গিলের ডাবল সেঞ্চুরিতে ভারতের জয়

  • নয়া দিগন্ত অনলাইন
  •  ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ২২:৫৯
গিলের ডাবল সেঞ্চুরিতে ভারতের জয়। – ছবি : সংগৃহীত

শুভমান গিলের ১৪৯ বলে ২০৮ রানের ইনিংসের জয় পেয়েছে ভারত। ফার্গুসনকে টানা তিন বলে তিন ছক্কা হাঁকিয়ে লাফিয়ে উঠলেন শুভমান গিল। খুলে ফেললেন হেলমেট, উঁচু করে ধরলেন ব্যাট; মুখে চওড়া হাসি, চারদিক থেকে প্রতিধ্বনি তুলে ভেসে আসছে করতালি। অবশ্য এমনটাই হবার কথা ছিল, সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে দ্বি-শতক হাঁকিয়ে যে কীর্তি গড়েছেন শুভমান; তা অনেকের কাছেই স্বপ্নসম। তার এমন কীর্তির দিনে জয় পেয়েছে তার দলও। নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে ১২ রানে।

সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আজ (১৮ জানুয়ারি) হায়দ্রাবাদে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয় ভারত। টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুভমান গিলের ১৪৯ বলে ২০৮ রানের ইনিংসের ৮ উইকেটে ৩৪৯ রানের সংগ্রহ পায় ভারত। জবাবে দারুণ লড়াই করলেও শেষ পর্যন্ত ৩৩৭ রানেই থামে কিউইদের দৌঁড়। বৃথা যায় ব্রেসওয়েলের ৭৮ বলে ১৪০ রানের ঝড়ো ইনিংস।

আজ শুভমান গিলকে সাথে নিয়ে দলকে ভালো একটা শুরু এনে দেন রোহিত শর্মা। তবে দলীয় ৬০ রানের মাথায় ৩৪ রান করে বিদায় নেন রোহিত শর্মা। দ্রুত ফিরেন বিরাট কোহলিও, মাত্র ৮ রান করেই সাজঘরের পথ ধরেন ভারতীয় ক্রিকেটের এই পোস্টারবয়। ব্যর্থ হন ইশান কিশানও, সর্বশেষ ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানো এই ব্যাটসম্যান আজ আউট হন মাত্র ৫ রান করে। তবে ভারতের স্কোরকার্ড সচল রাখেন শুভমান। পঞ্চম উইকেট জুটিতে সূর্য কুমার যাদবের সাথে গড়ে তুলেন ৬৫ রানের জুটি। ৩১ রান করে সূর্য কুমার ফিরলে ভাঙে এই জুটি।

এবার হার্দিক পান্ডিয়ার সাথে ৭৪ রানের জুটি গড়েন শুভমান, তবে ৩৯.৪ তম ওভারে ২৮ রান করে আউট হন হার্দিক পান্ডিয়া। ততক্ষণে অবশ্য শতক ছুঁয়ে ফেলেছেন শুভমান, ৮৭ বলে তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছান তিনি। এদিকে হার্দিক ফিরলে গিল যোগ্য সঙ্গ পাননি আর কারো থেকে। ওয়াশিংটন সুন্দর ১২ ও শার্দুল ঠাকুর আউট হন ৩ রান করে। কেদার যাদব অপরাজিত ছিলেন ৫ রানে।

সঙ্গীরা কেউ বড় রান না পেলেও ব্যাট থেমে থাকেনি শুভমানের। ওয়াশিংটনের সাথে ৪৩ রানের জুটির ২৯, শার্দুল ঠাকুরের সাথে ১০ রানের জুটির ৭ ও কেদার যাদবের সাথে ১৭ বলে ৪৩ রানের জুটিতে ১২ বলে ৩৯ রানই আসে গিলের ব্যাটে। এরই মাঝে ১৪৫ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতকটাও, যা তাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এনে দেয় সর্বকনিষ্ঠ ডাবল সেঞ্চুরিয়ানের উপাধি। শেষ ওভারে আউট হবার আগে গিল খেলেন ১৪৯ বলে ১৯ চার আর ৯ ছক্কায় ২০৮ রানের ইনিংস।

৩৫০ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে ২৮.৩ ওভারে মাত্র ১৩১ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড। ফিন এলের ব্যাটে ৪০ রান আসলেও ডেভন কনওয়ে ১০, হেনরি নিকোলস ১৮, ডেরিয়েল মিচেল ৯, টম লাথাম ২৪ ও গ্লেন ফিলিপস করেন ১১ রান। ফলে শেষ ১২৮ বলে নিউজিল্যান্ডের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২১৯ রান, হাতে মাত্র ৪ উইকেট।

তবে সেখান থেকেই শুরু হয় ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। যেই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন ৭ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা ব্রেসওয়েল। দলের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন শেষ ওভারে আউট হোন ব্রেসওয়েল, তখন ৪ বলে নিউজিল্যান্ডের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ১২ রান! অর্থাৎ এই সময়ে ১১৪ বলে ২০৭ রান যোগ হয় কিউইদের স্কোরবোর্ডে।

প্রথমে সপ্তম উইকেট জুটিতে মিচেল সান্টনারকে নিয়ে ১১১ বলে ১৬২ রান সংগ্রহ করেন ব্রেসওয়েল। ৪৫ বলে ৫৭ রান করে সান্টনার আউট হলে ভাঙে এ জুটি। কোনো রান না করেই ফিরেন হেনরি শিপলি। জোড়া উইকেটও ধাক্কা দিতে পারেনি ব্রেসওয়েলের আগ্রাসনে। এবার লুকি ফার্গুনসনকে নিয়ে ১৭ বলে ৩৪ রানের জুটি গড়েন তিনি। আর শেষে টিকনারের সাথে মিলে করেন ৯ রান।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২০ রান, হাতে ছিল একটি মাত্র উইকেটই। শার্দুল ঠাকুরের প্রথম ২ বলে ৭ রান নিতে পারলেও তৃতীয় বকে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন ব্রেসওয়েল। সেই সাথে শেষ হয়ে যায় নিউজিল্যান্ডের জয়ের স্বপ্ন। ১২ রানে হেরে যায় কিউইরা।