এত বড় জয় এনে দেওয়ার পুরো কৃতিত্ব মুমিনুলের: মাশরাফি

ছবি: সংগৃহীত

সাকিব আল হাসান নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পর ২০১৯ সালে টেস্ট দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয় মুমিনুল হককে। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম অ্যাসাইনমেন্টেই চরম বাজেভাবে ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি। বিরূপ পরিস্থিতিতে ভারত সফরে গিয়ে দুই টেস্টের সিরিজে অসহায় আত্মসমর্পণ করে হোয়াইটওয়াশড হয়েছিল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে সবশেষ সিরিজেও দুঃসময় সঙ্গী ছিল টাইগারদের।

বারবার সমালোচিত হওয়া সেই মুমিনুলের নেতৃত্বেই নিউজিল্যান্ড সফরে এসেছে ঐতিহাসিক সাফল্য। মাউন্ট মঙ্গানুইতে টেস্টের বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ৮ উইকেটে জিতে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। যাকে তাদের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ জয়ের তকমাও দেওয়া হচ্ছে। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালদের অনুপস্থিতিতে তরুণ একটি দল নিয়ে এত বড় জয় পাওয়ায় মুমিনুলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক দলনেতা মাশরাফি বিন মর্তুজা।

বৃহস্পতিবার মাশরাফি ফিরে তাকান মুমিনুলকে অধিনায়কত্ব দেওয়ার সেই কঠিন সময়ে। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, ‘ওকে (মুমিনুলকে) টুপি খোলা অভিনন্দন। কারণ, প্রথমত, মুমিনুলকে বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক করা হয়েছিল… মুশফিককে সরিয়ে সাকিব এসেছিল, তারপর সাকিব দুর্ভাগ্যজনকভাবে নিষেধাজ্ঞায় পড়ল… এই সবকিছুর প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে। পরে যারা ছিল, তাদেরকেও দেওয়া হয়নি। আমি নিশ্চিত না যে মুমিনুলও কি তখন প্রস্তুত ছিল কিনা।’

দায়িত্ব পাওয়ার পর নিউজিল্যান্ডকে হারানোর আগে মুমিনুলকে পার করতে হয়েছে বন্ধুর পথ। সেই পথ এখনও শেষ হয়ে যায়নি। মাশরাফি জানান, এমন বিশাল জয়ের পুরো কৃতিত্ব মুমিনুলের, ‘ওখান থেকে এত সমালোচনা, এত কিছুর পরও যে ও দলটাকে গুছিয়ে এত বড় একটা জয় এনে দিয়েছে… পরে কী হবে সেটা পরের ব্যাপার। এত বড় একটা জয় এনে দেওয়ার পুরো কৃতিত্ব ওর।’

এবারের নিউজিল্যান্ড সফরের বাংলাদেশ দলে চোটের কারণে নেই তামিম ইকবাল। পারিবারিক কারণে খেলছেন না সাকিব আল হাসান। সিনিয়র হিসেবে আছেন কেবল মুশফিকুর রহিম। তারকা ক্রিকেটারদের অনুপস্থিতিতে দলকে উজ্জীবিত করায় মুমিনুলের প্রশংসা করেন মাশরাফি, ‘আমরা তো বাইরে থেকে যারা দেখি, তারা চিন্তা করে যে সাকিব নেই, তামিম নেই মানে- দলের অর্ধেক নেই বা অর্ধেকের বেশি নেই। সেখান থেকে (মুমিনুল) দলকে উজ্জীবিত করে যে ম্যাচটা জিতেছে, এটা দারুণ ব্যাপার। অবশ্যই, মুশফিক আছে, ওকে সাহায্য করেছে। তবে সব কিছু মিলিয়ে আমি মনে করি, ওকে পুরো কৃতিত্ব দেওয়া দরকার।’

বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে ১২ ম্যাচে মুমিনুলের এটি তৃতীয় জয়। তার অন্য দুইটি জয় এসেছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ের সেরা পাঁচে থাকা কোনো দলের বিপক্ষে তাদের মাটিতেই টেস্ট জেতার অভিজ্ঞতা টাইগারদের ছিল না এতদিন। এবার মুমিনুলের নেতৃত্বে মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, ইবাদত হোসেনদের নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে এবার সেই অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে স্মরণীয় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।