ইভিএম নিয়ে ‘চ্যাম্পিয়ন’ হওয়া গেল না

ইভিএম নিয়ে ‘চ্যাম্পিয়ন’ হওয়া গেল না

১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়ে গেলেও তার রেশ এখনো কাটেনি। চলছে ফলাফল বিশ্লেষণ আর তার ভবিষ্যৎ প্রভাব ও প্রতিক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা। এই নির্বাচনের বিভিন্ন নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যই রয়েছে এসব আলোচনার মূলে। সবাই এই নির্বাচনের আগে ভেবেছিল আসন্ন ভোট নতুন বছরে বোধ হয় গণতন্ত্রের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা নিয়ে আসবে। কিন্তু এ শুভ কামনা শুধু বিফল হয়নি; বরং এমন বার্তা সে নির্বাচন থেকে পাওয়া গেছে যা মানুষকে হতাশ আর হতবাক করেছে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে ভোট গ্রহণের মাধ্যম হিসেবে ইভিএম ছাড়া আর তেমন কোনো বিষয় নিয়ে ওজর আপত্তি ওঠেনি। ভোট গ্রহণের আগে এই পদ্ধতিতে ভোট নেয়া নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের একপক্ষ বিএনপি; আর নির্বাচন নিয়ে গবেষণাকারী বিশেষজ্ঞরা, সেই সাথে সুশীল সমাজ, সবাই ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করার বিষয়টি ‘জনবান্ধব’ নয় বলে তা নিয়ে আপত্তি তুলেছিল। সেই সাথে বলা হয়েছিল এতে ভোট দেয়ার যে গোপনীয়তা সেটি রক্ষিত হবে না।

কিন্তু নির্বাচন কমিশন এসব আপত্তি অভিযোগের ব্যাপার উপেক্ষা করেছে। তারা একক সিদ্ধান্তে অটল থেকেছেন। এমন অনঢ় থাকার বিষয়ে কমিশনকে মৌন সমর্থন জুগিয়েছে ক্ষমতাসীন মহল- এমন অভিযোগ রয়েছে। সে যাই হোক, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কমিশনের সবার মতকে অগ্রাহ্য করা এবং জনগণের মত গ্রহণের আর তা প্রকাশের রাষ্ট্রীয়ভাবে দায়িত্বশীল সংস্থা হওয়ার কারণে এভাবে জনমতকে অগ্রাহ্য করাটা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল কর্তৃত্ববাদিতার দৃষ্টান্ত বলে মনে করছে। সেই সাথে সাধারণভাবে এমনটা মনে করা হচ্ছে যে, তারা এমন ভূমিকার দ্বারা কোনো বিশেষ মহলের প্রতি তাদের অনুরাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। তাছাড়া কমিশনের বিরুদ্ধে বরাবর নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়ার যে অভিযোগ তারও পুনরাবৃত্তি ঘটল। নিরপেক্ষ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে এমন একদিক ঝুঁকেপড়া শুধু অশোভন নয়, তাতে প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা বিনষ্ট হয়েছে। কোনো নির্বাচন নিয়ে সরকারের দৃশ্যমান কোনো ভূমিকা থাকার কথা নয়। কিন্তু তারপরও কোনো নির্বাচন ভালো হলে সে জন্য প্রশাসন নন্দিত হয়। আর নির্বাচন যদি তার উদ্দেশ্য সাধনে ব্যর্থ হয়, তবে সে ক্ষেত্রে তাদের নিন্দার ভাগী হওয়া ব্যতীত গত্যন্তর নেই। এদিকে প্রশাসনের গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকারের যে কথা হরহামেশা ব্যক্ত করা হয়, তার সাথে তাদের কাজের দূরত্ব অনেক বেশি।

