আমেরিকা সুপারপাওয়ার, আমরা তাদের উপেক্ষা করতে পারি না: পররাষ্ট্র মন্ত্রী

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘সুপারপাওয়ার’ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমরা কখনোই তাদের উপেক্ষা করতে পারি না এবং করিও না। সরকার যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শকে অত্যন্ত গুরত্বসহকারে গ্রহণ করে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আছি। যুক্তরাষ্ট্রও আমাদের সঙ্গে রয়েছে। বাংলাদেশের অত্যাসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান প্রসঙ্গে একাধিক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। সোমবার সেগুনবাগিচায় গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন মন্ত্রী মোমেন। তার কাছে একজন সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমাদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছিল। তারা এখন কিছু বলছে না। সরকারের কোন উদ্যোগে তারা চুপ হয়ে যেতে বাধ্য করলেন? জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘কী বলেন, বাধ্য করব কীভাবে? পাগল নাকি! কোনো সুযোগ নেই। আমাদের সে ক্ষমতা নাই।’

বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্রগুলো বিভিন্ন সময়ে নানা বিষয়ে উপদেশ দেয় জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কারও যদি ভালো উপদেশ থাকে স্বচ্ছ, সুন্দর নির্বাচনের জন্য, আমরা সেটা অবশ্যই গ্রহণ করবো। আমরা তাদের পরামর্শকে স্বাগত জানাই।

আমরা তো পণ্ডিত না। তবে মন্ত্রী বলেন, যারা মাতব্বরি করবে, তাদের সহ্য করা হবে না। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ পরামর্শ দিলে তা গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হয় বলে পুনরুল্লেখ মন্ত্রী মোমেন বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখি; যথেষ্ট সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরাও তা চাই। তারা আমাদের সাহায্য করছেন। একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচনের জন্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমি নিশ্চিত যে আমরা যদি একটি সুন্দর নির্বাচন করতে পারি, তাহলে অবশ্যই আমেরিকা আমাদের সঙ্গে থাকবে। তারা আমাদের বন্ধু দেশ। শুধু নির্বাচন নয়, তাদের সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন রকম সম্পর্ক আছে। আমেরিকা সব সময় বাস্তববাদী।

নির্বাচন বানচালের চেষ্টাকারীদের মার্কিন ভিসানীতির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন যুক্তরাষ্ট্রকে আমরা বলবো- যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে, তাদেরকে মার্কিন ভিসানীতির আওতায় নিয়ে আসুন। বিদেশিরা বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলায় এবং এর জন্য ঐতিহাসিকভাবে রাজনীতিবিদরা দায়ী মন্তব্য করে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, আমরা চাইবো না বিদেশিরা আমাদের কোনও আভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাক। কিন্তু দুঃখজনক হলেও ঐতিহাসিকভাবে এটা সত্য যে, আমাদের রাজনীতিবিদরা এজন্য অনেকখানি দায়ী। আমাদের রাজনীতিবিদদের কারণে-অকারণে বিভিন্ন মিশনে গিয়ে ধরণা দেয়, একশটা চিঠি লিখেন। বিদেশিদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর পথে উদ্বুদ্ধ করার জন্য মিডিয়াকেও দোষারোপ করেন মন্ত্রী। বলেন, সাম্প্রতিককালে আমাদের মিডিয়াও এজন্য বড় দায়ী। আমাদের কিছু বাঙালি বিদেশে আছে। তারাও এজন্য দায়ী। এই কয়েকটি গোষ্ঠীর কারণে আমাদের নির্বাচন কিংবা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলায়। মিডিয়ার বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গার করে তিনি বলেন, প্রত্যেকদিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টে তাদের ওই মুখপাত্রকে ত্যক্ত করে ফেলে এই বাঙালি সাংবাদিকরা, বাংলাদেশের ওপরে, অভ্যন্তরীণ ইস্যুর ওপরে। আপনাদের সাংবাদিকরা, আপনাদের পেশার লোকেরা এইসব করে।

মানব জমিন