আমাদের ‘বাপুজি’

এমাজউদ্দীন আহমদ
প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ – ছবি : নয়া দিগন্ত

বাপু’ পিতৃবাচক শব্দ। বাংলা অভিধানে এর অর্থ ‘স্নেহের পাত্রকে সম্বোধন বিশেষ’। আরো এ ধরনের শব্দ- বাবা, বাপা, বাপি, পাপা ইত্যাদি। ভারতে মহাত্মা গান্ধীকে লোকেরা ডাকত ‘বাপু’ বলে। এর সাথে সংযোজিত ছিল সম্মানসূচক ‘জি’। বাপুজি হয়ে ওঠেন ভারত রাষ্ট্রের জনক বা জাতির পিতা। ইন্দোনেশীয় জনগণ সুকর্নকে ‘বাপক’ বলে। অর্থগত ও শব্দগতভাবেও ‘বাপুজি’র কাছাকাছি। আমাদের প্রিয় শিক্ষক, বাংলাদেশ জাতির এক ঋদ্ধ পুরুষ প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ তার হাজারো শিক্ষার্থীর কাছে ছিলেন একজন পিতৃপুরুষ। যারা তার ছাত্রছাত্রী নন, অথচ কখনো কাছে গেছেন কোনো কারণে তাদের অনেকের কাছ থেকেই তিনি পেয়েছেন পিতার সম্মান। বিগত ৪৩ বছর ধরে আমি তাকে কাছে থেকে দেখা ও কাছে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আমিও তাকে দেখেছি একজন পিতার চোখে। তিনিও আমাকে দেখেছেন তার ‘আরেকটি ছেলে’ বলে। শুধু একজন নয়, এমন মমত্ব ছিল সবার প্রতি। সবার মতো আমাকেও তার প্রিয় সম্বোধন ছিল ‘বাপু’ বলে। ২০১১ সালে তার সম্মানে একটি সংবর্ধনা গ্রন্থ বেরিয়েছিল। সেখানে দেখেছি জীবনের প্রথমেই প্রিয় শিক্ষার্থীদের জন্য এই সম্বোধনই বেছে নিয়েছিলেন তিনি। সে সময়ের তার কলেজের ছাত্ররাও স্মৃতিকথায় তা উল্লেখ করেছে। বয়সে তার ছোট অথবা সহকর্মী বা সহচর সবার প্রতি তার প্রীতিময় সম্বোধন ‘বাপু’। তিনি ধারণ করেন পিতৃত্বের হৃদয়। তাই তিনি আমাদের ‘বাপুজি’।

তিনি পিএইচডি করতে বললেন। বিষয় নির্ধারিত ছিল। এবার গবেষণা প্রস্তাবনা লেখার পালা। লিখলাম একটা কিছু। স্যার বললেন, অমুক দিন ১০টায় বাসায় এসো। সেদিন পৌঁছতে দেরি হয়ে গেল। ততক্ষণে স্যার নীলক্ষেত রাস্তায় এসে পড়েছেন গাড়ি করে। আমাকে রিকশায় দেখে গাড়ি ঘুরালেন। বাসায় ফিরে এলেন। প্রস্তাবনা ঠিকঠাক করে হাতে দিয়ে বললেন, বাপু কাজ শুরু করো। একজন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর এক নগণ্য ছাত্রের জন্য গাড়ি ঘুরালেন তাকি এখন কল্পনা করা যায়? এমাজউদ্দীনের মতো মহান শিক্ষকের পক্ষেই তা সম্ভব। ১৯৯০ এ পিএইচডির কাজ শেষ হলো। আমার সুপারভাইজার বললেন, বিধি মোতাবেক সন্দর্ভের একটি ভারতের ভেতরে অপরটি বাংলাদেশে যাবে। তিনি এমাজউদ্দীনকে নামে চিনতেন। বিষয়-বিশেষজ্ঞও তিনি। সেটি তার কাছে এলো। পিএইচডি হয়ে গেল। স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানে যোগদান করার।