এবার ঢাকা সিটি নির্বাচনে যারা দৃশ্যত বিজয়ী হয়েছেন তারা কিন্তু নৈতিকভাবে পরাজিত। কেননা ঢাকায় বিপুলসংখ্যক মানুষের বসবাস হলেও তার একটা ক্ষুদ্র অংশের সমর্থন পেয়ে তারা বিজয় অর্জন করেছেন। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে নবনির্বাচিত দুই মেয়র এবং ২২৯ কাউন্সিলর বিজয়ী হয়েছেন মাত্র ১৫ শতাংশ মানুষের ভোটে। ভোটের এই হারকে গণতন্ত্রের জন্য ‘অশনিসঙ্কেত’ বলে অভিহিত করেছে বিভিন্ন মহল। এমন অভিব্যক্তিকে কারো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রসূত বলে আখ্যায়িত করার অবকাশ নেই। কেননা কিছু কাল থেকেই বিভিন্ন নির্বাচনে ক্রমে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে অনুপস্থিতির বিষয়টি লক্ষ্য করা গেছে। অথচ অতীতে বরাবর দেখা গেছে, এ দেশের সব মানুষ সব সময় ভোটকে উৎসব হিসেবে গণ্য করে গণতন্ত্রের এই অনুশীলনে যুক্ত থেকেছে আনন্দ উল্লাস নিয়ে। এই উৎসব আনন্দে ভাটা পড়েছে তখন, যখন পেশিশক্তি ভোটকেন্দ্রগুলোর নিয়ন্ত্রণ কব্জা করেছে। আর এই অপশক্তিকে নেপথ্য থেকে মদদ দিয়েছে ক্ষমতা আর কর্তৃত্বের অধিকারীরা। এর যদি প্রতিকার করা যায় তবে হয়তো ভবিষ্যতে আশা করা যায় যে, ভোটকেন্দ্রগুলোতে আবার মানুষের সমাগম ঘটবে। প্রকৃত কথা হচ্ছে, জনগণের শান্তিপূর্ণ ও চাপমুক্তভাবে ভোট দেয়ার সুষ্ঠু পরিবেশ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।

নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর এখন রাজধানী মহানগরী ঢাকার সামগ্রিক উন্নয়নের বিরাট কর্মকাণ্ড ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের পাশাপাশি নির্বাচিত দুই মেয়র ও কাউন্সিলরদের ওপর বর্তেছে। এটি সবার জানা, জনসংখ্যার দিক থেকে পৃথিবীর একটি বৃহৎ নগরী হচ্ছে ঢাকা। এর সাথে এটিও মনে রাখতে হবে যে, সরকার দাবি করছে বাংলাদেশ একটি ‘মধ্য আয়ের দেশ’ হিসেবে আবির্ভূত হতে চলেছে। সেই দেশের রাজধানী হিসেবে এই শহরের যে গুরুত্ব, সেই নগরীর নাগরিকদের সর্বাঙ্গীন সেবা দেয়ার দায়িত্ব দুই সিটি করপোরেশনের ওপর। এদিকে সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগে দুই মেয়র ও কাউন্সিলররা জনগণকে এত আশা-ভরসার কথা শুনিয়েছেন সেটি বাস্তবতার নিরীখে বলতে হয় নিছক কথার ফুলঝুরি। এমন আশ্বাসও দেয়া হয়েছে যেটা তাদের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে না। কাউন্সিলরদের অনেকেই এবার পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন। তাদের অতীত দায়িত্ব পালনের ব্যাপারটি যদি যাচাই করা হয় তবে দেখা যাবে তারা এমন জনসেবক ছিলেন যে, ‘বকের মতো জলাশয়ে স্বচ্ছ পানিতে নেমে মাছ ধরে খেয়েছেন।’ উন্নয়নের জন্য যে অর্থ তাদের হাতে এসেছিল সেটি তারা আর তাদের পেটোয়াদের নিয়ে হজম করেছেন। দয়া করে আর এমন ‘বক’ হবেন না। দায়িত্বপ্রাপ্তদের উচিত বিবেকের কাছে জবাবদিহি করা এবং ভুলভ্রান্তি শুধরে নেয়া। কেননা, সময় একদিন অবশ্যই আসবে যখন সব কিছুর পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব নেয়া হবে। তাই আখের গোছানোর যে ধারা এখন চালু রয়েছে, তা থেকে সরে আসা উচিত।

ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও প্রভাব মুক্তভাবে ভোট সুষ্ঠুভাবে করানো সম্ভব নয় বলে অনেক আগেই প্রমাণিত হয়েছে। সে বিবেচনায় দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন না করা নিয়ে দীর্ঘ দিন থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে দাবি রয়েছে। ‘সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে অনীহা দেখানোর অবকাশ নেই বলে কেউ কেউ মনে করতে পারেন, নির্বাচনেও সেটি ব্যবহার করতে হবে।’ সেটি আসলে খোঁড়া যুক্তি, কেননা যারা ভোট দিতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করবেন, তাদের সেই প্রযুক্তি ব্যবহারে সক্ষমতা কতটুকু সেটি সর্বাগ্রে বিবেচনা করতে হবে। তাছাড়া গোটা কয়েক দেশে মাত্র আংশিকভাবে ইভিএম প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভোট নেয়া হচ্ছে অথচ বহু উন্নত দেশের ভোটে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে না। প্রশ্ন হচ্ছে কেবল নির্বাচনের এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে কতটা সক্ষমতা দেখাতে পারবে? বরং কেউ কেউ ইভিএম ব্যবহার নিয়ে কমিশনের অতিরিক্ত উৎসাহের পেছনে ভিন্ন মতলব আছে বলে সন্দেহ করে।

এবার ঢাকা সিটি করপোরেশনে দেয়া ভোট নিয়ে পত্রিকায় এমন রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে যে, বহুক্ষেত্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দেয়ার জন্য সহযোগিতা করতে এসে কিছু লোক নিজেই ভোট দিয়ে দিয়েছেন। বহু স্থানে এমনটা ঘটার খবর প্রকাশিত হয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি মৌলিক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। আইনানুযায়ী ভোট দেয়ার সময় দ্বিতীয় ব্যক্তির প্রবেশাধিকার নেই। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এমন ঘটনা এবার সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ঘটেছে। নির্বাচনী বুথে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতা ভিন্ন কারো পক্ষে বুথে প্রবেশ করা সম্ভব নয়। কেবল ক্ষমতার অধিকারীদের পক্ষেই সেটি কেবল সম্ভব। মোট কথা, এবারে নির্বাচনে বেআইনি কাজ হয়েছে যাতে নির্বাচনের সুষ্ঠুতা পণ্ড হয়েছে।

সিটি করপোরেশনের এবারের নির্বাচন নিয়ে ইসি ও সংশ্লিষ্ট মহলের অনুতাপ বা খেদের কোনো প্রকাশ পাওয়া না গেলেও, তাদের ইভিএম প্রবর্তন করা নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার যে অদম্য খায়েশ ছিল, সেটি নস্যাৎ হয়ে যাওয়ায় তারা হতাশায় ভুগছেন। তাদের ভাব ভঙ্গিমায় তা প্রকাশ পেয়েছে। বিশেষ করে রাজধানীর বেশির ভাগ ভোটার ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত না হয়ে বস্তুত ইভিএম পদ্ধতিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। আর সে কারণে নির্বাচন নিয়ে তারা বলতে বাধ্য হয়েছেন যে, জনগণের এমন ভোট বিমুখতা গণতন্ত্রের জন্য মঙ্গলজনক নয়। তবে জনগণের এমন অনীহা থেকে তারা ভবিষ্যতে শিক্ষা নেবেন বলে উচ্চারণ করা হয়নি। আর একটি বিষয় এখানে উল্লেখ করা জরুরি মনে করছি। সেটি হলো, সিটি করপোরেশনগুলো দেশের সবচেয়ে বৃহৎ ও শক্তিশালী স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা পরিচালিত হওয়ার যে সাংবিধানিক চেতনা ও নীতি রয়েছে, সেটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে গঠিত হওয়ার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হতে পারে না। অথচ সংবিধানের যেকোনো লক্ষ্য-নীতি, নির্দেশনার প্রতি শ্রদ্ধা আনুগত্য প্রদর্শন করা অত্যাবশ্যক। আর ইসি তো একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তাই এসব দিকনির্দেশনার প্রতি তার কত বেশি অনুগত থাকা উচিত সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমন ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন উদাসীন থাকাটাও অনৈতিক। সংবিধানের নির্বাচন সংক্রান্ত এমন চেতনার ব্যাপারে কারো প্রচ্ছন্ন অবজ্ঞাও কোনো প্রকারেই খাটো করে দেখা যায় না।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কমিশনাররা দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তাদের নেতৃত্বে এ যাবত যতগুলো সাধারণ ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন হয়েছে, সেগুলোর কোনোটিই কাক্সিক্ষত মান বজায় রেখে হয়নি। সেসব ভোটে নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং কমিশনারদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এটাই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক এবং নির্বাচন নিয়ে গবেষণাকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো মনে করেন। এ ব্যাপারে নিছক অভিযোগ অনুযোগের পর্যায়ে থাকাটা যথেষ্ট নয়। তারা মনে করেন, গোটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সফলতার জন্য ইসির প্রশ্নাতীত নিরপেক্ষতা বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করার বিকল্প নেই।

