- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ৩০ জানুয়ারি ২০২৩, ২০:২৩
গত ২৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানী থেকে বাসা ফেরার পথে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে মাওলানা রাফঈকে আটক করে সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু তাকে তুলে নিয়ে গোপন স্থানে ছয় দিন নির্মম নির্যাতন করে আদালতে তোলা ও জামিন না দেয়া মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বনানী থানার জামায়াতের কর্মী মাওলানা আব্দুর রাফঈকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে নির্মম নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বনানী থানার কর্মী মাওলানা আব্দুর রাফঈকে ডিবি পরিচয়ে প্রকাশে তুলে নিয়ে যাওয়া হলেও রাফঈর পরিবার বনানী ও হাতিরঝিল থানায় যোগাযোগ করলেও তার কোনো সন্ধান দেননি বিগত ছয় দিনে।
তিনি আরো বলেন, তার পরিবার নিখোঁজের বিষয়ে বনানী, হাতিরঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলেও তা গ্রহণ করা হয়নি। কিংবা তার সন্ধান দিতে সহযোগিতা করা হয়নি। রাষ্ট্রদ্রোহী বা বেআইনী কোনো কাজে কখনো জড়িত না থাকা সত্ত্বেও হাতিরঝিল থানার একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো পরিকল্পিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র ফুটে উঠেছে। যা স্বাধীন দেশের যেকোন নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনকে আরো উসকে দিবে।
বিবৃতিতে সেলিম উদ্দিন বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলকে দমন করতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পথকে বেঁচে নিয়েছেন। শুধু মাওলানা রাফঈকে নয়, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে পুরো রাজধানীতে বিভিন্ন বাসা-অফিস থেকে অর্ধ সহস্রাধিক জামায়াত কর্মীকে আটক করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের অনেককে পাঁচ থেকে সাত দিন গুম রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। কারো কারো বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দিয়ে আদালতে তোলা হয়েছে। চলতি জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত তিন দিনে কাফরুল থানা আমির অধ্যাপক আনোয়ারুল করিম, পল্লবী পূর্ব থানা আমির আবুল কালাম পাঠান, ভাসানটেক থানা আমির ডা.আহসান হাবিবসহ ১২ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। এরমধ্যে একজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয় এবং তড়িঘড়ি করে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তাকে আদালতেও তোলা সম্ভব হয়নি। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার প্রয়োগের দাবি জানিয়ে বলেন, সরকার রাজধানীর মালিবাগে ৩০ ডিসেম্বরের গণমিছিলে বাধা ও গ্রেফতার, মহাখালী, মিরপুর-১০-এর মিছিল, বাসা-অফিস থেকে গ্রেফতারসহ জামায়াতের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধাদান ও গ্রেফতার করে অন্যায় করছে। দেশের সুষ্ঠু রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সকল দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধাদান, গ্রেফতার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
সেলিম উদ্দিন, রাফঈ-এর তিনটি শিশু সন্তান এবং তার সন্তান সম্ভবা স্ত্রীর বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত মুক্তি এবং নির্যাতনে অসুস্থ রাফঈ-এর সুচিকিৎসার ব্যবস্থার দাবি জানান।