তত দিনে তিনি ভাইস চ্যান্সেলর। আশায় বুক বাঁধলাম। বিজ্ঞাপন হলো। দরখাস্ত করলাম। ওয়াকিল আহমেদ তখন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর। বিষয়টি তার হাতে। আমার সামনেই তিনি তার স্বভাবসুলভ ভাষায় নমনীয়, কমনীয় করে বললেন ‘দেখবেন সম্ভব হলে’। কিন্তু ওয়াকিল আহমেদের পক্ষে দেখা সম্ভব হয়নি। সে আরেক গল্প। আমার স্যার তার সংযম ও হস্তক্ষেপ না করার নীতি অনুযায়ী আর কিছু বলেননি। ভিসি শক্ত হলে আমার নিয়োগ হতো। কিন্তু এমাজউদ্দীন তার সীমারেখার মধ্যেই থাকলেন। অনুগ্রহ করবেন বা আনুকূল্য দেখাবেন; কিন্তু আইন ও বিধি অগ্রাহ্য করে নয়। পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ে আমার নিয়োগ হলো। সেখানেও তার অনুমোদন ও আনুষ্ঠানিকতা ছিল। আমি আমার প্রতি তার সহৃদয়তার কথা বলছি। সমস্যা হলেই স্যারের কাছে আসা। একসময় বিভাগীয় চেয়ারম্যান হয়ে প্রতিপক্ষের বিরূপতার সম্মুখীন হলাম। স্যার হস্তক্ষেপ করলেন। টিকে থাকলাম আরো কিছুটা সময়। তিনি আমাকে এ সময়ে পরামর্শ দিলেন- ‘পোস্টডক’ করার জন্য বিদেশে যাও অথবা দেশের কোথাও কোনো দায়িত্বে যাও। এর মানে সসম্মানে পশ্চাদপসরণ। আমি ভাগ্যবান। দুটোতেই সফল হই। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ে প্রথমত ট্রেজারার ও পরে ভাইস-চ্যান্সেলর হই। তৎকালীন শিক্ষা সচিব ট্রেজারার পদের প্রস্তাব পাঠান আগস্টে। নভেম্বর পর্যন্ত তার কোনো হদিস নেই। আমারও তেমন আগ্রহ নেই। একদিন স্যারের কাছে গেলে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘বাপু, ওটার কী হলো?’ আমি বললাম, প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পড়ে আছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর এক সচিবকে ফোন করলেন। ক’দিন পরই অফিস আদেশ এসে হাজির। সঠিক সময়ে যোগদান করি। এর মধ্যে বিদেশের খবরও এলো। সিনিয়র ফুলব্রাইট স্কলার হিসেবে সিলেকশন পাই। এ ধরনের স্কলারশিপ হস্তক্ষেপ বা সুপারিশমুক্ত থাকে।

অবশ্য রেফারি হিসেবে প্রফেসর এমাজউদ্দীনের ‘রিকমন্ডেশন’ ছিল। আমি ভাইস চ্যান্সেলর হওয়ার পর কোনো একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে পটুয়াখালী বিশ^বিদ্যালয়ে যান তিনি। আমাকে নানাবিধ নির্দেশনা দেন। ওখানে চার বছরেরও বেশি সময় কাটিয়েছি। তখন বুদ্ধি-পরামর্শের জন্য সবসময়ই ফোন করেছি। তিনি মাথা ঠাণ্ডা রাখতে বলতেন। সামরিক সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার মূলত আওয়ামী লীগের অর্জন। প্রশাসনে ছিল তাদেরই সমর্থিত টিম। সুপরিকল্পিতভাবে বিএনপি নিয়োজিত ভাইস চ্যান্সেলরদের সরিয়ে দেয়া হয়। আমি চুনোপুঁটিও বাদ যাইনি। স্যারের নির্দেশ, ‘চলে এসো বাপু’। স্মরণ করা যেতে পারে, তিনিও ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হলে ‘নীতিগত বিবেচনা’য় পদত্যাগ করেন। তার অতীত সংযোগ এবং নীলদের প্রতি তার পক্ষপাতহীন আচরণের কারণে হয়তো তিনি টিকে যেতে পারতেন। কিন্তু সুবিধাবাদের পরিচয় দেননি। আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদায় বলীয়ান ছিলেন তিনি।

১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর ক্ষমতাসীন হয় আওয়ামী লীগ। প্রাথমিকভাবে তাদের পদচারণা ছিল সতর্ক। যতই দিন যায় ততই তারাও দাঁত বের করতে থাকে। দুর্নীতি মামলা হয় এমাজউদ্দীনের বিরুদ্ধে। তাও আবার ২০ হাজার টাকার। সম্ভবত শ্রীলঙ্কার একটি সফরকে কেন্দ্র করে। জাতীয় সংসদে তাকে নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য দেয়া হয়। এর প্রতিবাদে একটি শক্ত বিবৃতি দেন তিনি। স্পিকারকে অনুরোধ করেন তার বিবৃতিটি জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের জন্য। সততা এবং স্বচ্ছতার দৃঢ়তা তাকে এ সাহস দেয়। জাতীয় পর্যায়ে গণতান্ত্রিক অধিকার সীমিত হয়। তাদের আচরণও অসহনশীল হয়ে ওঠে। এ পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত হয় ‘শত নাগরিক’।

