বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের অনেক সমস্যা আছে। আজকে যারা ক্ষমতাসীন তারা ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট। আর ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক শক্তির লড়াইটা খুব সহজ নয়। এখানে মৌলিক পার্থক্য হলো- অস্ত্র-শস্ত্র, রাষ্ট্র ক্ষমতা সবকিছুকে নিয়ে সে আক্রমণ করে। আর আমরা জনগণকে নিয়ে সেই আক্রমণ প্রতিহতের চেষ্টা করি। এখানে আমি মনে করি আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা অনেকদূর এগিয়ে গেছি। আমাদের সবচেয়ে বড় সফলতা হলো দেশের সমগ্র মানুষকে এক করতে পেরেছি। দেশের রাজনৈতিক চিন্তার মানুষ (ডান-বাম) সবাইকে আমরা এক করতে পেরেছি। এখন শুধু চূড়ান্ত বিজয়ের অপেক্ষা। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) ২৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেডআরএফ।
ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানের পরিচালনায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ডা. সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিস সিমকী, ২০১৩ সালে গুমের শিকার দারুস সালাম থানা ছাত্রদল সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: রাশেদের ছোট ছেলে রিমন রাশেদ, বংশাল থানা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক মো. পারভেজে ছোট মেয়ে হৃদি, ২০১৮ সালে পুলিশের গুলিতে চোখ হারানো সিরাজগঞ্জ মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেরি বেগম, ২০২২ সালে মুন্সিগঞ্জের মোক্তারপুর ফেরিঘাটে পুলিশের গুলিতে মুখমন্ডল বিকৃত হয়ে মৃত্যুপথ যাত্রী জাহাঙ্গীর মাতবর, ২০২২ সালে গুলিবিদ্ধ হয়ে চোখের কর্ণিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক এজিএস মো. আরিফ বিল্লাহ, ২০১৩ সালে গুম হওয়া তেজগাঁও থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো: কাউসারের মেয়ে মিমসহ কয়েকজন তাদের অভিমত ব্যক্ত করেন। তাদের হাতে উপহার তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে জেডআরএফ’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে দেশের রাজনীতি চরম সঙ্কটে আছে। এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই যে আমরা এখন সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছি। এই সঙ্কট ও শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আমাদেরকে দেশের মানুষ ও দল এবং আমরা যারা জিয়াউর রহমানের আদর্শের রাজনীতি করি তারা মোকাবিলা করছি। এসবকে মোকাবিলা করেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে শুধু দেশে নয়, বাইরের যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তারাও কিন্তু আমাদের চাওয়ার ব্যাপারে একমত। এটা নি:সন্দেহে আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে অর্জন করতে পেরেছি। এখন প্রয়োজন যারা দলের বাইরে থেকে কাজ করেন তারা এই বোধটাকে সাধারণ মানুষের মাঝে দ্রুত ছড়িয়ে দিয়ে তাদেরকে আরও ঐক্যবদ্ধ করতে চেষ্টা করবেন। তবে আমরা আশাবাদী। প্রতিদিনই আমাদের সমর্থক বাড়ছে। আগে কর্মসূচি করতে গেলে কর্মীদেরকে বেশি সক্রিয় হতে হতো। এখন কিন্তু সাধারণ মানুষ আগে আসছেন। আমি মনে করি যেসব নেতাকর্মী তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তার অবদান বৃথা যাবে না।
অনুষ্ঠানে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, জেডআরএফ’র কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের মধ্যে ডা. এএইচএস পারভেজ, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, অধ্যাপক ড. আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক লুৎফর রহমান সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।