কোন ইউনিয়ন, দেশ বিবৃতি দিল তাতে কিছু যায় আসে না: কাদের

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কোন ইউনিয়ন, কোন দেশ বিবৃতি দিল তাতে কিছু আসে যায় না। আমার দেশের আইনে, আমার দেশের অপরাধীকে আমি বিচার করতে পারব না, এটা কোন গণতন্ত্র? কোথা থেকে এল এ আদেশ? মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার বিবৃতির দিকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আদালত আছে, সে নিরাপদ হলে আদালত থেকে মুক্তি নেবে। আমাদের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা আছে।

বিএনপি’র উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা নাকি আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করবে? তারা (বিএনপি) নিজেরাই যথেষ্ট নিজেদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য। এখানে আওয়ামী লীগকে লাগবে না। কর্মসূচি কোথায় তাদের? কাল রাত্রে আবাসিক প্রতিনিধি ঘোষণা দিল যে, কর্মসূচি হবে না। এটাও বলল, জিয়াউর রহমানের মাজারে যাওয়া হবে না। এ দলের কী করা উচিত? আওয়ামী লীগের এখনও ভয় দেখানোর সময় আসে নাই, সবে শুরু হয়েছে। আমারও তো শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়েছি। এতেই ৭ নভেম্বর বন্ধ হয়ে গেছে। ঢাকা শহরে কয়েকটা মিছিল হচ্ছে দেখে ভয়ে নিজেদের কর্মসূচি বাতিল করে দিয়েছেন। এরা কোন দল? এরা আন্দোলন করতে পারবে? এদের আন্দোলন ভুয়া।

তিনি বলেছেন, ৭ই নভেম্বরের কর্মসূচি স্থগিতের মধ্য দিয়ে বিএনপির আন্দোলনের সাহস দেখা হয়ে গেলো। তাদের মতো ভীতু কাপুরুষ হয়? এই কাপুরুষদের রাজনীতি করা মানায়?

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ৭ই নভেম্বর আওয়ামী লীগ ঘোষিত ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’র আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, এদিন আমরা মুক্তিযোদ্ধা হত্যার দিন পালন করি, ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ রক্তাক্ত কলঙ্কজনক দিনগুলোর একটি ৭ই নভেম্বর। এদিন সিপাহি জনতার অভ্যুত্থানের নামে কর্নেল তাহের ক্যান্টনমেন্টে বন্দি জিয়াউর রহমানকে উদ্ধার করেন। ফলাফলে জিয়া কর্নেল তাহেরকে হত্যা করেন। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান রাতের খাবার খেতে খেতে ফাঁসির আদেশ দিতেন। জিয়াউর রহমানের উত্তরসূরিরা আজ কোথায়? তারা হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্র করে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে চেপে বসেছে। জিয়ার উত্তরসূরিরা আজও বাংলাদেশে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বহন করে চলেছে। বাংলাদেশের রাজনীতিকে তারা কলুষিত করেছে। খালেদা-তারেক আগুন সন্ত্রাসের সূচনা করেছে। তারা সারাদেশে রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়েছিল। এখন কোথায় তারা? তাদের বাড়াবাড়ি কই গেলো?

২৮শে অক্টোবরের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশের সঙ্গে মারামারি বাধিয়ে, একজন পুলিশকে নির্মমভাবে হত্যা করে, পুলিশের ওপর হামলা করে…, সেই সময় মির্জা ফখরুল ভাবলেন, আরে ঘটনা তো খারাপ। তখনই মির্জা ফখরুল সাহেব লাফ দিয়ে নিচে নেমে গেলেন। এদিকে তাকান, ওদিকে তাকান, গয়েশ্বর বাবু নাই। ওদিকে তাকান, আমীর খসরু নাই। গেটের ভেতর যত নেতা, নোমান সাহেবও নাই। বেচারা দিশেহারা হয়ে দৌঁড় যে দিছে, ডেমরার সালাউদ্দিনের দৌঁড়ের চেয়েও দ্রুত। ‘হ্যান্ড মাইকে কর্মসূচি ঘোষণা করলেন, তখন পুরো স্টেজ ফাঁকা। ২৮ তারিখ শেখ হাসিনার পতন দেখলেন, আর আপনাদের স্টেজেরই পতন হয়ে গেল।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি নিজেই বলেছেন যে, আমি খেয়াল রাখব। অপরাধী ছাড়া কোনো নিরীহ লোক যাতে ধরা না পড়ে। এতে বদনাম হয়। এ বদনাম আমরা ঘাড়ে নেব কেন? অপরাধী যারা তাদের শায়েস্তা করতে হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।

মানব জমিন