Kalerkantho
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ব্যবসায়ীরা চান স্বল্প আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণ (এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন) যেন আরো তিন বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়। সরকারের পক্ষ থেকে যেন জাতিসংঘকে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়, সে জন্য বিএনপিকে ভূমিকা রাখার আহবান জানান ব্যবসায়ীরা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠকে দেশের ব্যবসায়ী নেতারা এ আহবান জানান।
গতকাল রবিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিকেল ৫টা থেকে দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠক হয়।
বৈঠকে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান (বাবু), মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান, সাবেক সভাপতি তপন চৌধুরী ও নাসিম মনজুর, এফবিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, প্রাণ গ্রুপের প্রধান আহসান খান চৌধুরী, বিকেএমইএর সভাপতি এম এ হাতেম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, বিজেএমইএর মহাসচিব রশিদ আহমেদ হোসাইনী, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ প্রমুখ।
বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এস এম ফজলুল হক।
বৈঠক শেষে আমীর খসরু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা এখানে এসেছেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে শুধু বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা না, যাঁরা বিদেশি বিনিয়োগকারী আছেন, ভবিষ্যতে যাঁরা বিনিয়োগ করতে চাচ্ছেন, তাঁদের সবাই নির্বাচনের অপেক্ষায় আছেন। একেবারে পরিষ্কার ভাষায় বলছেন, তাঁদের সব সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছেন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত। নির্বাচনের পর তাঁদের যে বিনিয়োগের বিষয়টা, বাংলাদেশের ব্যবসায়ী এবং বিদেশিরা সবাই অপেক্ষা করছেন। নির্বাচনের পর তাঁরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে অনেকেই উৎসাহী । সবাই অপেক্ষা করছেন নির্বাচনের জন্য। বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান (বাবু) সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যাঁরা শিল্প পরিচালনার দায়িত্বে আছি, ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি, আমাদের অনেক ব্যাবসায়িক উদ্বেগ আছে। এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হচ্ছে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের স্থগিত নিয়ে কথাবার্তা বলা। আরেকটি হচ্ছে শ্রম আইন সংশোধান। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন আমরা বাতিল করতে চাই না, আমরা স্থগিত চাই। সেটাও বলেছি নির্দিষ্ট মাত্র তিন বছরের জন্য। এই তিন বছর এ জন্য লাগবে যে আমরা এখনো প্রস্তুত না। আমাদের অবকাঠামো এখনো প্রস্তুত না। এই বিষয়গুলো আমরা আমাদের বিএনপির নেতৃত্বকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি, উনারা বর্তমান সরকারকে এটা বোঝাতে সক্ষম হবেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আরেকটি বিষয় হচ্ছে, শ্রম আইন সংশোধন। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। এই আইনের ১২৪টা পয়েন্টের মধ্যে আমরা ১২২টা পয়েন্টে একমত হয়েছি। যে দুটি পয়েন্টে আমরা একমত হতে পারিনি, এটার বাস্তবসম্মত কারণ আছে। যেমন ২০ জন শ্রমিক আবেদন করলেই ট্রেড ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন দিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে যেটা আছে ২০ শতাংশ। একটা শিল্পে যদি পাঁচ হাজার লোক থাকে, তিন হাজার লোক থাকে। আবার ১০ হাজারের ওপরে লোক আছে। সেখানে যদি মাত্র ২০ জনের ট্রেড ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন দিয়ে দেওয়া হয় এবং একটা শিল্পে সর্বোচ্চ পাঁচটা রেজিস্ট্রেশন দিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে শিল্প টিকবে না। এটা আমাদের একেবারে রুট লেভেলের বাস্তবসম্মত অভিজ্ঞতা।’
বিজিএমইর সভাপতি বলেন, বিএনপি মহাসচিব ইউএন যাচ্ছেন। সেখানে প্রধান উপদেষ্টাও যাচ্ছেন। যেহেতু উনি (মহাসচিব) কথা বলার সুযোগ পাবেন, উনার মাধ্যমে আমরা এই বার্তাটা প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।’