নিছক দলীয় স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য নয়, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ছিল এর গঠনের পেছনে। সাদেক খান অভিযোগ করেন, ক্রমবর্ধমান নিগ্রহ এবং বিরোধী দলের অনুগ্রহ পাওয়ার আশায় ‘শত নাগরিক’ পূর্ণ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে পারেনি। কিন্তু প্রফেসর এমাজউদ্দীন ন্যূনতম মূল্যবোধ নিশ্চিত করেন। বিরোধের মাঝে ঐক্য সঞ্চারের চেষ্টা করেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের ব্যাপারে প্রফেসর এমাজউদ্দীন ভারসাম্যপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। তিনি অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ-পরিস্থিতির ওপর জোর দেন। সবারই মনে থাকার কথা, আরো এক সপ্তাহ নমিনেশন সাবমিটের সময় বাড়ালে বিএনপি নির্বাচনে যেতে পারত। সরকার পক্ষের মেকানিজম ছিল, ছলে-বলে-কৌশলে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার। ২০১৮ সালের নির্বাচনে শেষ মুহূর্তেও গণতন্ত্রের প্রতি আস্থাশীল ছিলেন এমাজউদ্দীন। এ নির্বাচনে ঢাকা কলেজে ভোট দিতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের আচরণে বিব্রত হন। তিনি এ সময়ে আমাকে বলেন, ‘একসময় একেক রণকৌশল অবলম্বন করছে তারা’। ইতোমধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শুধু গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার স্বার্থে অংশগ্রহণে বিএনপিকে উদ্বুদ্ধ করেন তিনি। ডাক্তার জাফরুল্লাহর চেম্বারে প্রায় প্রতিটি বৈঠকে এবং মাঠপর্যায়ে সক্রিয় ছিলাম আমি। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পূর্বক্ষণে প্রেস ক্লাবে সরকারের কার্যক্রমের ওপর এক প্রদর্শনীর আয়োজন করি। ‘শত নাগরিক’-এর ব্যানারে অনুষ্ঠিত ওই সভায় তিনি সভাপতিত্ব করেন। করোনাকালের আগে সম্ভবত তার শেষ অনুষ্ঠান ছিল তালুকদার মনিরুজ্জামানের শোকসভায় সভাপতিত্ব করা। সেদিন কি ভেবেছিলাম আল্লাহ তাকে এত সকালে নিয়ে যাবেন।

প্রফেসর এমাজউদ্দীনে মহৎ সব গুণাবলির সমাবেশ ঘটেছিল। ক্ষমাশীলতার ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত রয়েছে তার জীবনে। আমরা ছাত্ররা কখনো যে ভুলচুক করিনি এমন নয়। তিনি মনে রাখেননি। তার পুরনো সহকর্মীদের স্মৃতিচারণও এর সাক্ষ্য দেয়। আমার একজন সহকর্মী ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক পদে দরখাস্ত করেন। তখন স্যার ভাইস চ্যান্সেলর। পদটি মূলত ছিল ইন্টারনাল ক্যান্ডিডেটের জন্য। প্রার্থী ছিলেন তার মেয়ে। এ ধরনের অবস্থায় বাইরে থেকেও দরখাস্ত করা যায়। আমার সহকর্মী তাকে না নেয়ায় স্যারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কাগজপত্র এনে আমাকেও স্বাক্ষর করার জন্য বলেন। আমি বললাম, ‘রাইট অর রং- আই এম দ্য লাস্ট ম্যান টু ফাইল কেস এগেইনস্ট মাই টিচার’। সেই সহকর্মী স্যারের পদত্যাগের পর স্বনামে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে কলাম লেখেন। বছর খানেক পর ‘শত নাগরিক’-এর এক সভার আয়োজন চলছিল। স্যার আমাকে বললেন, ‘বাপু ওকেও বলো’। আমি তো অবাক। আরেকটি উদাহরণ। তারই একজন ডাকসাইটে সহকর্মী তার প্রফেসর পদে প্রমোশনের সময় বাধা দেন। বিপত্তির সৃষ্টি করেন। এমাজউদ্দীন ভাইস চ্যান্সেলর হওয়ার পর বিদেশ থেকে ফিরে ওই সহকর্মী সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য তার অফিসে যান। ওই সহকর্মী আমাকে বলেন, ‘আমি তার মহত্ত্ব ও ক্ষমায় রীতিমতো অভিভূত’। তার সম্পর্কে এ দেশের শীর্ষ বুদ্ধিজীবী ও ব্যক্তিত্ব সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আবুল কাশেম ফজলুল হক, মাহবুব উল্লাহ, আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, মুজাফফর আহমদ, হাসান আজিজুল হক, আবুল হাসান চৌধুরী এবং কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের মতো অনেক ব্যক্তিত্বের ভূয়সী প্রশংসা লক্ষ করেছি। তাতে এই প্রত্যয় জন্মায় যে, তিনি সত্যিই দল-মত, ধর্ম-বর্ণ ও ডান-বাম নির্বিশেষে সবারই আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছিলেন। জাতীয় অধ্যাপক, দার্শনিক দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ, জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক ও প্রফেসর আহমেদ শরীফের মৃত্যুর পর তিনি তাদের স্মরণে কলাম লিখে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আবারো প্রমাণিত হয়- ব্যক্তি নয়, মতাদর্শ নয়, জ্ঞান ও মনীষার প্রতি তার ছিল সতত শ্রদ্ধা। অনেকে এখনো মনে করেন, তিনি ছিলেন বিএনপি তথা বেগম খালেদা জিয়ার প্রধান উপদেষ্টা। আসলে কাঠামোগতভাবে কোথাও তিনি ছিলেন না কিছু। পদ ও পদবির বাইরে তার অবস্থান ছিল শীর্ষ সম্মানের।

