শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের মামলায় জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করতে রোববার সকাল ১০টায় ঢাকার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে যাবেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গত ২৮ জানুয়ারি শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের মামলায় ছয় মাসের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের আপিল শুননির জন্য গ্রহণ করেন আদালত। পাশাপাশি ড. ইউনূসসহ চারজনকে ৩ মার্চ পর্যন্ত জামিন দেন আদালত। একই সাথে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতের দেওয়া রায়ের কার্যকারিতাও স্থগিত করেন আদালত।
শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের সদস্য জেলা ও দায়রা জজ এম এ আউয়ালের আদালত এ আদেশ দেন।
অন্যদিকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতে অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায়ও রোববার ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে যাবেন তিনি। রোববার বেলা ১২টায় তিনি এ আদালতে যাবেন বলে তার আইনজীবী জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস জামিনের মেয়াদ বর্ধিত করতে রোববার সকাল ১০টায় শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আসবেন। তিনি আরও বলেন, শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে প্রথমে এ মামলার নথিপত্র অসবে। এরপর শুনানির জন্য তারিখ দেওয়া হবে। তখন আমরা সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি করব।
তিনি বলেন, রোববার বেলা ১২টায় ড. ইউনূস ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে যাবেন সেখানে তিনি জামিন আবেদন করবেন।
মামলার বিবরনে ড. ইউনুসের আইনজীবী ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, দুদকের মামলার উৎপত্তি হয়েছে গ্রামীন টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন কর্তৃক হাইকোর্ট ডিভিশনে দায়ের করা কোম্পানি ম্যাটার মামলা নং ২৭১/২০ থেকে। মামলায় সিবিএ নেতাদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল । হাইকোর্ট সিবিএ নেতাদের আবেদন গ্রহন করে গ্রামীন টেলিকমের অবলুপ্তির উদ্দেশ্য provisional liquidator নিয়োগের জন্য কালের কন্ঠ ও অবজারভার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ প্রদান করেন। এই আদেশের ফলে গ্রামীন টিলিকম ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে কোম্পানি আইনের ২৮ ধারা অনুযায়ী নট ফর প্রফিট কোম্পানি হওয়া সত্ত্বেও কোম্পানি রক্ষার স্বার্থে আপোষ করে একটি সমঝোতা চুক্তি করে। ২০২২ সালের ২৩ মে মামলাটি হাইকোর্ট নিস্পত্তি করেন।
এর আগে সিবিএ নেতারা ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে তাদের দায়ের করা শিল্পবিরোধ মামলা নং ১৬৬৬/২০১৯ গোপন করে হাইকোর্টে কোম্পানি আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে গ্রামীন টেলিকম কর্তৃক শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নসহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের wffp এর সকল অর্থ স্বনামে চেকের মাধ্যমে ৪০৯ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়। এই প্রদেয় অর্থ থেকে সিবিএ কর্মচারীদের দায়ের করা ১০৭ টি মোকাদ্দমাসহ কোম্পানি ম্যাটার নং ২৭১/২০২১ মোকদ্দমায় আইনজীবীদের ফিস ও মামলার খরচের জন্য তাদের প্রাপ্ত অর্থ হতে তারা ২৬ কোটি টাকা অগ্রিম অর্থ প্রদানের আবেদন করেন। শ্রমিক কর্মচারীদের হতে অঙ্গীকার নামা গ্রহ করে এই অর্থ প্রদান করা হয়। দুদক এই অর্থ প্রদানকে তাদের দৃষ্টিতে অর্থ আত্নসাতের সামিল এবং দুদক তদন্ত করে আদালতে অভিযোগ পত্র প্রদান করে। আদালত আগামিকাল ৩ মার্চ তারিখ নির্ধারন করে।
ড. ইউনুসের আইনজীবী সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, শ্রম আইনে ২৩৪ (১) (ক) ধারা মোতাবেক বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান তহবিলে মুনাফার ৫ শতাংশ এর ১০ শতাংশ অর্থ ৩৮, ৩৯, ৪৯. ৭৭০/- টাকার চেক প্রস্তুত করে জমা দানের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়কে ইমেইল এর মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়ে চেক হস্তান্তরের জন্য অনেকবার অনুরোধ করা হলেও কালক্ষেপন করে মন্ত্রনালয়ের পক্ষ হতে কোনো উত্তর দেয়া হয়নি।