ঢাকা
ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানেরও ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকের আমানত ও ঋণে সুদহার ৬ শতাংশ ও ৯ শতাংশ হলেও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য তা বাড়ানো হয়েছে। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ সুদে আমানত নিতে পারবে এবং ঋণ দিতে পারবে সর্বোচ্চ ১১ শতাংশ সুদে। আগামী জুলাই মাস থেকে তা কার্যকর হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আজ এক প্রজ্ঞাপনে এই নির্দেশনা দিয়েছে। ফলে জুলাই থেকে নতুন–পুরোনো সব আমানত ও ঋণে নতুন সুদহার কার্যকর হবে। তবে আগে বেশি সুদে নেওয়া আমানত মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর নতুন করে রাখা হলে তখন নতুন সুদ কার্যকর হবে।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদহার নির্ধারণের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়ার পর তা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়।
২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া ব্যাংকের সব ধরনের ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে নতুন ও পুরোনো সব ধরনের ঋণের সুদের হার হয় ৯ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্টে মেয়াদি আমানতের সুদহার গড় মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম না হওয়ার শর্ত আরোপ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে আমানতের সর্বনিম্ন সুদহার দাঁড়ায় প্রায় ৬ শতাংশ। তবে অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা সুদহার বেঁধে দেওয়া নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তাঁরা সুদহার বাজারব্যবস্থার ওপর ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
এর আগে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের সুদহার কমানোর জন্য আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক নানা উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ২০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণের সুদ আদায় করে। দেশে এখন ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রের তথ্যানুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ১১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদহার ছিল ১২ শতাংশের বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, বহুল আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারের জালিয়াতির কারণে আর্থিক খাতের চারটি প্রতিষ্ঠান সংকটে পড়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে আরও ছয়টি প্রতিষ্ঠান বর্তমানে খারাপ অবস্থায় আছে। এ কারণে তারা বেশি সুদে টাকা ধার করছে, সেই টাকা আবার বেশি সুদে ঋণ দিচ্ছে। পাশাপাশি কিছু ভালো প্রতিষ্ঠানও ঋণের বিপরীতে বেশি সুদ নিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তা ৩০ শতাংশও ছাড়িয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। তাই সুদহার বেঁধে দেওয়া হয়েছে।