করোনাভাইরাসের পর স্বাভাবিকভাবেই স্যারের সাথে সরাসরি দেখাশোনা করার সুযোগ ছিল না। একপর্যায়ে তার মোবাইল বন্ধ ছিল। আমি অস্থির হয়ে পড়েছিলাম। তার বাড়ির সবাইকে ফোন করে বিরক্ত করতাম। তিনি জেনে ফেলেছিলেন হয়তো। তাই মৃত্যুর ১০-১২ দিন আগে ফোন করলেন নিজেই। ‘কেমন আছ বাপু? এত ফোন কেন করছ?’ আমি বললাম, আপনার খোঁজ না পেলে মনটা উতলা হয়ে ওঠে। সেই শেষ কথা। ভাবতেও পারিনি আর হবে না দেখা। যদিও তার মৃত্যু অপরিণত নয়, তবুও মৃত্যু আমার কাছে হিমালয়ের মতো ভারী। আমার মাথার ওপর থেকে ছাদ চলে গেছে। আমি হারিয়েছি এক পিতাকে। আমার এমন কেউ আর রইল না যে আমাকে আপদে-বিপদে ডেকে পরম স্নেহের সান্ত্বনা দেবেন, শোনাবেন অভয় বাণী। মৃত্যুর দিন থেকে এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক হতে পারিনি। পরিবারের সবাই আকুল ব্যাকুল ভেজাভেজা চোখ দেখে। তবুও মেনে নিতে হবে নির্মম সত্য। অবধারিত মৃত্যু।

‘বিশ্বাস ও আস্থার এই সঙ্কটকালে যখন আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র অতল অবক্ষয়ের গহ্বরে, জীবনবোধ যখন ভয়ঙ্করভাবে ক্ষত-বিক্ষত, আস্থার শেষ ভরসা স্থলটুকুও যখন দোদুল্যমান তখন এই সমাজে তার মতো দিকনির্দেশনা দানকারী ব্যক্তিত্বের প্রয়োজন ছিল সবচেয়ে বেশি এবং এই সময়েই তিনি চলে গেলেন।’ এমনই মন্তব্য ছিল স্যারের দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফকে স্মরণ করে। আমাদের দুর্ভাগ্য তখন থেকে এখনো বদলায়নি কিছু। সুতরাং প্রফেসর এমাজউদ্দীন সম্পর্কেও আমাদের সেই একই নিবেদন। কবি আল মাহমুদ স্যারকে নিবেদন করে লিখেছিলেন, ‘আমি গেয়ে উঠি মানুষের সুকীর্তি/আমার কথায় পাতারা কাঁপছে গাছে/হাওয়ার খুশিতে ঝরছে বৃষ্টি কণা/তবু বিরূপতা মাথা তুলে আছে/ যেন বা সাপের ফণা।’ সেই ফণা জাগরূক থাকবে চিরকাল।

লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

Mal55ju@yahoo.com