এই বিষয়টি এখন জাতীয় পর্যায়ে প্রধান ইস্যু হিসেবে আলোচনার সূত্রপাত করা উচিত। বিশেষ করে ইসি গঠনের পথ প্রক্রিয়ার বিষয়টি নিয়ে সংলাপ শুরু করা জরুরি। এখন যেভাবে ইসি গঠিত হচ্ছে, সেটি সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদের মাধ্যমে। সে অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনাধিক চারজন নির্বাচন কমিশনারকে লইয়া বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকিবে…., আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ও অন্যান্য কমিশনারকে নিয়োগ দান করিবেন।” আর নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনের বিষয়টি সংবিধানের ১১৮(৪) অনুচ্ছেদে রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন এবং কেবল এই সংবিধান ও আইনের অধীন হইবেন। বাহ্যত এই নির্দেশাবলি সহজ ও বোধগম্য। কিন্তু এই বিধানাবলীর বাস্তবে চর্চা ও কার্যকর হওয়ার ক্ষেত্রে গোল বেঁধে আছে। সংবিধানে নির্বাচন কমিশন গঠনের দৃশ্যত ব্যাপারটি হচ্ছে, এমন রাষ্ট্রে রাজনৈতিক নির্বাহীরা তথা সরকার এ জন্য যে পদ্ধতি অনুসরণ করে সেখানে তাদের ভিন্ন মতাবলম্বীদের মনোনয়ন পাওয়ার তেমন সুযোগ থাকে না। ক্ষমতাসীনদের ভাবাদর্শের প্রতি বিশ্বস্ত ও অনুগতরাই নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ পেয়ে থাকেন। রাষ্ট্রপতিই তাদের নিয়োগ দেন বটে। তবে মন্ত্রিপরিষদের পাঠানো সুপারিশের আলোকেই তা তিনি সম্পন্ন করেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই কমিশনাররা তাদের দায়িত্ব পালনের সময় ক্ষমতাসীনদের প্রতি অনুরাগের বশবর্তী হন। কমিশনারগণের এই বোধের কাছে সংবিধানের নির্দেশিত, স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের অনুভূতি লোপ পেয়ে যায়। এই প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পাওয়ার যে ধারা চলে আসছে, সেটি যদি বজায় থাকে তবে নির্বাচন কমিশনের কাছ নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন আশা করা ঠিক হবে না। বিষয়টি অবশ্যই ভেবে দেখা উচিত।

গণতন্ত্রকে সব দিক থেকে রাহু মুক্ত করতে পারলে এর সৌন্দর্য সৌরভে গোটা জাতি আমোদিত হবে। আর ক্ষমতার হাত বদলের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকতা ফিরে আসবে। গণতন্ত্র হচ্ছে দেশের সার্বিক উন্নয়নের একটি অপরিহার্য চালিকা শক্তি। যে জনপদে গণতন্ত্রের সঠিক অনুশীলন নেই সেখানে জবাবদিহিতা থাকে না। এর অনুপস্থিতিতে সমাজ দুর্নীতি-অনিয়মে ছেয়ে যায়।

[email protected]