খায়রুজ্জামানকে দেশে ফেরত পাঠাতে মালয়েশিয়ার আদালতে স্থগিতাদেশ

Daily Nayadiganta (নয়া দিগন্ত) : Most Popular Bangla Newspaper


সাবেক রাষ্ট্রদূত এম খায়রুজ্জামানকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে, নাকি মালয়েশিয়ায় থাকবেন এই বিষয়টি নিয়ে ধোয়াশা সৃষ্টি হয়েছিল। বিষয়টি সর্বশেষ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালত খায়রুজ্জামানকে ঢাকায় ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে মোহাম্মদ খায়রুজ্জামানের হেবিয়াস কর্পাস আবেদনে মামলা পরিচালনার সময় বিচারক মোহাম্মদ জাইনি মাজলান এই স্থগিতাদেশ দেন। আদালত খায়রুজ্জামানকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর উপর সাময়িক স্থগিতাদেশ দিয়ে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারী পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন।

বাংলাদেশ সরকার তাকে ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিলেও বাধা হয়ে দাড়িয়েছে জাতিসঙ্ঘের শরনার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশ সরকার এম খায়রুজ্জামানের পাসপোর্ট বাতিল করার পর শরনার্থী হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে। তাই তাকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে পারে না। কারণ এতে তার জীবন বিপন্ন হওয়ার শঙ্কা আছে।

খায়রুজ্জামানের স্ত্রী রিতা রহমান আইনি লড়াই করেছেন তাকে মালয়েশিয়ায় রাখতে। তিনি আজ দেশটির সংবাদ মাধ্যমে বলেন, তার স্বামীকে বাংলাদেশে পাঠালে তাকে মেরে ফেলা হবে। কারণ সে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তাছাড়া সে একজন রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থী এবং তার বৈধ শরনার্থী কার্ড রয়েছে।

খায়রুজ্জামানের আইনজীবী বলেন, আমরা আদালতে আবেদন করেছি এম খায়রুজ্জামানকে হাজির করা সহ তাকে নিজ দেশে ফেরতের প্রক্রিয়া স্থগিত করে তাকে মুক্তি দিতে।

খায়রুজ্জামানকে গ্রেফতারের খবর আসার পর বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানান, অভিবাসন আইন ভাঙায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তার নিজ দেশের অনুরোধেই খায়রুজ্জামানকে আটক করা হয়েছে।

১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে মালয়েশিয়ায় শরণার্থী হিসেবে বসবাস করে আসছেন সাবেক মেজর এম খায়রুজ্জামান। তার বিরুদ্ধে ১৯৭৫ সালে কারাগারে চার জাতীয় নেতাকে জেল হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে হাই কমিশনার করে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয় তাকে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তাকে দেশে ফেরার নির্দেশ দেয়। কিন্তু প্রাণের ভয়ে তিনি কুয়ালালামপুর থেকে জাতিসঙ্ঘের শরণার্থী কার্ড নিয়ে সেখানেই থেকে যান।

সরকার খায়রুজ্জামানকে দ্রুত দেশে আনার পর তাকে জেল হত্যা মামলায় পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের ইঙ্গিত দিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।