দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সাকিব আল হাসানের যাওয়া–না যাওয়া নিয়ে এখনো জল গড়াচ্ছে। রোববার দুবাইগামী বিমানে ওঠার আগে সাকিব জানিয়েছেন তাঁর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে অনাগ্রহের কথা।
কাল তার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেছেন, এভাবে চললে তাঁরা এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবেন, যা পছন্দ হবে না ক্রিকেটারদের।
আজ প্রায় একই রকম প্রতিক্রিয়া জানালেন বিসিবি পরিচালক ও জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদও, ‘সাকিব যেহেতু আইপিএলে খেলছে না, সাকিবের কাজটা কী? দল পেলে তো আইপিএলেই খেলতে যেত!’
দুবাইগামী বিমানে ওঠার আগে সাকিব বলেছেন, এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মতো মানসিক ও শারীরিক অবস্থায় নেই তিনি, ‘আমার মনে হয় না, এমন মানসিকতা নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ খেলাটা ঠিক হবে।’ সঙ্গে যোগ করেছিলেন, ‘…এমন হতে পারে যে ওয়ানডেটা না খেলে টেস্ট সিরিজটা খেলতে পারি।’
সাকিবের এ রকম ইচ্ছা প্রকাশে খালেদ মাহমুদকে একটু বিরক্তই মনে হচ্ছে, ‘আমরা জিজ্ঞেস করেছি, আইপিএল যেহেতু খেলছ না, টেস্ট খেলবে কি খেলবে না। সে বলেছে, হ্যাঁ। তারা চুক্তির খেলোয়াড়। বেতন নেওয়া খেলোয়াড়। এমন তো নয়, নতুন একজন খেলোয়াড় যে চুক্তিতে নেই। চুক্তির বাইরের খেলোয়াড়কে আমরা অনুরোধ করতে পারি। কিন্তু ও তো আমাদের চুক্তিতে আছে। ও আমাদের কর্মী। এখানে অনুরোধের কিছু নেই। পাপন ভাই (নাজমুল হাসান) তো তা–ও ভালো, অনুরোধ করে বলতে গেলেন। তিনি আদেশ করতে পারেন যে তোমাকে খেলতে হবে, কারণ তুমি চুক্তিতে আছ।’
মাহমুদের তবু আশা, সাকিব শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা যাবেন।
এর আগে গত বছর জিম্বাবুয়ে সফরে হুট করে টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন মাহমুদউল্লাহ। তামিম ইকবালও অনেক দিন টি-টোয়েন্টি খেলছেন না। সিনিয়র ক্রিকেটারদের এ রকম আচরণে বিরক্ত মাহমুদ এখন বিকল্প উপায় খোঁজারই পক্ষে, ‘এখনই যথার্থ সময়। বারবার এমন হতে পারে না যে চাইলাম খেললাম না, চাইলাম খেললাম। শুধু সাকিবকে না, ওদের সবাইকে ছাড়াই খেলার কথা ভাবতে হবে।’
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘এখন ফুলস্টপের সময় এসেছে। অনেক হয়েছে। সে এটা বলতে পারে না আমি এখন খেলব, এখন খেলব না। ব্রেক নিলে ফুল ব্রেক নাও। পাপন ভাইও হয়তো এটাই বলতে চান। হয়তো উনি একটু আস্তে বলেছেন, আমি জোরে বললাম। ওরা বিসিবির প্রোডাক্ট। বিসিবির জন্যই ওরা। তাদের পেছনে তো বিসিবি অনেক খরচ করেছে।’
সিনিয়র খেলোয়াড়দের বার্তা দেওয়াটা এখানেই শেষ করেননি খালেদ মাহমুদ, ‘কারও জন্য বাংলাদেশ দল বসে থাকবে না। আপনাদের এভাবে ভাবাটাও ছাড়তে হবে। একটা সময় বাংলাদেশকে এদের ছাড়াই খেলতে হবে। দুই-তিন বছর পর হয়তো ওরা কেউ খেলবে না। তাই বলে তো বাংলাদেশের ক্রিকেট বন্ধ হয়ে যাবে না। নতুন ছেলেরা উঠে আসছে, ভালো করছে, আমরা তাদের গড়ে তুলব, এটাই স্বাভাবিক। আমরা তো এখন সাকিবকে ছাড়াই দল করছি। তার জায়গায় যে ছেলে সুযোগ পাবে, ওর জন্য এটা বড় সুযোগ।’