে।

এই ইকোনমিক করিডোরের আওতায় চীন থেকে গোলযোগপূর্ণ রাখাইন রাজ্যে গার্মেন্টস আর নিন্ম মজুরির শিল্প কারখানা স্থানান্তরিত হতে যাচ্ছে। আর মিয়ানমারের রাখাইন থেকে চীনের কুনমিং পর্যন্ত তেল-গ্যাসের পাইপ লাইন টানা হবে। যার ফলে চীনকে আর মালাক্কা প্রণালীর উপর নির্ভর করতে হবে না।

অনেকেই মনে করেন চীনের এই করিডোরের বলির পাঠা করা হয় রোহিঙ্গাদের, যার দায়ভার এককভাবে বাংলাদেশকে বহন করতে হচ্ছে।

উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে আগামী দিনে মায়ানমার আর বাংলাদেশের লাইফ লাইন পূর্বোল্লিখত রাখাইন আর চট্টগ্রাম হতে যাচ্ছে।

এই দুই অঞ্চলের মাঝে একটা বড় মিল আছে। তা হচ্ছে এই দুই অঞ্চলই “হেভিলি মিলিটারিলাইজড” জোন। মায়ানমার সীমান্ত ঘেষা কক্সবাজারের রামুতে আমাদের একটি পুর্ণ ডিভিশন সহ বেশ কয়েকটি ব্রিগেড মোতায়েন আছে। এছাড়াও চট্টগ্রামে ১ টি পূর্ণাঙ্গ ডিভিশন ও ৭ টি ব্রিগেড রয়েছে। এই দুই ডিভিশনকে সাপোর্ট দিতে রয়েছে কুমিল্লার ৩৩ পদাতিক ডিভিশন ও আরো ৬ টি ব্রিগেড। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে মিয়ানমার সীমান্তে বড় ধরনের সেনা সমাবেশ করতে পারবে। এছাড়াও মিয়ানমার সীমান্তের খুব কাছে আমাদের ২টি পূর্ণাঙ্গ বিমানঘাঁটি তো রয়েছেই!

মিয়ানমারও পিছিয়ে নেই। রাখাইন একটা যুদ্ধ প্রবন, বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় এই অঞ্চলে মিয়ানমারের ৩২ টি পদাতিক ব্যাটালিয়ন মোতায়েন রয়েছে। আমাদের সবচেয়ে স্বস্তির জায়গা হচ্ছে বাংলাদেশে আক্রমণ চালানোর মত কোন বিমানঘাঁটি এই মুহুর্তে মিয়ানমারের হাতে নেই!

বাংলাদেশের ইতোমধ্যে ফোর্সেস গোল-২০৩০ চলমান। তার আওতায় উচ্চ প্রযুক্তির ফাইটার,যুদ্ধজাহাজ ক্রয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমাদের উচিত হবে দ্রুত এই গোল বাস্তবায়ন করে সামরিক সক্ষমতা বাড়ানো।

সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি, আমাদের আরো আগ্রাসী পররাষ্ট্র নীতি গ্রহন করতে হবে, আমেরিকা ঘেষা পশ্চিমা মুখী কুটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ হলেও,আমাদের মনে রাখতে হবে যে, মিয়ানমার সেনা শাসিত দেশ। তারা যেকোনো সময় যেকোন দেশ আক্রমণ করতে কুন্ঠাবোধ করবে না।