কেএনএফ নিয়ে ২ মন্ত্রীর ভিন্ন বক্তব্য

কেএনএফ নিয়ে ২ মন্ত্রীর ভিন্ন বক্তব্য

বান্দরবানের থানচি ও রুমায় ব্যাংকে দুর্ধর্ষ ডাকাতি ও থানায় হামলার পর কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে। এর মধ্যেই নতুন করে আলোচনার জন্ম দিলেন সরকারের ২ মন্ত্রী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দাবি করেন, কেএনএফ পাশের দেশের সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে অস্ত্র সহায়তা পেয়েছে। তবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলছেন, কেএনএফ বিদেশি কারও থেকে মদদ পাচ্ছে বলে মনে করেন না তিনি।

শনিবার দুই ভিন্ন অনুষ্ঠানে তারা এ দাবি করেন।

সকালে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প-২ (এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক) এর আওতায় নির্মিত পাঁচটি ফ্লাইওভার যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা করেন সেতুমন্ত্রী।

এ সময় তিনি বলেন, কেএনএফ কোনো ক্ষোভ বা দাবি-দাওয়ার বিষয়ে সংক্ষুব্ধ হয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে পারে। এর কারণ জানা যাবে শিগগির। সীমান্ত থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদী কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন থেকে মদদ দেওয়া হবে, এটা আমরা মনে করি না। জোর তদন্ত চলছে, সবই বেরিয়ে আসবে।

তিনি বলেন, পাহাড়ে যৌথ অভিযান চলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। গোটা পাহাড় অশান্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

একই দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজি পুকুর পাড়ে ওয়াইএনটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ দাবি করেন, কেএনএফ পার্শ্ববর্তী দেশের সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে ব্যাংক লুট, ডাকাতিসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কেএনএফ-এর সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আশেপাশের সন্ত্রাসীদের যোগাযোগ রয়েছে। পাশ্ববর্তী দেশে যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছিল, তাদের অস্ত্রশস্ত্র এদের কাছে এসেছে বলে জানা গেছে।

তিনি বলেন, তাদের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যাংক ম্যানেজারকে মুক্ত করা হয়েছে। তাদের নির্মূল করতে সরকার বদ্ধপরিকর।

এদিকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর দাবি, বিএনপি কেএনএফের সঙ্গে মিলে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্টের ষড়যন্ত্র করছে।

শনিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ঈদ সামগ্রী বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

মোকতাদির চৌধুরী বলেন, বিএনপি নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফের সঙ্গে মিলে দেশের স্থিতিশীলতা নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র করছে। দেশে বর্তমানে দ্রব্যমূল্যসহ সব দিক দিয়ে স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। এটা নস্যাৎ করার জন্য কেএনএফ সদস্যদের হায়ার (ভাড়া) করে এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে বান্দরবানের রুমায় উপজেলা প্রশাসন কমপ্লেক্স ভবনে হামলা চালিয়ে সোনালী ব্যাংক থেকে অস্ত্র ও টাকা লুট করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এ সময় তারা ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ২ দিন অভিযানের পর র‍্যাবের মধ্যস্থতায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর রুমা বাজারের পাশের এলাকা থেকে নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করা হয়।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে, কেএনএফ তাদের অস্ত্রের মজুত বাড়িয়েছে। শক্তি বৃদ্ধি করেছে তাদের সশস্ত্র শাখার।

কেএনএফ কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে ধারাবাহিকভাবে হামলা করছে। আগের তুলনায় ৩-৪ গুণ সদস্য বাড়িয়ে এখন আরও দুর্ধর্ষ কেএনএফ। তাদের সক্রিয় নারী সদস্যরা ব্যাংক ডাকাতি ও থানচি থানা হামলায় সরাসরি অংশ নেয়। সংগঠনটির সশস্ত্র শাখাকে চিহ্নিত করার জন্য একাধিক টিম গঠন করেছে পুলিশ। তবে গতকাল পর্যন্ত কেএনএফের কেউ আটক হয়নি।

samakal