কেন্দ্রে না যেতে বাড়ি বাড়ি যাবে সিলেট বিএনপি’র কর্মীরা

জাতীয়  নির্বাচনে অংশ না নিয়ে একই ভাবে প্রচারণা চালিয়েছিলেন সিলেট বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। ভোটে অনাগ্রহ বাড়াতে তারা চালিয়েছিলেন এ প্রচারণা। করেছেন লিফলেট বিতরণ। এবারো একই কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছেন বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। তবে; এবার টার্গেট হচ্ছে বাড়ি বাড়ি যাওয়া। বিএনপি’র কেন্দ্রীয় তরফ থেকে যে লিফলেট দেয়া হয়েছে সেটি তারা ভোটারের ঘরে ঘরে পৌঁছাবেন। এতে করে সাফল্য আসবে বলে জানিয়েছেন  নেতারা। সিলেট জেলায় প্রথম ধাপে চারটি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে বিশ্বনাথ উপজেলা ছাড়া আর কোথাও বিএনপি’র কোনো নেতাকর্মী নির্বাচনে প্রার্থী হননি। ফলে নির্বাচন নিয়ে পুরোপুরি নীরবই রয়েছে বিএনপি।

   সিলেট বিএনপি’র শীর্ষ নেতাদের দাবি; বিএনপি’র যেসব নেতাকর্মী উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন যারা নির্বাচনে রয়েছেন তাদের সঙ্গে বিএনপি’র কোনো সম্পর্ক নেই। বিএনপি’র জেলা উপজেলার নেতাকর্মীরা এখন প্রতিটি উপজেলায় নজরদারি করছেন। আর নজরদারির মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে- নির্বাচনে প্রার্থীদের পক্ষে কোনো নেতাকর্মী প্রচারণায় নামেন কি না। সে দৃশ্য এখনো নেতাদের চোখে পড়েনি। কিংবা প্রচারণা চালানোর মতো কোনো অভিযোগ আসেনি। নেতারা জানিয়েছেন- এবারের উপজেলা নির্বাচনে জনগণের তেমন সম্পৃক্ততা নেই। সেটি ভোটের মাঠ পর্যবেক্ষণ করলেই দৃশ্যমান হয়। সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ভোটে তেমন আগ্রহ নেই। ভোটের পরিবেশও নেই। এ কারণে মানুষের মধ্যে দিন দিন আগ্রহ কমে আসছে। এই অবস্থায় আজ থেকে সিলেট বিএনপি ভিন্নধর্মী এক অভিযানে নামছে।
এই অভিযানের অংশ হিসেবে তারা প্রতিটি উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিএনপি’র  কেন্দ্রীয় তরফ থেকে দেয়া লিফলেট বিতরণ শুরু করবেন। সিলেটের চারটি উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে সে চারটি উপজেলায় ঘরে ঘরে এ লিফলেট বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন নেতারা। সিলেট জেলার সদর, দক্ষিণ সুরমা, বিশ্বনাথ ও গোলাপগঞ্জে প্রথম ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে সদরে দু’জন নির্দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। আর বাকি সব প্রার্থী আওয়ামী লীগ দলীয়। সদর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আবুল কাশেম গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন- সদরে উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে কি না, সেটি বেশির ভাগ মানুষই জানে না। এই ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে কোনো আগ্রহ নেই। চায়ের আড্ডা নেই। কোনো আমেজ নেই। তিনি বলেন- মানুষের মধ্যে এমনিতেই ভোট নিয়ে অনাগ্রহ।
এই অবস্থায় আমরাও লিফলেট নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাবো। আমাদের ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা লিফলেট বিতরণের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছেন। এদিকে- দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও স্ল্লোগানে যে লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে সেখানে বলা হচ্ছে; জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতাকর্মীরা ‘নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির একদফার চলমান আন্দোলন’ অগ্রগামী করতে পিছপা হননি। এজন্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সহ সকল স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জন করতে আহ্বান জানানো হয়। সিলেট  জেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন- সিলেট জেলার সব উপজেলায়ই জেলার নেতারা যাবেন। আজ সিলেট সদর উপজেলার সোনাতলা ও দক্ষিণ সুরমার জালালপুর এলাকায় লিফলেট বিতরণ করা হবে। এ সময় পথসভা অনুষ্ঠিত হবে। অন্য একদিন তারা প্রথমধাপে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বনাথ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলায় যাবেন।
তিনি বলেন- জাতীয় নির্বাচনেও সিলেট বিএনপি একই ভাবে প্রচারণা চালিয়েছেন। এতে জনগণের সাড়া মিলেছে। এ নির্বাচনেও জনগণ সাড়া দেবে। সিলেটের মানুষ প্রতিবাদ হিসেবে এবারের উপজেলা নির্বাচন বর্জন করবে বলে জানান তিনি। জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন- সিলেট বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা এ নির্বাচনের সঙ্গে নেই। প্রতিবাদস্বরূপ ভোটের মাঠ প্রস্তুত থাকার পর  নেতাকর্মীরা প্রার্থী হননি। তিনি বলেন- এ সরকারের অধীনে নির্বাচনগুলো  হাসি-ঠাট্টার নির্বাচনে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষও ভোট নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না। ভোটের উপর আস্থা ও বিশ্বাস মানুষ অনেক আগেই হারিয়ে ফেলেছে বলে জানান তিনি।
manabzamin