গণহত্যা চালিয়েছিল শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকার, উল্টা মামলা দিয়ে আটক করা হয়েছিল আলেমদের

 আমার দেশ
৫ মে ২০২৩
৫ মে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে গণহত্যা

৫ মে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে গণহত্যা

নিজস্ব প্রতিনিধি

রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে গণহত্যা চালিয়েছিল আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকারের পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি। সঙ্গে ছিল অস্ত্র হাতে আওয়ামী সন্ত্রাসী গুণ্ডারা। কিন্তু পরবর্তীতে উল্টো মামলা দায়ের করা হয় সেই রাতের মজলুম হেফাজতে ইসলামের নিরীহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। সারা দেশে ২০৩টি মামলা সাজিয়েছিল ফ্যাসিবাদ সহায়ক পুলিশ। এই মামলা গুলো দিয়েই শেখ হাসিনা হেফাজতে ইসলামকে ঘায়েল করার অপচেষ্টা চালায়। শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ অনেকটা সফলও হয়েছে এতে। হেফাজতে ইসলামের লোভী একটি অংশকে নানা উপঢৌকন দিয়ে এবং যাদেরকে উপঢৌকনে সামাল দেওয়া সম্ভব হয়নি, তাদেরকে মামলা দিয়ে ঘায়েল করেছেন শেখ হাসিনা।

তদন্তাধীন মামলার মধ্যে এসআই শাহজাহান হত্যা ও ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন দিয়ে পুলিশের এক সদস্য হত্যাচেষ্টার সাজানো একটি মামলা রয়েছে। এসআই শাহজাহান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার এক আসামিকে নির্যাতন চালিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়েছে। সাজানো সেই স্বীকারোক্তিতে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের নাম এসেছে।

২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে শাহবাগে আওয়ামী লীগ ও ভারতের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় গড়ে উঠে কথিত গণজাগরণ মঞ্চ। জাতীয় সার্বভৌমত্ব বিরোধী এ মঞ্চ থেকেই দেশের ৯০শতাংশ মানুষের ধর্মীয় সংস্কৃতির বিরুদ্ধে প্রচারণা চলানো হয়েছিল। ইসলাম বিদ্বেষী ও জাতীয় সংস্কৃতি বিরোধী নানা শ্লোগানে যখন শাহবাগ ভারতপন্থীদের পদচারনায় মুখরিত এবং এক শ্রেণীর জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকরাও যখন এতে বিভ্রান্ত তখন মাঠে নামে হেফাজতে ইসলাম। কথিত গণজাগরণ মঞ্চের ইসলাম বিদ্বেষী কর্মসূচির বিরুদ্ধে ১৩ দফা দাবী নিয়ে মাঠে। নেমেছিল এই সংগঠনটি। ওই বছরের ৬ এপ্রিল তারা ঢাকামুখী লংমার্চ কর্মসূচি দেয়। সেখান থেকেই সরকারকে এক মাস সময় দিয়ে ৫ই মে ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচির দিনেই বিকালে মতিঝিল শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয় হেফাজতের নেতাকর্মীসহ হাজারো দেশপ্রেমিক মানুষ। এই কর্মসূচিতে আসার পথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী লীগের গুণ্ডারা বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালায়। ২০১৩ সালের ৫ই মে গভীর রাতে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের দোসর পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি (সাবেক বিডিআর) যৌথভাবে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে। মধ্যরাতের অন্ধকারে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যায় মেতে উঠেছিল ফ্যাসিবাদী আওয়ামী মাফিয়া সরকার। এই গণহত্যায় যৌথবাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী গুণ্ডা বাহিনীও যোগ দিয়েছিল অস্ত্র হাতে।

সেদিন নারায়ণগঞ্জ, বাগেরহাট, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ সাত জেলায় হেফাজতের কর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল সন্ত্রাসী আওয়ামী গুণ্ডা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ফ্যাসিবাদ অনুগতরা।

মধ্যরাতের গণহত্যা ছাড়াও দিনভর বিভিন্ন জেলায় হেফাজতের ওপর গুলি চালিয়ে ১৯ জনকে হত্যা করা হয়েছিল।

পরবর্তীতে এসব ঘটনায় ঢাকাসহ সাতটি জেলায় ৫৩টি মামলা হয়। সাজানো ৫৩টি মামলার মধ্যে ৪৯টি ঝুলে আছে।

পরবর্তীতে হেফাজতের সিনিয়র নেতাদের বিভিন্ন সময় গ্রেফতার করে এসব মামলায় শ্যোন এরেস্ট দেখানো হয়। এখনো শেখ হাসিনার কারাগারে অনেক আলেম বন্দি আছেন এসব মামলায়।