কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এ টি এম এমদাদুল আলম কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক কাজে বাধা দিয়েছেন। এ ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে তাঁকে হেনস্তার অভিযোগ করেছেন এমদাদুল আলম।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে এ ঘটনা ঘটে। এরপর নিজের কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগের নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন এমদাদুল আলম। অন্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২৬ জুলাই থেকে বয়সসীমা বৃদ্ধি, পোষ্য কোটায় শর্ত শিথিলসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন কর্মকর্তা সমিতির নেতারা। তবে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কয়েকজন কর্মকর্তা কাজ অব্যাহত রেখেছিলেন। গতকাল দুপুরে হিসাব শাখার পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) জাকির হোসেন তাঁর কক্ষে দাপ্তরিক কাজ করছিলেন।
এ সময় কর্মকর্তা সমিতির সভাপতির সঙ্গে তাঁদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। তাঁরা এমদাদুল আলমকে হুমকি দিয়েছেন ও মারতে উদ্যত হয়েছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন।
কর্মকর্তা সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর মোর্শেদুর রহমান বলেন, ‘অ্যাকাউন্টস ডিরেক্টর ফাইল স্বাক্ষর করার কারণে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি ঘুষি মারতে গিয়েছিলেন। আমরা সেখানে পরিস্থিতি শান্ত করতে গিয়েছিলাম। পরে আর আমরা কোনো ঝামেলা করিনি।’
হিসাব শাখার পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাকে কাজ থেকে বিরত থাকতে বললে আমি প্রশাসনিক নির্দেশে কাজ করছি বলে তাঁকে জানাই। এরই একপর্যায়ে অন্যান্য কর্মকর্তারা ঢুকলে সেখানে বাগ্বিতণ্ডা হয়।’
সংবাদ সম্মেলনে এমদাদ আলম বলেন, ‘আমি হিসাব শাখার একটি কক্ষে গিয়ে কাজ করতে নিষেধ করলে কয়েকজন কর্মকর্তা কক্ষে ঢুকে বলে, কাজ হবে। এ সময় তাঁরা আমার সঙ্গে মারমুখী আচরণ করেন। কক্ষের বাইরে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন নেতা-কর্মী আমাকে লাঞ্ছিত করেন, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারতে উদ্যত হন। তাঁরা বাইরে নিয়ে আমাকে পেটানোর হুমকি দেন।’ প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তার ইন্ধনে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তাঁর।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে প্রক্টর উপস্থিত থাকলেও কিছু করেননি। ছাত্রলীগের যাঁরা ছিলেন, তাঁরা অনেকেই পোষ্য কোটায় ভর্তি হয়ে পোষ্য কোটার পক্ষের আন্দোলনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন।’
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি সাড়া দেননি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ‘এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
কিছু ছাত্র বিভিন্ন অফিসে কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু কর্মকর্তারা কাজ করছিলেন না। এ কথা শুনে প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে দেখি লোকজন জড়ো হয়েছেন। যাঁরা সেখানে ছাত্র ছিলেন, আমি তাঁদের সরিয়ে এনেছি। আমি শেষ মুহূর্তে সেখানে গিয়েছিলাম।’
প্রক্টর শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম। যাঁরা কাজ করছিলেন, তাঁদের সঙ্গে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতিসহ অন্যদের বাগ্বিতণ্ডা চলছিল। পরে আমি অনুরোধ করে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতিকে তাঁর কক্ষে দিয়ে আসি। কর্মকর্তারা লিখিত দিলে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’