জাহাজভাড়া বৃদ্ধির প্রভাব
সিমেন্ট খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক মাস ধরেই এ খাতের প্রায় সব কোম্পানি উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে সিমেন্ট বিক্রি করছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় উৎপাদন সক্ষমতা বেশি হওয়ায় বাজার হারানোর ভয়ে কোম্পানিগুলো দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। কারণ, কেউই বাজার হারাতে চান না।
খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এক মাস আগে সিমেন্টের প্রতি টন কাঁচামালের জন্য জাহাজীকরণ বাবদ খরচ ছিল ১৭ মার্কিন ডলার। সেটি এখন বেড়ে ২৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। এ অবস্থায় নিকট অতীতে এ ভাড়া কমে আসার সম্ভাবনা খুব বেশি দেখা যাচ্ছে না। সিমেন্টের কাঁচামালের প্রায় সবই আমদানিনির্ভর। ফলে জাহাজভাড়া বাড়লে তার বড় ধরনের প্রভাব উৎপাদন খরচে পড়ে। সিমেন্ট তৈরির অন্যতম কাঁচামাল ক্লিংকার।
এদিকে কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে জাহাজীকরণ বাবদ খরচ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সিমেন্ট কোম্পানির উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বা বিসিএমএ। এ বিষয়ে বিসিএমএর সভাপতি ও ক্রাউন সিমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলমগীর কবির বলেন, একদিকে জাহাজীকরণের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধি, অন্যদিকে তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে দেশীয় সিমেন্ট কোম্পানিগুলো বর্তমানে বড় ধরনের লোকসান দিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চললে এ খাতে কেউ টিকে থাকতে পারবে না। তাই টিকে থাকার স্বার্থে মূল্য সমন্বয় করার কোনো বিকল্প নেই। অন্যথায় এই খাতের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়বে।
এর আগে গত বছরের মার্চে দেশের সিমেন্ট কোম্পানিগুলো সিমেন্টের দাম এক দফা বাড়িয়েছিল। কাঁচামাল আমদানিতে জাহাজভাড়া অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ওই সময় বস্তাপ্রতি সিমেন্টের দাম ৪০-৫০ টাকা বাড়ানো হয়েছিল।