- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৯ জুলাই ২০২৩, ২১:২২
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেছেন, ‘চলতি সপ্তাহে যুগপৎ এক দফা দাবি আদায়ের আন্দোলন ঘোষণা করা হবে। এক দফার আন্দোলন হবে ঢাকামুখি।’
রোববার (৯ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের দুই নম্বর গেটস্থ নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ‘এমন কঠিন পরিস্থিতি আগে কখনো ছিল না। ২৭ বছর আমি আর্মিতে কর্মকর্তা হিসেবে দেখেছি, আবার ২৭ বছর বাইরে থেকেও দেখেছি। এখন আমরা সবচেয়ে বড় সঙ্কট মোকবেলা করছি। এখন দুটি দল অবস্থান করছে। একটি সরকারি দল, আরেকটি বিরোধী দল বা জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী দল। সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী দল না। বাংলাদেশকে সঙ্কট থেকে মুক্তির দুটি উপায় হতে পারে। এর একটি হচ্ছে সমঝোতা এবং অন্যটি সঙ্ঘাত। সার্বিকভাবে বিরোধী দল সঙ্ঘাতে জড়াবে না। সরকারি দল যদি একই ধরনের মানসিকতা অটুট রাখে, তাহলে সঙ্ঘাত ঘটবে। শান্তিকামী মানুষের সামনে পুলিশ যখন অস্ত্র নিয়ে দাঁড়ায় বা গুলি করে তখন রক্তপাত হয়। অহিংস আন্দোলনে বাধা দিয়ে এখন সহিংসতা করানোর চেষ্টা চলছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন দেশবাসীর ভোটের অধিকার রক্ষার আন্দোলন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে দেড় বছর আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলনের নেতৃত্বে আছে বিএনপি। ২০ দলীয় জোট ছিল, তা ভেঙে দেয়া হয়েছে। তারও আগে ঐক্যফ্রন্ট বিলুপ্ত হয়েছে। এখন ১২ দলীয় জোটের মধ্য কল্যাণ পার্টি একটি। আমাদের আন্দোলন রাজনৈতিক দলকে বাধ্য করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যুক্ত করা। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যে নির্বাচিত হবে তাকে আমরা স্বাগত জানাব।
তিনি বলেন, ‘আগামীর আন্দোলন ঢাকামুখী হবে। ঢাকা নিয়ন্ত্রণে না আনলে আন্দোলন সফল হবে না। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ও ঢাকা কেন্দ্রীক আন্দোলন হয়েছে। রাজধানী কেন্দ্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ে বাধ্য করা হবে। আগামী ১২ জুলাই বিএনপি যুগপৎ একটি ঘোষণা দিবে। এক দফা দাবি বাস্তবায়নের আন্দোলনের দিকে অগ্রসর হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল করে সরকারের বিদায় নিতে বাধ্য করা হবে।’
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আন্দোলন বেগবান হলে সরকার যেন হিংস পরায়ন না হয়। এখন যে প্রবণতা দেখছি, ১০ থেকে ১৫ বছর আগের মামলা পুনরুজ্জীবিত করা হচ্ছে। যেন কারাগারে নেতাকর্মীদের নিয়ে যেতে পারে, আন্দোলন ধমাতে পারে। কিন্তু দীর্ঘ সময় আন্দোলন চলার কারণে প্রচুর নেতৃত্ব তৈরি হয়েছে। কাউকে গ্রেফতার করে আন্দোলন থামানোর সুযোগ আর নেই। বিরোধী দলের আন্দোলন আর বিদেশীদের তৎপরতার মধ্যে আংশিক মিল রয়েছে। বিরোধী দলের আন্দোলন ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। বিদেশীরা মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার কথা বলছে। এজন্য তারা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও দিতে পারেন। এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের সকল মানুষের জন্য এটি ক্ষতির কারণ হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এবার ২০১৪ বা ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন করতে পারবে না। এখন সবাই সচেতন হয়েছে। বিরোধী দল সচেতন, সরকারি দল সচেতন। একই সাথে আন্তর্জাতিক মহলও খুবই সচেতন। জনগণের দাবি মোতাবেক নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে বলে আমি মনে করি।’
মেজর (অব.) ইবরাহিম, ‘জামায়াতের সাথে আমাদের রাজনৈতিক কোনো জোট নেই। তবে জামায়াত এখন সর্বাধিক সুসংগঠিত রাজনৈতিক দল। শত দমন-নিপীড়নের পরেও জামায়াত অনেক সংগঠিত। তারা কখনো অদৃশ্য, আবার কখনো দৃশ্যমান কার্যক্রম পরিচালনা করছে।’
প্রেস বিজ্ঞপ্তি