ক্ষমতা হারানোর ভয়ে থাকা শেখ হাসিনা চিন্তিত বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসলে কী হবে সেটা নিয়ে

 আমার দেশ
২৩ জুন ২০২৩

শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরে

শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরে

নিজস্ব প্রতিনিধি

ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আছেন শেখ হাসিনা। তাই তিনি চিন্তিত বিএনপি ও জামায়াত ক্ষমতায় আসলে কি হবে সেটা নিয়ে। প্রতিটি বক্তব্যে বিএনপি-জামায়াত নিয়ে বিষোদগারের পাশাপাশি দেশ ধ্বংসের বয়ান দিচ্ছেন। গত ১৪ বছরের বেশি সময় ক্ষমতা আঁকড়ে রাখা শেখ হাসিনা নিজ দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আবারো বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে দেশ ধ্বংস করবে। এর আগেও তিনি একই বক্তব্য দিচ্ছেন গত কয়েকদিন থেকে। যদিও তিনি নিজেই দেশকে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে গেছেন।

২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। দলটির ৭৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে আওয়ামী লীগের শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।

ক্ষমতা হারানোর ভয়ে থাকা শেখ হাসিনা তাঁর উন্নয়নের বয়ান দিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলে এ দেশ আরও উন্নত-সমৃদ্ধ হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট অর্থনীতি গড়ে উঠবে এবং দেশ এগিয়ে যাবে। কিন্তু যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, বিএনপি-জামায়াতসহ যারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করে না, তারা এ দেশ ধ্বংস করবে।

এদেশে একমাত্র আওয়ামী লীগই জনগণের কল্যাণের কথা চিন্তা করে এমন দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ মর্যাদা পেয়েছে। যেখানে একটি দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশ হিসেবে আমাদেরকে করুণার চোখে দেখা হতো, আজ বাংলাদেশ থেকে প্রবাসে যেই যাক, সেখানে সম্মানের চোখে দেখে। এ সম্মান এনে দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়, আজ তা প্রমাণিত সত্য।

ফ্যাসিবাদী এই প্রধানমন্ত্রী অতীতের নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ২০০৮ এর নির্বাচনে জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছিল, আমরা সরকার গঠন করেছি। ২০১৪ সালে জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে পুনরায় ক্ষমতায় আনে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ নৌকায় মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের আবার দায়িত্ব দেয়।

নিজেদের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩, বাংলাদেশে দারিদ্রের হার ছিল ৪১ ভাগ, তা নেমে এসেছে ১৮ ভাগে। অতিদরিদ্র ২৫ ভাগের ওপরে ছিল, তা ৫ ভাগে নেমে এসেছে। সাক্ষরতার হার বেড়েছে, মাতৃমৃত্যু হার কমেছে, শিশুমৃত্যু হার কমেছে, মানুষের আয়ু বেড়েছে, বাংলাদেশ অবকাঠামোগত উন্নয়নে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে আজ সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আওয়ামী লীগ যদি সরকারে থাকে, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আপনাদের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা দিয়েছে, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছে, শিক্ষার আলো জ্বেলেছে সব ঘরে। স্বাস্থ্যসেবা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছে, তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত। আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি, সমগ্র বাংলাদেশে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড কানেকশন দিয়েছি। কৃষি, বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকে এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এদেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছে, বিজয় অর্জন করেছে মুক্তিযুদ্ধে।

শীর্ষ নেতাদের নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানান তিনি। এরপর আওয়ামী লীগ প্রধান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন ও পায়রা অবমুক্ত করেন।